গত সপ্তাহে বৈশ্বিক পুঁজিবাজারে ঊর্ধ্বমুখি প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়েছে। গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও এশিয়া অঞ্চলের বেশির ভাগ পুঁজিবাজারেই পয়েন্ট যোগ হয়েছে। তবে এ সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের প্রধান পুঁজিবাজারগুলো নিম্নমুখী প্রবণতায় সপ্তাহ শেষ করেছে।
গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ডাও জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ সূচক ১ দশমিক ২৬ শতাংশ বা ৪০২ পয়েন্ট বেড়েছে। একই সময়ে দেশটির এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ১ দশমিক ৩৬ শতাংশ বা ৫১ পয়েন্ট ও নাসডাক সূচক ১ দশমিক ২৮ শতাংশ বা ১৩২ পয়েন্ট বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি এ অঞ্চলের আর্জেন্টিনা, পেরু, ব্রাজিল, মেক্সিকো, কানাডা, চিলি, ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার পুঁজিবাজারে পয়েন্ট যোগ হয়েছে।
ইউরোপের অন্যতম পুঁজিবাজার যুক্তরাজ্যের এফটিএসই ১০০ সূচক গত শুক্রবার ২ শতাংশ বেড়েছে। এ সময়ে জার্মানির ব্লুচিপ সূচক ডিএএক্স ২ দশমিক ৫১ শতাংশ ও ফ্রান্সের সিএসি ৪০ সূচক ২ দশমিক ৭৭ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া পোল্যান্ড, তুরস্ক, গ্রিস, ফিনল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে, হাঙ্গেরি, স্পেন, নেদারল্যান্ডস, ইতালি, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, অস্ট্রিয়া, সুইডেন, সাইপ্রাস ও আয়ারল্যান্ডের পুঁজিবাজার এ সময়ে ঊর্ধ্বমুখী ছিল। অন্যদিকে পয়েন্ট হারিয়েছে ডেনমার্কের পুঁজিবাজার।
গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের পাশাপাশি এশিয়ার অধিকাংশ পুঁজিবাজারেও ঊর্ধ্বমুখিতা পরিলক্ষিত হয়েছে। এশিয়ার অন্যতম প্রধান পুঁজিবাজার জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক এদিন ১ দশমিক ৬৮ শতাংশ বা ৪৬৪ পয়েন্ট হারিয়েছে। ভিয়েতনামের হ্যাং সেং সূচক ৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ, চীনের সাংহাই সূচক ২ দশমিক ৪৩ শতাংশ ও ভারতের বিএসই সেনসেক্স সূচক দশমিক ১৯ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া এ সময়ে হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইনের পুঁজিবাজার ছিল ঊর্ধ্বমুখী। অন্যদিকে এ সময়ে পয়েন্ট হারিয়েছে পাকিস্তান ও শ্রীলংকার পুঁজিবাজার।
গত শুক্রবার মধ্যপ্রাচ্যের প্রধান পুঁজিবাজারগুলো ছিল নিম্নমুখী। এ সময় বাহরাইন, কুয়েত, সৌদি আরব, কাতার, জর্ডান, লেবানন ও মরক্কোর পুঁজিবাজার পয়েন্ট হারিয়েছে। অন্যদিকে পয়েন্ট যোগ হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত ওমানের পুঁজিবাজারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম দপ্তরের পরিসংখ্যান অনুসারে অক্টোবরে এর আগের মাসের তুলনায় কর্মসংস্থানের পরিমাণ প্রত্যাশার তুলনায় বেড়েছে। এতে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের মুদ্রানীতিতে কিছুটা শিথিলতার সম্ভাবনা দেখছেন বিনিয়োগকারীরা। এছাড়া দেশটির মুদ্রাস্ফীতির চাপও কিছুটা কমবে বলে প্রত্যাশা। কর্মসংস্থানের প্রতিবেদন প্রকাশের পর ডলারের দর পড়ে গেছে এবং এর বিপরীতে ইউরোর দাম বেড়েছে। পাশাপাশি নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে খ্যাত স্বর্ণের দাম ৩ শতাংশের মতো বেড়েছে। ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের পক্ষ থেকে সুদের হার বাড়ানোর একদিন পরেই ইউরোপের পুঁজিবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতা দেখা গেছে। অন্যদিকে কঠোর কভিড নীতির অবসান হতে পারে এমন সম্ভাবনার পরিপ্রেক্ষিতে চীনের পুঁজিবাজার ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। অবশ্য রাশিয়ার জ্বালানি তেলের দাম বেঁধে দেয়ার বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের উদ্যোগের ফলে বৈশ্বিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম ৫ শতাংশ বেড়ে গেছে।
দেশের পুঁজিবাজার পরিস্থিতি: গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স আগের সপ্তাহের তুলনায় ৩২ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৫১ শতাংশ বেড়েছে। সূচকটির বর্তমান অবস্থান ৬ হাজার ৪১১ পয়েন্টে। ডিএসইর নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ সপ্তাহের ব্যবধানে ১২ দশমিক ৮২ পয়েন্ট বা দশমিক ৫১ শতাংশ কমে ২ হাজার ২৬৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ১ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট বা দশমিক ১০ শতাংশ কমে ১ হাজার ৪০১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।