ইকোনমিক বিডি প্রতিবেদক : বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার মো. আব্দুল হালিম বলেছেন, শেয়ারবাজারে বিএসইসির এক নম্বর উদ্দেশ্যই হলো প্রোটেকশন অব দ্যা ইনভেস্টরস। তারপরেও আস্থার সংকট কেন? এখানে বিশেষ করে যারা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, তারা অনেক নলেজঅ্যাবল। কিন্তু রিটেইল ইনভেস্টর যারা রয়েছেন, তারা পেশাগত দক্ষতার অভাব বা বিভিন্ন কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এই রিটেইল বিনিয়োগকারীদেরকে বিনিয়োগ বিষয়ে শিক্ষিত করে তাদেরকে সুরক্ষা দিতে হবে।
সোমবার (১০ অক্টোবর) বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ উপলক্ষ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিবিএ সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও। আর সভাপতিত্ব করেন ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান।
আব্দুল হালিম বলেন, আমাদের মার্কেটে অতীতে দুইবার দুইটি বড় ধরণের অঘটন ঘটেছে এবং সেখান থেকে উত্তরণের জন্য অনেক আইন, বিধিবিধান করা হয়েছে। এছাড়া সংস্কারমূলক কার্যক্রম করা হয়েছে। একইসঙ্গে অঘটনে দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হযেছে।
তিনি বলেন, যারা আমরা ক্যাপিটাল মার্কেটে আছি এবং যারা নতুনভাবে আসছেন। বিশেষ করে রিটেইল ইনভেস্টরদের মুদ্রাস্ফীতি এবং বিবাদমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে শেয়ারবাজার বিষয়ে শিক্ষিত ও সচেতন করতে হবে। তাদেরকে শেয়ারবাজারে অংশগ্রহণের জন্য যোগ্য করে তুলতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ইউএসএতে ৫৮ শতাংশ নাগরিক শেয়ারবাজারে অংশগ্রহণ করছে। আর আমাদের দেশে মাত্র ২ শতাংশ বা ১.০৮ মিলিয়ন নাগরিক শেয়ারবাজারে আসছে। ২০৩০ সালে এটি ৮ মিলিয়নে উন্নীত করা সম্ভব হবে।
জিডিপি টু মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশনের বিষয়ে বিএসইসির এই কমিশনার বলেন, ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী আমাদের জিডিপি টু মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন ২৭ শতাংশ এবং আমাদের জিডিপির সাইজ ২০২১ সালের তথ্যানুযায়ী ৪১৬ বিলিয়ন ডলার। আমাদের অর্থনীতির যে গ্রোথ তাতে ২০২৫ সাল নাগাদ আমাদের জিডিপির সাইজ ৬০০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করবে। আমরা যদি সেই সময় জিডিপি এবং মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন ৫০ শতাংশে নিতে চাই, তাহলে এটি কিন্তু ৩০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি হবে। অর্থাৎ টাকার অংকে তা ৩০ লাখ কোটি টাকা হবে। অর্থাৎ আমাদের বর্তমান ক্যাপিটাল মার্কেটের যে সাইজ রয়েছে তার তিনগুণ বা তার থেকেও বড় হবে।
তিনি বলেন, আমরা সব সময় বলি আমাদের মার্কেট হচ্ছে মূলত ইক্যুইটি নির্ভর। এখানে বন্ড রয়েছে, এখানে গভর্নমেন্ট মানির বিষয়টি এসেছে, মিউচ্যুয়াল ফান্ড, সুকুক, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে কমিউডিটি এক্সচেঞ্জ চালু করার চিন্তাভাবনা করছে। এসব প্রোডাক্টের কথা আমরা বলেছি। কিন্তু তার অবদান এখনো তুলনামূলকভাবে কম। আমাদের মার্কেটকে জিডিপির সাইজের সাথে তাল মিলিয়ে ২০২৫ সালে এটাকে ৫০ শতাংশে উন্নীত করা সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, আমাদের জিডিপির সাথে মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন ২৭ শতাংশ। কিন্তু আমাদের পার্শ্ববর্তী ভারত, শিকাগো, মালয়েশিয়া বা হংকংয়ে অনেক বেশি। সুতরাং আমরা এখানে একটি অসামঞ্জস্য অবস্থানে রয়েছি। কিন্তু এই মার্কেট ক্যাপ এবং শেয়ারবাজারে অংশগ্রহণ বৃদ্ধির ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। আমরা মনে করি এখানে কম পরিশ্রমেই ব্যাপক জনগোষ্ঠীকে ৮ শতাংশে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।
ইকোনমিক বিডি/১০ অক্টোবর, ২০২২/এ এইচ