পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড আইন অমান্য করে ব্যাংকের পরিচালক এবং তাদের আত্মীয়-স্বজনদের ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে নজিরবিহীন পরিমাণ ঋণ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছে।
গত ১২ জানুয়ারি ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো.মেহমুদ হোসেন এবং এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও কার্ড ডিভিশনের প্রধান মো.মাহফুজুর রহমান স্বাক্ষরিত ক্ষমা প্রার্থনার চিঠি বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে পাঠানো চিঠিতে ন্যাশনাল ব্যাংক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, ‘এই ধরণের অন্যায় ভবিষ্যতে আর হবে না।’
এর আগে সিকদার পরিবারের নয় সদস্য ও দুই কর্মী মিলিয়ে ১১টি ক্রেডিট কার্ডের বিপরীতে দেওয়া বৈদেশিক ঋণসুবিধার তথ্য গোপন করায় ব্যাংকটিকে জরিমানা করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রতিটি কার্ডের জন্য সিকদার পরিবারের নিয়ন্ত্রণে থাকা ব্যাংকটিকে পাঁচ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।
এর ফলে সব মিলিয়ে ন্যাশনাল ব্যাংককে জরিমানা গুনতে হয় ৫৫ লাখ টাকা। গত ডিসেম্বর ও চলতি জানুয়ারি মাসে কয়েক দফায় এসব জরিমানা করা হয়।
গত ১৮ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে ন্যাশনাল ব্যাংককে চিঠি দেয়। চিঠির জবাবে এনবিএল নিয়ম না মেনে বিদেশি মুদ্রার হিসাব খোলা ও কার্ডের মাধ্যমে সীমার বেশি ডলার খরচের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছে। ব্যাংকটি সিকদার পরিবারের সদস্যদের কার্ডগুলো বন্ধ করে দিয়েছে বলে চিঠিতে জানিয়েছে।
একই সঙ্গে ব্যাংকের কার্ড সেবা স্থগিত বা বাতিল না করার পাশাপাশি দুটি শাখার বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেনের অনুমোদন (এডি) বাতিল বা স্থগিত না করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে এনবিএল।
ব্যাংকের আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে সিকদার পরিবারের নয় সদস্য ও সিকদার গ্রুপের দুই কর্মী সীমাতিরিক্ত ১১৭ কোটি টাকা সমমূল্যের ডলার খরচ করেন। একজন নাগরিক বছরে ১২ হাজার ডলার পর্যন্ত খরচ করতে পারেন।
কিন্তু তারা বছরে গড়ে আড়াই লাখ ডলার পর্যন্ত খরচ করেছেন। তারা পাঁচ বছরে (২০১৭ থেকে ২০২১ সাল) কার্ডের মাধ্যমে বিদেশে এ অর্থ খরচ করেন।