আগামী ১ অক্টোবর থেকে সুপারশপে পলিথিন বা পলিপ্রপিলিনের ব্যাগ নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এ খবরে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত পাটের ব্যাগ প্রস্তুতকারী কোম্পানি সোনালী আঁশের শেয়ারের দাম বাড়তে শুরু করেছে। এমনকি কোম্পানিটির শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের বাড়তি আগ্রহ তৈরি হয়েছে। এ কারণে লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে কোম্পানিটির শেয়ার।
শুধু সোনালী আঁশ নয়, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত পাট খাতের সব শেয়ারের দাম বেড়েছে আজ দিনের শুরুতে। সোনালী আঁশসহ শেয়ারবাজারে এ খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা তিন। অপর দুটি হলো জুট স্পিনার্স ও নর্দার্ণ জুট। এর মধ্যে আজ লেনদেনের প্রথম ৩০ মিনিটে জুট স্পিনার্সের দাম সাড়ে ৪ শতাংশ বা সাড়ে ১১ টাকা বেড়েছে। আর নর্দার্ণ জুটের প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে দুই টাকা বা এক শতাংশের বেশি।
গত সোমবার সচিবালয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে পলিথিন শপিং ব্যাগের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক সভায় সুপারশপে পলিথিন নিষিদ্ধের কথা জানান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, পলিথিনের বিকল্প হিসেবে সব সুপারশপে বা শপের সামনে পাট ও কাপড়ের ব্যাগ ক্রেতাদের জন্য রাখা হবে।
সরকারের এই ঘোষণার পর গত সোমবার থেকেই শেয়ারবাজারে সোনালী আঁশের শেয়ারের দাম বাড়তে শুরু করে। গত চার দিনে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৬৮ টাকা বা প্রায় ২৮ শতাংশ বেড়েছে। গত সোমবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) কোম্পানিটির শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ২৪৪ টাকা। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত এটির শেয়ারের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৩১২ টাকায়। গত চার কার্যদিবস একটানা বেড়েছে এটির শেয়ারের দাম।
রোববারও লেনদেন শুরুর প্রথম ৩০ মিনিটের মধ্যে ঢাকার বাজারে লেনদেনের শীর্ষস্থানে ছিল সোনালী আঁশ। এ সময়ে কোম্পানিটির প্রায় ৩ লাখ শেয়ারের হাতবদল হয়, যার বাজারমূল্য ছিল প্রায় সাড়ে ৯ কোটি টাকা।
বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সোনালী আঁশ একে তো স্বল্প মূলধনী কোম্পানি, অন্যদিকে সরকার পলিথিন নিষিদ্ধ করে পাটের ব্যাগের ব্যবহার বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। তাতে স্বল্প মূলধনী এই কোম্পানির শেয়ারের দাম হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে।
সোনালী আঁশের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, কোম্পানিটি পাটের তৈরি ব্যাগ থেকে শুরু করে জুতাসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য তৈরি করে। এসব পণ্য রপ্তানিও করা হয়। ১৯৮৫ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত এই কোম্পানিটি সর্বশেষ গত বছরের জুনে সমাপ্ত আর্থিক বছরে বিনিয়োগকারীদের ১১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে, যার মধ্যে ১০০ শতাংশই ছিল বোনাস লভ্যাংশ। চলতি বছরের জুনে কোম্পানিটির আরেকটি আর্থিক বছর শেষ হলেও এখনো পর্যন্ত তারা ওই বছরের জন্য বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি। সামনে কোম্পানিটি লভ্যাংশ ঘোষণা করবে। এর ফলেও কোম্পানিটির শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ রয়েছে।