সম্প্রতি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া দূর্বল মুনাফার রবি আজিয়াটার শেয়ার লেনদেনের প্রথম দিন থেকেই টানা হল্টেড বা সর্বোচ্চ সীমায় দর বৃদ্ধি হচ্ছে। তবে ব্যবসা দূর্বল হওয়ার কারনে কোম্পানিটি থেকে বর্তমান বিনিয়োগই ফেরত পেতে অপেক্ষা করতে হবে ১৭২ বছর। যদি শেয়ারটির দর আরও বাড়ে, তাহলে এরচেয়ে বেশি অপেক্ষা করতে হবে। যে কোম্পানিটির শেয়ার অনেক আগেই ঝুকিঁপূর্ণ বিবেচনায় মার্জিন ঋণ বন্ধ করে দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গ্রামীণফোনের আগে প্রতিষ্ঠিত হয়েও দূর্বল ব্যবসার কারনে রবি আজিয়াটা শুধুমাত্র অভিহিত মূল্য ১০ টাকায় শেয়ার ইস্যু করতে বাধ্য হয়েছে। কোম্পানি কর্তৃপক্ষ নিজেরাই ১০ টাকা পাওয়ার যোগ্য মনে করলেও বিনিয়োগকারীরা সেটাকে ৫০ টাকার উপরে নিয়ে গেছে। যাতে করে শেয়ারটি এখন অতিমাত্রায় ঝুঁকিতে পৌছে গেছে। অথচ ১১ বছর আগে গ্রামীণফোন ৬০ টাকা প্রিমিয়ামসহ প্রতিটি শেয়ার ৭০ টাকা করে ইস্যু করার সক্ষমতা অর্জন করেছিল।
এরপরেও অনেকে গ্রামীনফোনের মত শক্ত ভিত্তির কোম্পানির সঙ্গে তুলনা করে রবি আজিয়াটার মতো দূর্বল কোম্পানির। গ্রামীণফোনের যেখানে ৯ মাসে ইপিএস ১৯.৮৯ টাকা, সেখানে রবির মাত্র ২৫ পয়সা। এছাড়া গ্রামীণফোন নিয়মিত ১০০ শতাংশের উপরে নগদ লভ্যাংশ দিলেও রবির ১০ শতাংশ দেওয়ার সক্ষমতা নেই।
অনেক বিনিয়োগকারী মনে করছেন তালিকাভুক্তির কারনে কর সুবিধা পেয়ে রবির মুনাফায় বড় উল্লম্ফন হবে। কিন্তু কোম্পানিটির পুরো কর মওকুফ করা হলেও ২০১৯ সালে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয় ৮০ পয়সা। কিন্তু তালিকাভুক্তির কারনে ৫ শতাংশ কর সুবিধা পাবে। যাতে করে ৪০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। সেটা খুব একটা সুবিধা বয়ে আনবে না।
দেখা গেছে, কোম্পানিটির ২০১৯ সালে করপূর্ব মুনাফা হয়েছিল ৩৭৮ কোটি ৯০ লাখ ৭ হাজার টাকা। যা শেয়ারপ্রতি হিসেবে হয় ৮০ পয়সা। আর স্বাভাবিক কর হার ৪৫ শতাংশ (টার্নওভার ট্যাক্স ছাড়াই) বিবেচনায় মুনাফা হয় ২০৮ কোটি ৩৯ লাখ ৫৩ হাজার টাকা বা ইপিএস ৪৪ পয়সা। আর তালিকাভুক্ত গ্রামীণফোনের ন্যায় ৪০ শতাংশ কর হার বিবেচনায় মুনাফা হয় ২২৭ কোটি ৩৪ লাখ ৪ হাজার টাকা বা ইপিএস ৪৮ পয়সা।
বিনিয়োগকারীদের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মূল্য-আয় অনুপাত (পিই রেশিও) বিশ্লেষণ একটি অন্যতম হাতিয়ার। যার মাধ্যমে সহজেই বোঝা যায় বিনিয়োগ ফেরত পেতে কত সময় লাগবে। এই পদ্ধতিতে রবি আজিয়াটা থেকে বিনিয়োগ ফেরত পেতে লাগবে ১৭২ বছর।
দেখা গেছে, ১১ জানুয়ারি লেনদেন শেষে রবি আজিয়াটার শেয়ার দর দাড়িঁয়েছে ৫৭.৫০ টাকা। আর কোম্পানিটির চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ০.২৫ টাকা। এ হিসাবে বছরে ইপিএস হবে ০.৩৩ টাকা। যাতে করে ৫৭.৫০ টাকার বিনিয়োগ ফেরতে লাগবে ১৭২.৫০ বছর।