শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) তদন্তে বি.ব্রাদার্সে নানা অনিয়ম ও কোম্পানির দূর্বলতা উঠে এসেছে। এরমধ্য দিয়েই কোম্পানিটিকে আবারও শেয়ারবাজারে আনতে চাইছে একটি চক্র। যারা শেয়ারবাজারে শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে সাধারন বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৫০ কোটি টাকা সংগ্রহ করতে চায়। এতে প্রতারণার স্বীকার হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
যে কারনে ২০২০ সালের ৫ আগস্ট বি.ব্রাদার্স গার্মেন্টসের আইপিও বাতিল করে দিয়েছিল কমিশন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ি, কোম্পানিটির বিরুদ্ধে প্লেসমেন্ট শেয়ারের বিপরীতে পাওয়া অর্থ একাধিক ব্যাংক হিসাবে নিয়ে যাওয়া, কমিশনের সম্মতি ছাড়াই শেয়ার মানি ডিপোজিটের বিপরীতে শেয়ার ইস্যু করা, অবচয় কম দেখিয়ে নিট মুনাফা বেশি দেখানোর অভিযোগ ছিল। এসব বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে কমিশন এ কোম্পানির আইপিও আবেদন বাতিল করে।
বিএসইসি তদন্তে পায়, এই কোম্পানি কর্তৃপক্ষ বিএসইসির পাবলিক ইস্যু রুলসের ৩(২)(সি) এবং ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইনের ধারা ৮৮(১) লঙ্ঘন করেছে। তারা বিশেষ সাধারন সভায় বোর্ড মিটিং ফি নিয়ে সংশোধনী আনলে তা আরজেএসসিকে জানায়নি। এছাড়া আইপিওতে আবেদনকালীন সময় আবারও ইজিএম করলেও তা কমিশনের কাছে গোপন করে।
অনিয়মের পাশাপাশি কোম্পানির ভবিষ্যত ব্যবসায়ও অনেক ঝুঁকি দেখছে বিএসইসি। নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির মতে, বি.ব্রাদার্সের আয়ের ৬৭% আসে টেক্সট লাইন ও স্পোর্টস ওয়ার থেকে। এরমধ্যে যদি কেউ ক্রয় আদেশ বাতিল করে, তাহলে ব্যবসা হূমকিতে পড়বে। এছাড়া কোম্পানিটি উচ্চ ব্যাংক ঋণের উপর নির্ভর করায় ভবিষ্যতে সংকট তৈরী হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে। যে কোম্পানিটির শেয়ারবাজারে আসার আগে অস্বাভাবিক হারে মজুদ পণ্য বেড়েছে বলে বিএসইসির তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।
আইপিও ফান্ডের একটি অংশ দিয়ে বি.ব্রাদার্স কর্তৃপক্ষ ভবন নির্মাণ করতে চায়। কিন্তু বিএসইসি চাওয়ার পরেও তারা ভবনের লে আউট দিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
এই কোম্পানি কর্তৃপক্ষ প্রতিনিয়ত অবচয় কম চার্জ করে মুনাফা ও সম্পদ বেশি দেখিয়ে আসছে। তারা প্রায় সব সম্পদের আয়ুস্কাল ১০ বছর দাবি করলেও ২০ বছর বিবেচনায় অবচয় চার্জ করে। কারন তারা ১০% হারে স্ট্রেইট লাইন মেথডের পরিবর্তে রিডিউসিং মেথডে চার্জ করে। এ কারনে ১০% হারে অবচয় চার্জ করলেও ২০ বছর রিটেইন ডাউন ভ্যালু থাকবে।
এ বিষয়ে জানতে বি.ব্রাদার্সের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) শফিকুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তিনি দীর্ঘদিন ধরে মন্তব্য দেবেন বলে সময়ক্ষেপন করেছেন। কিন্তু কোন মন্তব্য দেননি।
বি:দ্র: কোম্পানিটির নানা অনিয়ম নিয়ে পরের পর্বগুলোতে থাকছে ধারাবাহিক সংবাদ।