পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের চলতি ২০২২-২৩ হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) আগের হিসাব বছরের একই সময়ের তুলনায় আয় ও মুনাফা দুটোই বেড়েছে। এর মধ্যে কর-পরবর্তী নিট মুনাফা বেড়েছে ৩৮ শতাংশের বেশি। কোম্পানির দ্বিতীয় প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে পদ্মা অয়েলের আয় হয়েছে ১৩৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ১২২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। সে হিসেবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ১৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা বা ১৪ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১৫৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে এ মুনাফা ছিল ১১৪ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ৪৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বা ৩৮ দশমিক ১৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১৬ টাকা ১৩ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ১১ টাকা ৬৭ পয়সা। সদ্যসমাপ্ত বছরের ৩১ ডিসেম্বর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ১৯৬ টাকা ৫১ পয়সায়।
এদিকে চলতি হিসাব বছরে দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির আয় হয়েছে ৬৯ কোটি ৯ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৬২ কোটি ২৬ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৮৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৫৮ কোটি ১৯ লাখ টাকা। আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৮ টাকা ৯২ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৫ টাকা ৯২ পয়সা।
সর্বশেষ ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২১-২২ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশের সুপারিশ করেছে কোম্পানিটির পর্ষদ। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ২৪ টাকা ৪৭ পয়সা, যা আগের হিসাব বছরে ছিল ২৩ টাকা ২৭ পয়সা। গত বছরের ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়ায় ১৮০ টাকা ৩৮ পয়সায়, আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ১৬৮ টাকা ৪১ পয়সা।
৩০ জুন সমাপ্ত ২০২০-২১ হিসাব বছরের জন্যও শেয়ারহোল্ডারদের ১২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে পদ্মা অয়েল। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ২৩ টাকা ২৭ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল ২৭ টাকা ৭৯ পয়সা।
এর আগে ৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৯-২০ হিসাব বছরের জন্যও শেয়ারহোল্ডারদের ১২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল পদ্মা অয়েল। ২০১৮-১৯ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ১৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানিটি। তার আগের হিসাব বছরেও একই হারে নগদ লভ্যাংশ পেয়েছিলেন কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা।
১৯৭৬ সালে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ৯৮ কোটি ২৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ১ হাজার ৬৮১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। মোট শেয়ার সংখ্যা ৯ কোটি ৮২ লাখ ৩২ হাজার ৭৫০ এর মধ্যে সরকারের কাছে ৫০ দশমিক ৩৫ শতাংশ, উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে ২ দশমিক শূন্য ৬, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩১ দশমিক ৯২, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে দশমিক ৮৩ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে বাকি ১৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
ডিএসইতে গত বৃহস্পতিবার পদ্মা অয়েলের শেয়ারের সর্বশেষ ও সমাপনী দর ছিল ২০৯ টাকা ২০ পয়সা। গত এক বছরে শেয়ারটির দর ১৯৯ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ২২৪ টাকার মধ্যে ওঠানামা করেছে।
সর্বশেষ নিরীক্ষিত ইপিএস ও বাজারদরের ভিত্তিতে শেয়ারটির মূল্য আয় অনুপাত বা পিই রেশিও ৮ দশমিক ৫৫, হালনাগাদ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যা ৭ দশমিক ২৬।