আইন লঙ্ঘন করে সহযোগী কোম্পানিতে বিনাসুদে ঋণ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শেয়ারবাজারে বস্ত্রখাতে তালিকাভুক্ত রিজেন্ট টেক্সটাইলের বিরুদ্ধে। বিনাসুদে ঋণ দেওয়ার বিষয়ে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ ও শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নেওয়া হয়নি। এতে রিজেন্ট টেক্সটাইল সিকিউরিটিজ নির্দেশনা লঙ্ঘন করেছে বলে মনে করছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, রিজেন্ট টেক্সটাইলের নামে ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণ তাদের সহযোগী কোম্পানিতে বিনাসুদে ব্যবহার করা হয়েছে। আর এ ঋণের সুদ বহন করছে খোদ রিজেন্ট টেক্সটাইল। এতে এই সুদের দায়ভার বহন করতে হচ্ছে রিজেন্ট টেক্সটাইলের ৪৫.৪৫ শতাংশ সাধারণ শেয়ারহোল্ডাদেরও।
সম্প্রতি ঋণ দেওয়ার বিষয়টি বিএসইসির দৃষ্টিগোচর হয়। গত ২৩ ডিসেম্বর এই অনিয়মের কারণ ব্যাখ্যা চেয়ে রিজেন্ট টেক্সটাইলকে চিঠি দেয় বিএসইসি। একইসঙ্গে সেই ঋণ সুদসহ ফেরত আনতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও বিএসইসির সূত্রে জানা গেছে।
২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত রিজেন্ট টেক্সটাইল তার সহযোগী কোম্পানিতে বিনাসুদে ঋণ দিয়েছে ১৮ কোটি ২০ লাখ টাকা। আর ২০১৯ সালে এ ঋণের পরিমাণ ছিল ২০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। যা ২০১৮ সালে ৩১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা, ২০১৭ সালে ১৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা এবং ২০১৬ সালে ছিল ১৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।
রিজেন্ট টেক্সটাইলকে বিএসইসির পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, এই ঋণ রিজেন্ট টেক্সটাইলের আর্থিক হিসাববিবরণীতে ‘ডিউ ফর্ম অ্যাফিলিয়েটেড কোম্পানিজ’ শিরোনামে দেখানো হয়েছে। অথচ রিজেন্ট টেক্সটাইলের নামে ব্যাংক থেকে নেওয়া এই ঋণ সহযোগী কোম্পানিতে বিনাসুদে ব্যবহার করা হচ্ছে। আর এর সুদ বহন করছে রিজেন্ট টেক্সটাইল।
সহযোগী কোম্পানিতে বিনাসুদে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত পরিচালনা পর্ষদ ও সাধারণ সভায় শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন না নেওয়ায় কোম্পানিটি ২০০৬ সালের ১০ সেপ্টেম্বর বিএসইসির জারি নির্দেশনা লঙ্ঘন করেছে।
কোম্পানির এই অনিয়মের ব্যাখ্যা চাওয়ার পাশাপাশি ঋণ, সুদসহ ১৫ দিনের মধ্যে ফেরত আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে চিঠিতে।
রিজেন্ট টেক্সটাইলের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) অঞ্জন কুমার ভট্টাচার্য বলেন, ‘আসলে এটা ঋণ না। এটা কোম্পানির সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্কিত লেনদেন। এ কারণে টাকা বকেয়া রয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিএসইসি যেহেতু ব্যাখা চেয়েছে, সেই অনুযায়ী আমরা জবাব দেবো।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসইসি একজন কর্মকর্তা বলেন, রিজেন্ট টেক্সটাইল ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত তার সহযোগী কোম্পানিতে বিনাসুদে ঋণ দিয়েছে ১৮ কোটি ২০ লাখ টাকা। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনা করে বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বিএসইসি।