ফ্লোর প্রাইস আরোপের পরদিন বৃহস্পতিবার পতন হলেও রবিবার উত্থানে ফিরেছে শেয়ারবাজার। উত্থান প্রসঙ্গে রেগুলেটর প্রধান গত মঙ্গলবারে বলেছিলেন, মার্চের শুরু থেকেই ঘুরে দাঁড়াবে শেয়ারবাজার। আসবে সুখবর। সেই বলার প্রতিফলন প্রথম দুইদিন (বুধবার ও বুহস্পতিবার) না থাকলে রবিবার ঠিকই দেখা মিললো শেয়ারবাজারে।
এদিন ঢাকা ও চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই ও সিএসই) সব ধরনের সূচক উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। উভয় স্টকে বেড়েছে লেনদেন পরিমাণ। লেনদেন ডিএসইতে বেড়ে সাড়ে ৬শ কোটি টাকার ঘরে চলে এসেছে। আর লেনদেন সিএসইতে বেড়ে ১৬ কোটি টাকার ঘরে এসেছে। ডিএসইতে ১৫২টি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। ১৪টির কমেছে। কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর পতনের চেয়ে উত্থান ১১গুন বেশি। সিএসইতে ১০৮টি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। ২৭টির বেড়েছে। কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর পতনের চেয়ে উত্থান ৪গুন বেশি।
গত বুধবার ফ্লোর প্রাইস আরোপের পরদিন বৃহস্পতিবার দুই শেয়ারবাজারে পতন হয়। সেই পতনের কারন হিসেবে সবাই ফ্লোর প্রাইসকে দায়ী করেন শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু সেই বদনাম কাটিয়ে উত্থানে ফিললো শেয়ারবাজার। অবশ্য এর আগে গত মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, মার্চ মাস থেকে শেয়ারবাজারে সুখবর আসবে।
এর কারন হিসেবে ওইদিন শিবলী রুবাইয়াত বলেন, মার্চ মাস থেকে ব্যাংক প্রতিষ্ঠানগুলো ডিভিডেন্ট দিবে। আশা করছি, ভালো ডিভিডেন্ড দিবে ব্যাংক। জুন মাসের মধ্যে ব্যাংকগুলোর ডিভিডেন্ড শেয়ারবাজারে চলে আসবে। তখন ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের হাজার হাজার কোটি টাকার সক্ষমতা বেড়ে যাবে। ঠিক কত হাজার কোটি টাকা বাড়বে। সংখ্যাটা এ মুহুর্ত্বে বলতে পারছি না। তবে এটা অনেক বড় পরিমাণের হবে। এটা আসলে, ব্যাংকের গতি আরো বাড়বে।
স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্র মতে, রবিবার ডিএসইতে ৬৬২ কোটি ৩৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবস বৃহস্পতিবার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৪২৭ কোটি ৭২ লাখ টাকার শেয়ার। এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩৬ দশমিক ৪৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৫০ দশমিক ২০ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই-৩০ সূচক ৯ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস সূচক ৫ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২ হাজার ২২৫ দশমিক ৮৪ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ৩৬২ দশমিক ৯২ পয়েন্টে।
এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৪০টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ১৫২টি এবং কমেছে ১৪টির। শেয়ার পরিবর্তন হয়নি ১৭৪টির। এদিন ডিএসইতে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। এদিন বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন ৪৮ কোটি ১২ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা এদিন অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে জেনেক্স ইনফোসিস, এডিএন টেলিকম, সী পার্ল বিচ, ইস্টার্ন হাউজিং, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, লার্ফাজ-হোলসিম, বসুন্ধরা পেপার, ওরিয়ন ফার্মা এবং শাইনপুকুরের শেয়ার।
অপরদিকে, সিএসইতে রবিবার লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা শেয়ার। আগের কার্যদিবস বৃহস্পতিবার ৮ কোটি ১৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৪৯টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ১০৮টি, কমেছে ২৭টি এবং পরিবর্তন হয়নি ১৪টির।
এদিন সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১২০ দশমিক ১৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৪০২ দশমিক ৯৫ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসই-৫০ সূচক ১ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ৩৪ দশমিক ১৮ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স সূচক ৭০ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট এবং সিএসআই সূচক ৬ দশমিক ৪৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৩২৫ দশমিক ৭৯ পয়েন্টে, ১৩ হাজার ৩৩৬ দশমিক ৫১ পয়েন্টে, ১১ হাজার ৩২ দশমিক ৪০ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ১৬১ দশমিক ১৮ পয়েন্টে।
এদিন সিএসইতে সী পার্ল বিচের শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। এদিন সী পার্ল বিচ ৮ কোটি ৪৭ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা এদিন অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে শাইনপুকুর, আমান কর্টন, ওবঙ্গল ইউন্ডসর, বসুন্ধরা পেপার, আইডিএলসি, লার্ফাজ-হোলসিম, ওরিয়ন ইনফিউশন, এডিএন টেলিকম এবং জেনেক্স ইনফোসিসের শেয়ার।