গত সপ্তাহ নিয়ে টানা ৫ম সপ্তাহ পতন গড়াল দেশের শেয়ারবাজারে। এই ৫ সপ্তাহের ব্যবধানে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ৪০৫ পয়েন্ট।
ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ ফেব্রুয়ারি রোববার ডিএসইর উদ্বোধনী সূচক ছিল ৬ হাজার ৩৭৩ পয়েন্ট। ওই সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস ১৫ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) সূচক কমে দাঁড়ায় ৬ হাজার ৩৩৬ পয়েন্টে। সপ্তাহের ব্যবধানে সূচক কমেছে ৩৭ পয়েন্ট।
এরপর ১৮ ফেব্রুয়ারি রোববার উদ্বোধনী সূচক ৬ হাজার ৩৩৬ পয়েন্ট নিয়ে সপ্তাহের লেনদেন শুরু হয়। যা সপ্তাহশেষে ২০ ফেব্রুয়ারি ডিএসইর সূচক ৬৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়ায় ৬ হাজার ২৭৩ পয়েন্টে।
পরের সপ্তাহে ২২ ফেব্রুয়ারি ডিএসইর উদ্বোধনী সূচক ছিল ৬ হাজার ২৭৩ পয়েন্ট। যা সপ্তাহান্তে ২৯ ফেব্রুয়ারি ১৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়ায় ৬ হাজার ২৫৪ পয়েন্ট।
০৩ মার্চ ডিএসই ৬ হাজার ২৫৪ পয়েন্ট লেনদেন শুরু করে। যা সপ্তাহশেষে ৬ হাজার ১১২ পয়েন্টে শেষ হয়। এই সপ্তাহের সূচক কমে যায় ১৪২ পয়েন্ট।
সর্বশেষ গেল সপ্তাহে ১০ মার্চ রোববার ডিএসইর উদ্বোধনী সূচক দেখা যায় ৬ হাজার ২৫৬ পয়েন্ট। যা শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার দাঁড়ায় ৫ হাজার ৯৬৮ পয়েন্ট। সপ্তাহের ব্যবধানে সূচক কমে যায় আরও ১৪৪ পয়েন্ট।
এতে দেখা যায়, গত ৫ সপ্তাহের ধারাবাহিক পতনে দেশের শেয়ারবাজারের সূচক উধাও হয়ে যায় ৪০৫ পয়েন্ট। যার মাধ্যমে ২০২২ সালের ২৮ জুলাইয়ের পর ডিএসইর সূচক প্রথম বারের মতো ৬ হাজারের নিচে নেমে যায়।
ব্রোকারেজ হাউগুলো থেকে জানা গেছে, সূচকের ধারাবাহিক বিনিয়োগকারীদের পোর্টফোলিতে থাকা শেয়ারের দাম ২০ শতাংশ থেকে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে। যার কারণে বাধ্য হয়ে গেল সপ্তাহে ব্রোকারেজ হাউজগুলো যেসব বিনিয়োগকারীর মার্জিন ঋণ অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে, সেগুলো ফোর্স সেলের আওতায় এনেছে।
তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি থেকে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ফোর্স সেলের আওতায় না আনার জন্য মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে বার বার অনুরোধ করেছিল। কিন্তু কিছু কিছু মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজ বিএসইসির অনুরোধ রক্ষা করলেও বেশিরভাগই রক্ষা করেনি।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারে এভাবে ধারাবাহিক পতনের কোনো কারণ নেই। ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পর কয়েকদিন চাপ সামলিয়ে বাজার ঘুরেও দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু জেড ক্যাটাগরির শেয়ার নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কিছুটা বাড়াবাড়িতে বাজার আবারও নেতিবাচক প্রবণতায় টার্ন নেয়। এরপর যুক্ত আরও কোম্পানির শেয়ার জেড ক্যাটাগরিতে যাবে, ফ্লোরে থাকা বাকি ৬টি শেয়ারের ফ্লোর উঠে যাচ্ছে, বিএসইসি-ডিএসইর পারস্পরিক দ্বন্দ্ব, বড় বিনিয়োগকারীদের রেষারেষি। যা পতনকে আরও দীর্ঘায়িত করছে।
তবে বাজার আশাবাদী যে, বাজার এই সপ্তাহেই ঘুরে দাঁড়াবে। কারণ এখন আর সেল প্রেসার দেখা যাবে না। সেল প্রেসার যা হওয়ার হয়ে গেছে। সূচক ৬ হাজারের নিচে নেমে গেছে। সূচক নামারও আর জায়গা নেই। বিএসইসি-ডিএসইর দ্বন্দ্বও ঘুচে গেছে। আর বড় বিনিয়োগকারীরাও বুঝতে পারছেন, বাজার নামলে তাদেরই বেশি ক্ষতি। সব মিলিয়ে বাজার এখন যেকোন দিন বড় আকারে ঘুরতে শুরু করবে।