শেয়ারের লেনদেন বাড়লে শেয়ারের দাম বাড়ে। হরহামেশা এমন কথাই শোনা যায় শেয়ারবাজারে। তবে একথা সব ক্ষেত্রে সত্য হয় না। অনেক সময় লেনদেন বাড়লেও শেয়ারের দাম কমে যায়। যদি সেই শেয়ারের দাম আগে থেকে বেড়ে থাকে।
কিন্তু শেয়ারবাজারে মন্দাভাব ঝেঁকে বসায় এখন আর কোনো নিয়মনীতি দেখা যায় না। এখন মন্দার ধাক্কায় পতনে থাকা শেয়ারের লেনদেন বাড়লেও শেয়ারের দাম কমছে। এখন বড় লেনদেন হওয়ার পরও শেয়ারের দাম উঠে না। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন শেয়ারের দাম কিছুটা বাড়লেও সবাই সেল করতে চায়। ফলে দাম বাড়ার গতি বেশি দূর এগুতে পারে না। মাঝপথেই থেমে নিচে নামথে থাকে।
এমনটাই হয়েছে সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) শীর্ষ লেনদেনে থাকা দুই কোম্পানির ক্ষেত্রেও। কোম্পানি দুটি হলো-জেনেক্স ইনফোসিস ও বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন-বিএসসি। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন তালিকার শীর্ষে ছিল তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শীর্ষ কোম্পানি জেনেক্স ইনফোসিস। আর দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল রাষ্ট্রায়াত্ব প্রতিষ্ঠান বিএসসি। কোম্পানি দুটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ডিএসইর মোট লেনদেনের প্রায় ২১ শতাংশ। বড় লেনদেন হওয়ার পরও কোম্পানি দুটির শেয়ার বরাবরের মতো ধারাবাহিক পতনেই ছিল।
জেনেক্স ইনফোসিস: গত ০২ ফেব্রয়ারি জেনেক্স ইনফোসিসের শেয়ার দর ছিল ১১০ টাকা। তারপর থেকেই কোম্পানিটির শেয়ার ধারাবাহিক পতনে রয়েছে। গত কয়েকদিনের তুলনায় সোমবার কোম্পানিটির শেয়ার দরে বেশি পতন হয়েছে। এদিন শেয়ারটির লেনদেন শুরু হয় ৯৭ টাকা ২০ পয়সায়। সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৯১ টাকা ৮০ পয়সায়। একদিনে দর কমেছে ৩.৯০ শতাংশ। এদিন ডিএসইতে শীর্ষ পতনের তালিকায় এটি ছিল তৃতীয় কোম্পানি।
সর্বশেষ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ৬১ পয়সা, আগের অর্থবছরে যা ছিল ২ টাকা ৪৯ পয়সা। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর শেষে কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৮ টাকা ৫১ পয়সায়। যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১৬ টাকা ৫৩ পয়সা।
সর্বশেষ ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২১-২২ অর্থবছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য কোম্পানিটি ১৩ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। এরমধ্যে ছিল ২ শতাংশ স্টক ও ১১ শতাংশ ক্যাশ। আলোচ্য অর্থবছরে কোম্পানিটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ৩ টাকা ৩৬ পয়সা, আগের অর্থবছরে যা ছিল ২ টাকা ৯৩ পয়সা।
বিএসসি: গত ০৭ ফেব্রয়ারি জেনেক্স ইনফোসিসের শেয়ার দর ছিল ১৪৫ টাকা ৯০ পয়সা। তারপর থেকেই কোম্পানিটির শেয়ার ধারাবাহিক পতনে রয়েছে। সোমবার শেয়ারটির লেনদেন উঠে ১৩৭ টাকায়। তারপর শুরু হয় পতন। সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ১৩৩ টাকা ৮০ পয়সায়। দর কমেছে ৩ টাকা ২০ পয়সা
সর্বশেষ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে(জুলাই-সেপ্টেম্ব) কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩ টাকা ৯৮ পয়সা, আগের অর্থবছরে যা ছিল ৪ টাকা ৩৪ পয়সা। দ্বিতীয় প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর) আর্থিক বিবরণী প্রকাশ করা হবে আগামী বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি)। বাজারে গুঞ্জন রয়েছে, দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানির মুনাফা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ইতিবাচক থাকবে।
সর্বশেষ ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২১-২২ অর্থবছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে। যা আগে বছর ছিল ১২ শতাংশ ক্যাশ।