প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) গত রোববার (০৪ ফেব্রুয়ারি) জানিয়েছে, পেপার ও প্রিন্টিং খাতের কোম্পানি খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং ইন্ডাষ্ট্রিজের (কেপিপিএল) কারখানা বন্ধ। ডিএসইর একটি প্রতিনিধি দল কারখানাটি পরিদর্শন করতে গেলে দেখতে পায় কোম্পানিটির কারখানা বন্ধ অবস্থায় তালাবদ্ধ রয়েছে।
এমন নেতিবাচক খবর ডিএসইর ওযেবসাইটে প্রচার হওয়ার পর কোম্পানিটির শেয়ার দামে বড় অস্থিরতা দেখা দেয়। এব পর্যায়ে কোম্পানিটির শেয়ার সার্কিট ব্রেকারের সর্বনিম্ন দামে লেনদেন হয়ে ক্রেতাশুন্য হয়ে। তবে ক্রেতাশুন্য অবস্থা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। এরপরই ক্রেতাদের চাপে শেয়ারটির দাম ফের ঊর্ধ্বমুখ হয়। শেষবেলায় কোম্পানিটির শেয়ারের লেনদেন ইতিবাচক প্রবণতার মধ্যেই শেষ হয়।
সোমবারও (০৫ ফেব্রুয়ারি) খুলনা প্রিন্টিংয়ের শেয়ারের লেনদেন বেশ অস্থিরতার মধ্যে শুরু হয়। লেনদেনের প্রথম দিকে শেয়ারটির দাম আগের দিনের চেয়ে বেশ কমে যায়। এক পর্যায়ে সার্কিট ব্রেকারের সর্বনিম্ন দামের দিকে ধাবিত হতেও দেখা যায়। তবে সেখান থেকে ফের ঊর্ধ্বমুখী হয় শেয়ারটি এবং শেষ বেলায় সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দামে লেনদেন হয়ে হল্টেড হয়ে যায়। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উৎপাদন বন্ধের খবরে কোম্পানিটির শেয়ার দাম আরও বেশি লাগমহীন হয়ে গেল।
দিনভর কোম্পানিটির শেয়ার বড় রকমের উত্থান-পতনের মধ্যে লেনদেন হয়। কোম্পানিটির বিশাল শেয়ার লেনদেন হয়। ৮৪ লাখ ৬১ হাজার শেয়ারের লেনদেন নিয়ে আজও ডিএসই-তে এটি লেনদেনের শীর্ষ তালিকায় চতুর্থ স্থানে অবস্থান নেয়।
সম্প্রতি খুলনা প্রিন্টিংয়ের শেয়ার দাম লাগামহীনভাবে বাড়তে থাকায় ডিএসই কোম্পানিটির কাছে এর কারণ জানতে চায়। একাধিকবার কারণ জানতে চেয়েও কোনো প্রতিউত্তর না পেয়ে ডিএসই কর্তৃপক্ষ কোম্পানিটি সরেজমিনে পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নেয়।
এরই ধারাবাহিকতায় ডিএসইর প্রতিনিধি দলটি খুলনা প্রিন্টিংয়ের কারখানা পরিদর্শনে যায়। সেখানে গিয়ে দেখতে পায় কোম্পানিটির উৎপাদন বন্ধ এবং কারখানাটি তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে।
উল্লেখ্য, চার মাস আগেও কোম্পানিটির শেয়ার দাম ৯ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। সেখান থেকে ধারাবাহিকভাবে বেড়ে আজ প্রায় ৫৭ টাকায় ওঠেছে।
এর আগে গত বছরের নভম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে শেয়ারটির দাম যখন বেড়ে ৩০ টাকার ঘরে লেনদেন হচ্ছিল, তখন ডিএসই প্রথমবারের মতো কোম্পানিটির কাছে শেয়ারটির দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চেয়ে চিঠি পাঠায়। কিন্তু কোম্পানিটি সেই চিঠির কোনো জবাব দেয়নি।
এরপর গত ৩১ জানুয়ারি শেয়ারটির দাম যখন আরও বৃদ্ধি পায়, তখন ডিএসই আবারও এর কারণ জানতে চেয়ে চিঠি পাঠায়। সেই চিঠির কোনো জবাব দেয়নি কোম্পানিটি।
যে কারণে বাধ্য হয়ে ডিএসই খুলনা প্রিন্টিংয়ের উৎপাদন ইউনিট পরিদর্শন ও তদন্ত করতে যায় ডিএসইর প্রতিনিধি দলটি।
জানা গেছে, অব্যাহত লোকসানের কারণে ২০১৯-২০ অর্থবছরের পরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য কোনো ডিভিডেন্ড দিতে পারেনি খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেড। এখন পর্যন্ত খুলনা প্রিন্টিংয়ে পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৬ কোটি টাকা।