৯৩৪ কোটি টাকার গরমিল ধরা পড়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রাষ্ট্রায়াত্ব মালিকানাধীন রূপালী ব্যাংকে। বাংলাদেশ কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের (সিএজি) প্রতিবেদনে ব্যাংকটির বড় ধরণের এই আর্থিক অনিয়ম শনাক্ত হয়।
সিএজি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, আর্থিক খাতের দুর্বৃত্তরা নানা কৌশলে ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের টাকা বের করে নিয়েছে। বিশেষ করে ঋণখেলাপি হয়ে এবং খাস জমি মর্টগেজ রেখে ঋণ নিয়ে গেছে।
অস্তিত্ব ও যোগ্যতাহীন প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেওয়ার ঘটনা আছে। ভুয়া বন্ধকি নিয়েও ঋণ ইস্যুর ঘটনা ঘটেছে। এভাবেই ব্যাংকটিতে আর্থিক অনিয়ম হয়েছে।
গোটা ব্যাংক খাত নিয়ে সিএজির প্রতিবেদন খুব শিগগিরই হস্তান্তর করা হবে রাষ্ট্রপতির কাছে। এরপর তা উপস্থাপন করা হবে জাতীয় সংসদে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রতিবছর সরকারের বাজেটের টাকা ব্যয়ের ওপর সিএজি নিরীক্ষা করে। পাশাপাশি ব্যাংকিং খাতের ওপর বিশেষভাবে নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা হয়। তারই অংশ হিসাবে ব্যাংক খাতেও নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। রূপালী ব্যাংকে নিরীক্ষা কার্যক্রম তারই একটি অংশ।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, সিএজি এবছর রূপালী ব্যাংকের অনিয়মের ওপর বিশেষ নিরীক্ষা প্রতিবেদন তৈরি করেছে। সেখানে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনার মধ্যে রয়েছে মেয়াদি ঋণ আদায় না করে ক্ষমতাবহির্ভূতভাবে এলটিআর (লোন এগিনিণ্ট ট্রাস্ট রিসিপট বা বিশ্বাসী ঋণ) সৃষ্টি করা।
এই কারণে ব্যাংকের ক্ষতি হয়েছে ১২৮ কোটি টাকা। গ্রাহক এই টাকা ফেরত দেয়নি। এছাড়া মঞ্জুরিশর্ত লঙ্ঘন করে মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণের সীমারিক্ত ঋণ দেওয়া হয় প্রায় ১০০ কোটি টাকা।
এটিও শেষ পর্যন্ত ক্ষতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। জামানতবিহীন এলটিআর সৃষ্টি, ত্রুটিপূর্ণ রপ্তানি বিলের মাধ্যমে ঋণ দেওয়া, শাখা ব্যবস্থাপনার যোগসাজশে এসএমই ঋণ দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, যাচাই-বাছাই ছাড়াই ঋণ দেওয়া, ওই টাকা নিয়ে আংশিক চালুর পর রুগ্ণ হয়ে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি। পাশাপাশি জালিয়াতি ও নিকাশের (ক্লিয়ারিং) মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ, শর্ত অনুযায়ী ঋণ সমন্বয় না করায় খেলাপি হওয়াসহ আরও একাধিক ঘটনায় ব্যাংকের ১৪২ কোটি টাকার অনিয়ম ধরা পড়ে।