শেয়ারবাজারে ওভার দ্য কাউন্টারে (ওটিসি মার্কেট) তালিকাভুক্ত কোম্পানি গালফ ফুডসের কারখানা ও অফিস পরিদর্শনে যন্ত্রপাতির অস্তিত্ব পায়নি চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)। এ নিয়ে সিএসইর পরিদর্শন প্রতিবেদনের পরে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কোম্পানিটিকে সংশ্লিষ্ট নথি এবং প্রাসঙ্গিক কাগজপত্রসহ অবস্থান ব্যাখ্যা করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি।
সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি চিঠি কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পরিচালনা পর্ষদ ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) এবং সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) ব্যবস্থপনা পরিচালক বরাবর পাঠিয়েছে বিএসইসি।
বিএসইসির চিঠিতে বলা হয়েছে, বিএসইসি থেকে বিভিন্ন সময়ে প্রকাশ করা নির্দেশনা ও আদেশ অনুযায়ী ওটিসি মার্কেটে লেনদেন করা কোম্পানির কারখানা ও অফিস পরিদর্শন করেছে সিএসই। সেই পরিদর্শনের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করার পরে গালফ ফুডসের বিভিন্ন সমস্যা প্রকাশ করা হয়েছে।
কোম্পানিটি ১৯৯৭ সালে সিএসইতে তালিকাভুক্ত হয় এবং আইপিও, আরপিও ও আরওডির মাধ্যমে পরিশোধিত মূলধন ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা বৃদ্ধি করে। বর্তমান পরিশোধিত মূলধন হল ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এ কোম্পানিটির শেষ এজিএম ২০১৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর হয়েছিল। ২০১৬ সাল থেকে কোম্পানিটির উৎপাদন বন্ধ আছে এবং কারখানা প্রাঙ্গণে কোনো যন্ত্রপাতি পাওয়া যায়নি।
এদিকে সিএসইর পরিদর্শন দলটি কোম্পানির ঢাকা অফিসের নিবন্ধিত ঠিকানা পরিদর্শন করেছে। কিন্তু সেখানে কোম্পানির কার্যালয় খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে গালফ ফুডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কোম্পানিটি অভিহিত মূল্যে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের বিনিয়োগ মীমাংসার জন্য অন্য কোম্পানির অফিস প্রাঙ্গণ ব্যবহার করছে।
বিএসইসির চিঠিতে যেসব তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে, জমির মিউটেশন কপিসহ বর্তমান জমির অবস্থার বিবরণ, বর্তমান উৎপাদন অবস্থা এবং উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার পর কোনো পিএসআই প্রকাশিত হয়েছে কি না, কেন কোম্পানি ওটিসি বাজার থেকে প্রস্থান প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেনি, কোম্পানির স্থায়ী সম্পতির পুনর্মূল্যায়ন প্রতিবেদন, কোম্পানির গত ৫ বছরের আর্থিক বিবরণী, ওটিসি বাজারে যাওয়ার পর যেকোনো স্থায়ী সম্পদের নিষ্পত্তির বিবরণ, ডিএমএটি শেয়ারের ক্ষেত্রে বা আরআইএসসির প্রত্যয়িত শিডিউল-এক্সসহ শেয়ার প্রত্যয়নপত্রের অনুলিপি, ডিপিএ- ৬ এর অনুলিপি ও আইপিও/আরপিও/আরওডি এর ব্যবহার প্রতিবেদনের অগ্রগতি।
কোম্পানিটি ২০১৬ সালের ২৯ জুন ইজিএমে তাদের ব্যবসা স্বেচ্ছায় বন্ধ করার জন্য একটি রেজুলেশন পাস করে এবং পরবর্তীতে শেয়ারবাজার থেকে তাদের প্রস্থানের জন্য কমিশনে আবেদন করে।
এদিকে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কোম্পানিটি তাদের শেয়ারহোল্ডারদের মোট ২৫ লাখ ৮৪ হাজার শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের শেয়ার ছাড়া মাত্র ৪ লাখ ১৯ হাজার ৫০০টি শেয়ার নিষ্পত্তি করেছে। সর্বশেষ শেয়ার ধারণ রিপোর্ট অনুযায়ী, উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা ৩২ শতাংশ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ৪৮ শতাংশ এবং সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা মোট শেয়ারের ৬৩.১২ শতাংশ ধারণ করে।
পরবর্তীতে ২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর বিএসইসির নোটিফিকেশনের শর্ত অনুসারে, কোম্পানিটিকে ওটিসি মার্কেট থেকে সম্পূর্ণ বের করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এবং বিজ্ঞপ্তি জারির ২ মাসের মধ্যে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে অনুমিত দেওয়া হয়েছিল।