পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত অরিয়ন গ্রুপের শেয়ারগুলো হাওয়া ভাসছে। দুই একদিন গ্যাপ দিয়ে প্রতিদিনই বাড়ছে শেয়ারের দর। তবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) থেকে দর বাড়ার কারণ জানতে চেয়ে একাধিকবার নোটিশ দিলেও কোম্পানি জানিয়েছে কোন কারণ নেই।
আন্যদিকে মঙ্গলবার লেনদেন শেষে দেখা গেছে ব্লচিপ বা ফান্ডামেন্টাল শেয়ার হিসেবে বিবেচিত ডিএসই-৩০ সূচকের অন্তর্ভুক্ত বেশকিছু কোম্পানির শেয়ারে ক্রেতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। এর মধ্যে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, ব্র্যাক ব্যাংক, গ্রামীণফোন, স্কয়ার ফার্মা, সিঙ্গার বিডি, রেনাটাসহ আরও কিছু কোম্পানির শেয়ার রয়েছে। এসব শেয়ার লেনদেনের একপর্যায়ে ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়ে। বাজার চিত্রে দেখা যায়, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর শেয়ার বর্তমানে ফ্লোর প্রাইসে অবস্থান করছে। সেই সঙ্গে রেনাটা, সিঙ্গার বিডি ও ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ারও ফ্লোর প্রাইসে রয়েছে।
তবে এখন পর্যন্ত তদন্তের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। যদি দেখা গেছে কয়েকটি কোম্পানির নাম মাত্র দর বাড়ার পর ডিএসইকে তদন্ত করার নির্দেশনা দিয়েছে বিএসইসি।
এ বিষয়ে সংস্থাটির মূখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম সানবিডিকে বলেন, একটি কোম্পানির বিরুদ্ধে তদন্ত করার জন্য অনেকগুলো কারণ থাকে। এই কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে এমন কোন কারণ পাওয়া যায়নি। কারণ পেলেই এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তার এমন কথায় হতাশ বাজার সংশ্লিষ্টরা। তারা বলেনম মতিঝিল পাড়ায় বিনিয়োগকারীদের মুখে মুখে এই কারসাজির সাথে কারা জড়িত। কিন্তু বিএসইসি কোন সমস্যা পাচ্ছে না।
অরিয়ন ইনফিউশন:
অরিয়ন ইনফিউশন লিমিটেডের শেয়ারদর সাম্প্রতিক সময়ে অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। মাত্র দেড় মাসে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৪৫৭ শতাংশ। এর মধ্যে গত পাঁচ কার্যদিবসে বেড়েছে প্রায় ৪৮ শতাংশ। এ সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেনও বেড়েছে। তবে এ শেয়ারদর বৃদ্ধি ও অস্বাভাবিক লেনদেনের পেছনে অপ্রকাশিত কোনো মূল্যসংবেদনশীল তথ্য নেই বলে ডিএসইকে জানিয়েছে কোম্পানিটি।
চলতি বছরের ২৮ জুলাইয়ের পর থেকেই ডিএসইতে ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ারদর। এ নিয়ে কোম্পানিটিকে গত মাসে তিনবার কারণ দর্শানো চিঠি দেয় ডিএসই। প্রতিবারই কোম্পানিটি জানিয়েছে এর পেছনে অপ্রকাশিত কোনো মূল্যসংবেদনশীল তথ্য নেই।
সর্বশেষ গত সোমবার চলতি মাসে প্রথমবারের মতো চিঠি দিলে তার জবাবেও গতকাল একই তথ্য দেয় ওরিয়ন ইনফিউশন। মূলত ২৮ জুলাইয়ের পর থেকে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৪৭৮ টাকা ৪০ পয়সা বা ৪৫৭ শতাংশ। এ সময়ের মধ্যে শেয়ারটির দর ১০৪ টাকা ৭০ পয়সা থেকে বেড়ে ৫৮৩ টাকা ১০ পয়সায় দাঁড়ায়। এর মধ্যে গত পাঁচ কার্যদিবসে বেড়েছে ১৮৭ টাকা ৮০ পয়সা বা ৪৭ দশমিক ৫১ শতাংশ। যে কারণে ডিএসই কোম্পানিটির কাছে সর্বশেষ কারণ দর্শানো নোটিস পাঠায়। এদিকে গত পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে ১৮ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটির শেয়ার সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে। এদিন কোম্পানিটির মোট ৯ লাখ ৩১ হাজার ৬৯টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর গতকাল এ লেনদেন ছিল ৫ লাখ ৫ হাজার ১১৪টি শেয়ার।
সর্বশেষ ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২১-২২ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৪৩ পয়সা, যা এর আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১ টাকা ১২ পয়সায়।
কহিনূর কেমিক্যাল:গত আগস্ট মাসের ২২ তারিখে শেয়ারের দর ছিলো ৪২৫ টাকা। ২০ সেপ্টেম্বর দিন শেষে শেয়ারের দর দাঁড়িয়েছে ৭৩৫ টাকা। এক মাসে শেয়ারের দর বেড়েছে ৩২০ টাকা। ৬ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটি জানিয়েছে দর বাড়ার পেছনে অপ্রকাশিত কোনো মূল্যসংবেদনশীল তথ্য নেই।
সর্বশেষ ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২১-২২ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৯ টাকা ২৪ পয়সা, যা এর আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৭ টাকা ১১ পয়সায়। এই সময়ে লভ্যাংশ দিয়েছিলো ৩৫ শতাংশ নগদ ও ১৫ শতাংশ।
অরিয়ন ফার্মা: গত ২০ জুলাই প্রতিটি শেয়ারের দর ছিলো ৭৮ টাকা ৪০ পয়সা। ২০ সেপ্টেম্বর দিন শেষে শেয়ারের দর দাঁড়িয়েছে ১৪৪ টাকা ৭০ পয়সা। এই সময়ে শেয়ারের দর বেড়েছে ৬৬ টাকা ৩০ পয়সা। ৭ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটি জানিয়েছে দর বাড়ার পেছনে অপ্রকাশিত কোনো মূল্যসংবেদনশীল তথ্য নেই।
সর্বশেষ ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২১-২২ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৭ টাকা ০ পয়সা, যা এর আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২ টাকা ৯৮ পয়সায়। এই সময়ে ১২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিলো ।