1. [email protected] : ইকোনোমিক বিডি প্রতিবেদক : ইকোনোমিক বিডি প্রতিবেদক
  2. [email protected] : ইকোনোমিক বিডি : ইকোনোমিক বিডি
আন্ডার সাবক্রাইবের আশঙ্কায় গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংক
শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৪ অপরাহ্ন

আন্ডার সাবক্রাইবের আশঙ্কায় গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংক

  • পোস্ট হয়েছে : সোমবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২২

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য অনুমোদন পাওয়া গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংক আন্ডার সাবক্রইব হবে বলে মনে করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা থেকে শুরু করে সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও। কারণ এর আগে বিনিয়োগকারীদের থেকে ৪২৮ কোটি টাকা তুলে নিয়ে ফেস ভ্যালুর নিচে অবস্থান করছে ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেড। আর্থিক প্রতিবেদনের আলোকে ইউনিয়ন ব্যাংক থেকে প্রায় সকল অবস্থাতেই দুর্বল গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংক। তাই ব্যাংকটি আন্ডার সাবক্রাইব হবে বলে মনে করছে বাজার সংশ্লিষ্টরা।

শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়ন ব্যাংকের আইপিও আবেদন করা অধিকাংশ বিনিয়োগকারী লোকসানে রয়েছে। কারণ ইউনিয়ন ব্যাংকের শেয়ারদর এখন ফেস ভ্যালুর নিচে ফ্লোর প্রাইসে অবস্থান করছে। যদি ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেওয়া না হতো, তাহলে এই ব্যাংকের শেয়ারদর ৬ টাকায় নেমে যেতে বলে মনে করছেন বিনিয়োগকারীরা। তাই বিনিয়োগকারীদের এখন ব্যাংকের আইপিওর প্রতি তেমন আগ্রহ নেই।

এই কারণে বিনিয়োগকারী ও বাজার সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংকের আইপিও আন্ডার সাবক্রাইব হতে পারে। আর আন্ডার সাবক্রাইব হওয়া থেকে ব্যাংকটিকে রক্ষা করার জন্য নতুন করে পদক্ষেপ নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।

গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংকের জন্য বিএসইসির করা নতুন নিয়মে বিনিয়োগকারীরা ৫০ হাজার টাকা পযন্ত আবেদন করতে পারবে। যা অন্য কোম্পানির ক্ষেত্রে ১০ হাজার টাকা। এতে করে আবেদন করা বিনিয়োগকারীরা ১০ হাজার টাকার গুণিতক হারে শেয়ার পাবে। গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংকের জন্য করা এই নিয়ম এর আগে সকল বিনিয়োগকারীর জন্য থাকলেও পরে তা তুলে দেওয়া হয়।

এছাড়াও, প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের জন্য আইপিও ২৫ শতাংশ কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রবাসিদের আবেদনে যদি আন্ডার সাবক্রাইব হয়, তাহলে বিদেশিদের কোটা কমিয়ে তা দেশিয় সাধারণ বিনিয়োগকালীদের মধ্যে বণ্টন করা হবে।

অন্যদিকে, ইউনিয়ন ব্যাংকে বিনিয়োগ করে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা নিজেদের শেয়ার নিয়ে এখন আটকে আছে। না পারছে বিক্রি করতে, না পারছে সমন্বয় করতে। কারণ ফ্লোর প্রাইস তুলে দিলে ব্যাংকটির শেয়ারদর আরও কমে যেতে পারে বলে বাজারে ছড়িয়ে আছে।

আশরাফ নামে এক বিনিয়োগকারী শেয়ারনিউজকে বলেন, ইউনিয়ন ব্যাংকের শেয়ার নিয়ে আমি অনেক বেশি লোকসানে আছি। গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংক ইউনিয়ন ব্যাংকের চেয়েও দুর্বল প্রকৃতির। আর এই দুর্বল ব্যাংকের শেয়ার নিয়ে শুধু শুধু নিজের বিনিয়োগকে ঝুঁকিতে ফেলা ঠিক হবে না। তাই গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংকের আইপিওতে আবেদন আমি তো করবোই না, অন্য বিনিয়োগকারীদেরকেও বলবো এমন দুর্বল ব্যাংকের শেয়ার থেকে নিজের পুঁজি সংরক্ষণ রাখুন।

৩১ ডিসেম্বর ২০২০ অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ইউনিয়ন ব্যাংকের বছরে ইনভেস্টমেন্ট ইনকাম হয়েছে ১ হাজার ৯৭৪ কোটি ১ লাখ ২৬ হাজার ৯১৭ টাকা। অন্যদিকে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ইনভেস্টমেন্ট ইনকাম হয়েছে ১ হাজার ২০৪ কোটি ৮৭ লাখ ৪০ হাজার ১৬৫ টাকা। অর্থাৎ ইউনিয়ন ব্যাংক থেকে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ইনভেস্টমেন্ট ইনকাম কম হয়েছে ৭৬৯ কোটি ১৩ লাখ ৮৬ হাজার ৭৫২ টাকা অর্থাৎ ৩৯ শতাংশ কম।

আরও পড়ুন:শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ বাড়াতে ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়েছে বিএসইসি

নেট ইনভেস্টমেন্ট ইনকাম ইউনিয়ন ব্যাংকের যেখানে ৪৪২ কোটি ৩২ লাখ ৬১ হাজার ৫২৭ টাকা হয়েছে সেখানে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের নেট ইনভেস্টমেন্ট ইনকাম হয়েছে ২৯৫ কোটি ৯২ লাখ ৫৮ হাজার ১০৪ টাকা। অর্থাৎ নেট ইনভেস্টমেন্ট ইনকামের দিক দিয়ে ইউনিয়ন ব্যাংক থেকে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক অনেক পিছিয়ে রয়েছে।

এদিকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ অনুযায়ী, ইউনিয়ন ব্যাংকের শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৬ টাকা ৩৮ পয়সা। সেখানে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ১৩ টাকা ৬৫ পয়সা। ১৬.৩৮ টাকা এনএভি’র ইউনিয়ন ব্যাংকের শেয়ার দর ৯ টাকা ৩০ পয়সা, ডিভিডেন্ড দিয়েছে মাত্র ৫%। সেখানে ১৩ টাকা ৬৫ পয়সার এনএভি’র গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের কি অবস্থা হবে সেটাই দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।

আইপিও থেকে গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংকের অর্থ উত্তোলন:

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে আইপিওর মাধ্যমে ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে শেয়ারবাজার থেকে ৪২৫ কোটি টাকা মূলধন উত্তোলনের অনুমোদন পেয়েছে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। আইপিওর মাধ্যমে ব্যাংকটি ১০ টাকা মূল্যের ৪২ কোটি ৫০ লাখ শেয়ার ইস্যু করে শেয়ারবাজার থেকে ৪২৫ কোটি উত্তোলন করবে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক।

উত্তোলিত অর্থ এসএমই, সরকারি সিকিউরিটিজ ও শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ এবং প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের খরচ খাতে ব্যয় করবে ব্যাংকটি।

৩০ সেপ্টেম্বর সমাপ্ত ২০২১ হিসাব বছরে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৯১ পয়সা। গত পাঁচ বছরের ভারিত গড় হারে ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৮ পয়সা। পুনর্মূল্যায়ন ছাড়া কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) ১৪ টাকা ৪২ পয়সা। কোম্পানিটি সম্পদ পুনর্মূল্যায়ন করেনি।

কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে লংকাবাংলা ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড ও প্রাইম ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।

শেয়ার দিয়ে সাথেই থাকুন..

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ