গত ১৩ কার্যদিবস দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করার পর শেয়ারবাজারে নতুন তালিকাভুক্ত হওয়া রবি আজিয়াটার দাম বাড়ার প্রবণারে কমতে শুরু করেছে।
১৩ জানুয়ারি বুধবার লেনদেন শুরু হতেই রবির শেয়ার বিক্রির এক প্রকার হিড়িক পড়ে যায়। বিনিয়োগকারীদের ব্যাপক বিক্রির চাপে কোম্পানিটির শেয়ার দর কমতে থাকে।
নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং আইপিও খরচের জন্য প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) শেয়ার ছেড়ে ৫২৩ কোটি ৭৯ লাখ ৩৩ হাজার ৩৪০ টাকা সংগ্রহ করা রবির শেয়ার গত ২৪ ডিসেম্বর থেকে শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয়।
লেনদেন শুরুর দিন থেকে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত টানা ১৩ কার্যদিবস দাম বাড়ার সর্বোচ্চ প্রবণতাই থাকে রবির শেয়ার। এতে অর্ধমাসেই কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ৫৩২ শতাংশ।
কোম্পানিটির শেয়ারের এভাবে দাম বাড়াকে অস্বাভাবিক বলছে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ। এ জন্য বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে সতর্ক বার্তাও প্রকাশ করেছে ডিএসই।
ডিএসই জানিয়েছে, রবির শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার কারণে ৪ জানুয়ারি কোম্পানিটিকে নোটিশ করা হয়। জবাবে কোম্পানিটি জানিয়েছে- শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার পেছনে কোনও অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই।
ডিএসই থেকে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করা হলেও রবির শেয়ারের দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকে। এ পরিস্থিতিতে গত ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে যেসব কোম্পানির শেয়ারের দাম ৫০ শতাংশ বেড়েছে বা কমেছে, এর পেছনে কোনও কারসাজি রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে নির্দেশ দেয় বিএসইসি।
বিএসইসির এ সংক্রান্ত চিঠিতে গত এক মাসে যেসব কোম্পানির গড় লেনদেনের পরিমাণ আগের ছয় মাসের গড় লেনদেনের চেয়ে পাঁচগুণের বেশি বেড়েছে, যেসব কোম্পানির বার্ষিক বা প্রান্তিক শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস) আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫০ শতাংশের বেশি উত্থান-পতন ঘটেছে, মূল্য সংবেদনশীল তথ্য (পিএসআই) প্রকাশের আগের ১০ কার্যদিবসে যেসব কোম্পানির দাম ও লেনদেন ৩০ শতাংশের কম-বেশি হয়েছে, সেসব কোম্পানির বিষয়েও তদন্ত করতে বলা হয়েছে।
অবশ্য দাম কমায় এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির শেয়ার কিনে নিয়েছেন। এতে দুই ঘণ্টার লেনদেনেই কোম্পানিটির ৩৪৭ কোটি টাকার লেনদেন হয়ে গেছে।
ডিএসইর এক সদ্য বলেন, নতুন তালিকাভুক্ত হওয়ায় রবির শেয়ার দাম টানা বাড়ছে। তবে যে হারে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে তা স্বাভাবিক মনে হয়নি। কোম্পানিটির শেয়ার দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে বলেও ডিএসই থেকে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও কোনও কাজ হচ্ছিল না। তবে মঙ্গলবার শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার কারণ তদন্তের জন্য বিএসইসি নির্দেশ দেয়ায় এখন কিছুটা কমেছে। বিএসইসি এই নির্দেশ না দিলে রবির শেয়ার দাম হয়তো আরও বাড়ত।