শেয়ারবাজারে তালিকাভূক্ত রাষ্ট্রায়াত্ব প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ষষ্ঠ বারের মতো বিনিয়োগে যাচ্ছে। এর আগে কোম্পানিটির আরও পাঁচবার সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। নতুন করে সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য করসোর্টিয়াম ও সরবরাহকারীর মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়টি অনুমোদন করেছে কোম্পানিটির পর্ষদ। চুক্তি অনুযায়ী কোম্পানিটি ৩২ লাখ ডলার বিনিয়োগ বাড়াবে।
এর আগে দ্য সাউথ ইস্ট এশিয়া-মিডল ইস্ট-ওয়েস্ট ইউরোপ ৪ (এসএমডব্লিউ-৪) কনসোর্টিয়ামের সদস্য হিসেবে ২০০৬ সালে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো সাবমেরিন কেবলের সঙ্গে যুক্ত হয়। এসএমডব্লিউ-৪ সাবমেরিন কেবল কনসোর্টিয়ামের আপগ্রেডেশন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে এ কেবলে বিএসসিসিএলের ব্যান্ডউইডথ সক্ষমতা আরও ৩ হাজার ৮০০ জিবিপিএস বাড়ানো হবে।
এর মধ্যে কক্সবাজার হয়ে তাওস ও মেলাকা রুটে ৩ হাজার ৫০০ জিবিপিএস এবং কক্সবাজার ও চেন্নাই রুটে ৩০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইডথ সক্ষমতা বাড়ানো হবে। সক্ষমতা বাড়ানোর ফলে এসএমডব্লিউ-৪ সাবমেরিন কেবলে বিএসসিসিএলে মোট ব্যান্ডউইডথ সক্ষমতা দাঁড়াবে ৪ হাজার ৬০০ জিবিপিএস। সক্ষমতা
১৮ হাজার ৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এসএমডব্লিউ-৪ সাবমেরিন কেবল কনসোর্টিয়ামে ১৪টি দেশ সংযুক্ত রয়েছে। দেশগুলো হচ্ছে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলংকা, পাকিস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, মিসর, ইতালি, তিউনিশিয়া, আলজেরিয়া ও ফ্রান্স। বাংলাদেশের বিএসসিসিএলসহ এ দেশগুলোর ১৬টি টেলিকম অপারেটর এ কনসোর্টিয়ামে রয়েছে। এসএমডব্লিউ-৪ ছাড়াও বর্তমানে বিএসসিসিএল এসএমডব্লিউ-৫ সাবমেরিন কেবলের সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে।
এই কেবলে কোম্পানিটির ব্যান্ডউইডথ সক্ষমতা ২ হাজার ৩০০ জিবিপিএস। এছাড়া এসএমডব্লিউ-৬ সাবমেরিন কেবলের সঙ্গে ২০২৪ সালের মধ্যে যুক্ত হওয়ার প্রত্যাশা করছে বিএসসিসিএল। এ প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হবে ৮৭০ কোটি টাকা। এ কেবলে কোম্পানিটির ব্যান্ডউইডথ সক্ষমতা দাঁড়াবে ১৩ হাজার ২০০ জিবিপিএস।
সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) নয় মাসেকোম্পানিটির আয় হয়েছে ৩১৭ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে আয় ছিল ২৪৪ কোটি ১১ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১৭৯ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে নিট মুনাফা ছিল ১২৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
এদিকে, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১০ টাকা ৮৮ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৭ টাকা ৫৭ পয়সা। এ বছরের ৩১ মার্চ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৬৭ টাকা ৯২ পয়সায়।
৩০ জুন সমাপ্ত ২০২১ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ৩৭ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে কোম্পানিটি। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছিলো ১১ টাকা ৫৭ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ৫ টাকা ৪৯ পয়সা। এর আগের ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ২০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। ২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য ১৬ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড পেয়েছিলেন বিএসসিসিএলের শেয়ারহোল্ডাররা।
২০১২ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ১ হাজার কোটি টাকা ও পরিশোধিত মূলধন ১৬৪ কোটি ৯০ লাখ ৬০ হাজার টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ১৬ কোটি ৪৯ লাখ ৫ হাজার ৫১০। এর মধ্যে সরকারের কাছে রয়েছে ৭৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ শেয়ার। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৬ দশমিক ৩৭, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে ২ দশমিক ৭২ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে বাকি ৭ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।