বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেট (বিআইসিএম) সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান।
বিআইসিএম পরিচালিত পুঁজিবাজার ও ব্যবহারিক অর্থায়নের ওপর দেশের প্রথম এবং একমাত্র স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম মাস্টার্স অফ অ্যাপ্লাইড ফাইন্যান্স অ্যান্ড ক্যাপিটাল মার্কেট (এমএএফসিএম) কোর্সের ফি অর্ধেক ছাড় দিচ্ছে।
ইন্সটিটিউটের তোপখানা রোডস্থ ক্যাম্পাসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মঙ্গলবার এ কথা জানান বিআইবিএমের নির্বাহী প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. মাহমুদা আক্তার।
মোট একান্ন ক্রেডিটের এই মাস্টার্স প্রোগ্রামের প্রতি ক্রেডিট ফি ৪ হাজার টাকা, যার ওপর ৫০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
মূলত বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবেই এই ঘোষণা দেয় বিআইসিএম।
চলমান অর্থনৈতিক অবস্থায় সাধারণ মানুষের
জন্য যাতে এই মাস্টার্স করাটা সহজতর হয়, সেই চিন্তাধারা থেকেই এই কি ছাড়ের উদ্যোগ নিয়েছে বিআইসিএম। এতে করে প্রায় আড়াই লাখ টাকার প্রোগ্রাম ফি এক লাখ চল্লিশ হাজার টাকায় নেমে আসবে। তবে শিক্ষার্থীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা ফি আলাদাভাবে প্রদান করতে হবে।
মাহমুদা আক্তার বলেন, ‘বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশের কাতারে আসীন করতে হলে প্রয়োজন দ্রুত শিল্পায়ন ও বৃহদাকারের অবকাঠামো, ও টেকসই উন্নয়ন। আর এর জন্য দরকার দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের সহজ ব্যবস্থা। একটি গতিশীল ও ক্রমপ্রসারমান পুঁজিবাজার ছাড়া এই
অর্থায়নের যোগান দেয়ার আর কোনো সহজতর উপায় নেই। আর এই পুঁজিবাজারকে শক্তিশালী করতে প্রয়োজন প্রশিক্ষিত ও দক্ষ মানব সম্পদ। বিআইসিএম তার শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের মাধ্যমে, দেশের পুঁজিবাজারের বিকাশের উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে, এই দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবল তৈরিতে সরাসরি ভূমিকা রেখে চলেছে।’
তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ পরবর্তী পরিস্থিতিতে যখন পুরো বিশ্ব ঘুরে দাঁড়াবার জন্য তৈরি হচ্ছিল ঠিক তখনই বিশ্ব রাজনীতিতে অস্থিরতার কালো মেঘ, ইউক্রেন – রাশিয়া যুদ্ধ এবং এর ফলশ্রুতিতে
আরও অনেক অস্থিরতায় বিশ্ব এখন এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। বাংলাদেশেও পড়েছে এই অস্থিরতার ছাপ। দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি শ্লথ হয়ে গেলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি), এবং ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নে পড়বে এর বিরুপ প্রভাব। সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডের সহযোগী হিসেবে একটি শক্তিশালী পুঁজিবাজার গড়ার প্রত্যয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান ও বিআইসিএমের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-
ইসলাম অধুনা অনুষ্ঠিত বিআইসিএমের পরিচালনা পর্ষদ সভায়, ইন্সটিটিউটের একাডেমিক কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী এই ফি ছাড়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
বিআইসিএমের নির্বাহী প্রেসিডেন্ট জানান, ইন্সটিটিউটের একাডেমিক কমিটিতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের প্রতিনিধি এই কোর্স ফি ছাড় প্রদানের জন্য প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
কোর্স ফি ছাড়ে এই প্রোগ্রামে ভর্তিচ্ছুদের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হবে এবং তারা পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে তাদের ক্যারিয়ার গড়ার জন্য এই প্রোগ্রামে অধিক আগ্রহী হয়ে ভর্তি হবে বলে আশা করছে ইন্সটিটিউট কর্তৃপক্ষ।
মাহমুদা আক্তার বলেন, কোর্স ফি অর্ধেক হওয়ার ফলে মেধাবীরা এই প্রোগ্রামে অধিকতর আকৃষ্ট হবে বলেও আশা করে ইন্সটিটিউট।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক আক্তার আরও জানান, পুঁজিবাজার সম্পর্কিত গবেষণার কাজ জোরদার করতে ইন্সটিটিউটের রিসার্চ এন্ডাওমেন্ট তহবিল হতে বার্ষিক গবেষণা মঞ্জুরী (এনুয়াল রিসার্চ গ্র্যান্ট) প্রদানের কাজ খুব শীঘ্রই শুরু হতে যাচ্ছে। দুইটি
ক্যাটাগরিতে (স্ট্যান্ডার্ড এবং আর্জেন্ট) এই গবেষণা মঞ্জুরী পাবে বাছাইকৃত ব্যক্তি পর্যায়ের গবেষক, গবেষণা টিম, এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান।
চলতি সপ্তাহের মধ্যেই গবেষণা পত্র আহ্বান করে জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি আকারে তা প্রকাশ করা হবে বলে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরামের (সিএমজেএফ) সভাপতি জিয়াউর রহমান, বিআইসিএমের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) নাজমুছ সালেহীন এবং সিএমজেএফের সাবেক সভাপতি হাসান ইমাম রুবেল।