1. [email protected] : ইকোনোমিক বিডি প্রতিবেদক : ইকোনোমিক বিডি প্রতিবেদক
  2. [email protected] : ইকোনোমিক বিডি : ইকোনোমিক বিডি
প্রগতি ইন্সুরেন্সের তিন অনিয়ম, ক্ষতিগ্রস্ত শেয়ারহোল্ডাররা
শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:১৭ পূর্বাহ্ন

প্রগতি ইন্সুরেন্সের তিন অনিয়ম, ক্ষতিগ্রস্ত শেয়ারহোল্ডাররা

  • পোস্ট হয়েছে : বুধবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২
Pragati_Insurance-

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বিমা খাতের কোম্পানি প্রগতি ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকার কম প্রিমিয়াম নেওয়ার প্রমাণ মিলেছে। এর বিপরীতে কোম্পানিটি মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট কম দিয়েছে ১ কোটি ১০ লাখ টাকা।

প্রতিষ্ঠানটি এই অনিয়ম প্রমাণিত হওয়ার পর মাত্র ৯ লাখ টাকা জরিমানা করে বিষয়টি নিষ্পত্তি করে দিয়েছে বিমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।

এই বিষয়ে আইডিআরএর সাবেক সদস্য গকুল চাঁদ দাস সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, প্রিমিয়াম কম নেয়ায় তিন পক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে বিমা কোম্পানির আয় কমেছে। ফলে শেয়ারহোল্ডাররা মুনাফাবঞ্চিত হয়েছেন। আবার যারা বিমা করেছেন তারা ক্ষতিপূরণ আদায়ে অনিশ্চয়তায় পড়ছেন। আর রাজস্ববঞ্চিত হয়েছে সরকার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক আল মাহমুদ বলেন, এই অপরাধের জরিমানা কখনো এত কম হতে পারে না। উচিত ছিল জরিমানাসহ পুরো প্রিমিয়াম ও ভ্যাট আদায় করা।

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ বলেন, ‘ভ্যাট ফাঁকির বিষয়টি আমরা অডিট করে দেখছি। অডিট শেষ হলে বোঝা যাবে কত টাকা ফাঁকি দেয়া হয়েছে।’

অনিয়মের বিবরণ ও তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন:

প্রগতি ইন্সুরেন্সের এই অনিয়মের তদন্তে গঠিত আইডিআরএর বিশেষ তদন্ত কমিটি কোম্পানিটি থেকে অনাদায়ি প্রিমিয়াম ও ভ্যাট আদায় করার সুপারিশ করেছিল। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিমা কোম্পানিটি ভ্যাটসহ মোট প্রিমিয়াম কম নিয়েছে ৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।

এর আগে গত বছরের শুরুর দিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর প্রগতি ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের বিরুদ্ধে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ফাঁকির অভিযোগ পায়। পরে আইডিআরএকে দুই দফায় (গত বছরের এপ্রিল ও জুনে) চিঠি দিয়ে বিষয়টি তদন্তের অনুরোধ করে ভ্যাট গোয়েন্দা।

এনবিআর’র অনুরোধের প্রেক্ষিতে তদন্তে নামে বিমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ। আর তাতেই বেরিয়ে আসে ময়মনসিংহের ভালুকার মেসার্স ইন্টারন্যাশনাল বেভারেজ প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি কোম্পানিকে কম প্রিমিয়াম সুবিধা দেয়ার বিষয়টি। প্রমাণ মেলে ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগেরও।

আইডিআরএর প্রতিবেদনে বলা হয়, ইন্টারন্যাশনাল বেভারেজ প্রগতি ইন্স্যুরেন্সে মেরিন বিমা করেছিল। প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে তিন বছর ধরে সব ধরনের বিমা পলিসিতে নির্ধারিত হারের চেয়ে কম প্রিমিয়াম নেয়া হচ্ছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের বাইরে থেকে কোনো পণ্য আমদানি করতে গেলে বাধ্যতামূলকভাবেই বিমা করতে হয়। এই ক্ষেত্রে বিমা কোম্পানিগুলোর পণ্যভেদে ১ দশমিক ১৫ শতাংশ থেকে ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ পর্যন্ত পর্যন্ত প্রিমিয়াম নেয়ার বিধান আছে। প্রতিযোগিতার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে কোনো বিমা কোম্পানিই এই হারের চেয়ে কম প্রিমিয়াম নিতে পারবে না।

কিন্তু ইন্টারন্যাশনাল বেভারেজের আমদানি করা সব ধরনের পণ্যের বিপরীতে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ হারে প্রিমিয়াম নিয়েছে প্রগতি ইন্স্যুরেন্স। পণ্য ভিন্ন হলেও এই ক্ষেত্রে প্রিমিয়াম নেয়া হয়েছে একই হারে।

তদন্ত প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২৮১ কোটি ৮২ লাখ টাকার মালামাল আমদানির বিপরীতে ৩৫২টি বিমা পলিসি করে ইন্টারন্যাশনাল বেভারেজ। এতে মোট প্রিমিয়াম আসে ৯ কোটি ৩ লাখ টাকা। অথচ মাত্র ১ কোটি ৬৭ লাখ ৭৬ হাজার টাকা প্রিমিয়াম নিয়েছে প্রগতি ইন্স্যুরেন্স। নিজেদের গ্রাহককে এভাবে প্রিমিয়াম সুবিধা দেয়ার মাধ্যমে রাষ্ট্রকে বিপুল অঙ্কের রাজস্ব বঞ্চিত করা হয়েছে। হিসাব অনুযায়ী ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকার বেশি ভ্যাট দেয়ার কথা থাকলেও তারা দিয়েছে মাত্র ২৫ লাখ ১৭ হাজার টাকা।

শেয়ার দিয়ে সাথেই থাকুন..

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ