শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত আমান ফিড বেশ কয়েক বছর ধরেই ঋণ জটিলতায় রয়েছে। এক কোম্পানির টাকা আরেক কোম্পানিতে ব্যবহার করতে গিয়ে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে আমান ফিডের নামে ঋণ নিয়ে আমান সিমেন্টের মতো বড় প্রকল্প করতে গিয়ে ধরা খেয়েছে। যে কোম্পানি মুনাফা করতে না পারায় ঋণ পরিশোধ করার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে।
আমান ফিড দেশব্যাপি ভালো ব্যবসা করে আসছিল। কিন্তু তালিকাভুক্ত এই কোম্পানিটিকে উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা তাদের ব্যক্তিগত কোম্পানির স্বার্থে ব্যবহার করতে গিয়ে বেকাঁয়দায় ফেলে দিয়েছে। যে কোম্পানিটির এখন পরিশোধিত মূলধনের থেকে কয়েকগুণ ঋণ বেশি।
কোম্পানিটির ২০২১-২২ অর্থবছরের আর্থিক হিসাব নিরীক্ষায় নিরীক্ষক জানিয়েছেন, আমান ফিডের ব্যাংকের কাছে ৪৩৪ কোটি ৩১ লাখ টাকার ঋণজনিত দায় রয়েছে। কিন্তু শেষ দুই বছর ধরে কোন সুদ বা আসল পরিশোধ করেনি।
এদিকে শ্রম আইন ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশনা মানছে না আমান ফিড কর্তৃপক্ষ। নিরীক্ষক জানিয়েছেন, ২০০৬ সালের শ্রম আইনের ২৩২ ধারা অনুযায়ি, প্রতি বছর নিট মুনাফার ৫% ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ড (ডব্লিউপিপিএফ) গঠন করা এবং তা কর্মীদের মধ্যে বিতরন করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু আমান ফিড কর্তৃপক্ষ ফান্ড গঠন করলেও বিতরন করে না।
নিরীক্ষক জানিয়েছেন, কোম্পানি কর্তৃপক্ষ লভ্যাংশ প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল পৃথক ব্যাংক হিসাবে জমা করেনি। যা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ২০২১ সালের ১৪ জানুয়ারির এক নির্দেশনার লঙ্ঘন।
এই কোম্পানির পর্ষদ সর্বশেষ ২০২১-২২ অর্থবছরের ব্যবসায় শুধুমাত্র সাধারন শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০% হারে ৪ কোটি ৮১ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ ঘোষনা করে। যা প্রদান করা হয়েছে বলে গত ৫ ফেব্রুয়ারি ডিএসইর ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া আমান ফিডের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ১৩০ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। এরমধ্যে শেয়ারবাজারের বিভিন্ন শ্রেণীর (উদ্যোক্তা/পরিচালক ব্যতিত) বিনিয়োগকারীদদের মালিকানা ৩৬.৫৪ শতাংশ। কোম্পানিটির রবিবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) লেনদেন শেষে শেয়ার দর দাঁড়িয়েছে ৩৩.৫০ টাকায়।