1. [email protected] : ইকোনোমিক বিডি প্রতিবেদক : ইকোনোমিক বিডি প্রতিবেদক
  2. [email protected] : ইকোনোমিক বিডি : ইকোনোমিক বিডি
২০২১ সালে শেয়ারবাজার দেখল বিনিয়োগকারীদের এক অন্যরকম অনুভূতি
রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৪ অপরাহ্ন

২০২১ সালে শেয়ারবাজার দেখল বিনিয়োগকারীদের এক অন্যরকম অনুভূতি

  • পোস্ট হয়েছে : শনিবার, ১ জানুয়ারী, ২০২২
dse-logo

২০২১ সালে দেশের শেয়ারবাজার দেখল বিনিয়োগকারীদের এক অন্যরকম অনুভূতি। বছরটিতে যে পরিমাণ উত্থান হয়েছে, তার এক-তৃতীয়াংশেরও কম পতন হয়েছে। তারপরেও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উত্থানের খুশির চেয়ে পতনের অখুশিই বেশি দেখা গেছে। অনেকটা তারা সিকিউরিটিজ কিনবে এবং তা শুধু বাড়বে, সংশোধন বা কমতে পারবে না। এমনকি বিগত বছরের শেয়ারবাজারে অতিতের প্রায় সব রেকর্ড ভাঙ্গার পরেও বাজার সংশ্লিষ্টদের আচরনও খুব একটা সন্তোষজনক ছিল না। তারা উত্থানকে যেমন মেনে নিতে পারেননি, আবার পতনের ক্ষেত্রে সংশোধনের চেয়ে নানা নেতিবাচক দিক তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।

গত বছরের লেনদেনের প্রথমদিন থেকে শেয়ারবাজারে বড় উত্থান হয়। একসময় ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৯৫৬.৯৩ পয়েন্ট বেড়ে ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৭৩৬৮ পয়েন্টে উঠে যায়। তবে এরপরে সূচকটি ৬১১.৩৪ পয়েন্ট কমে। যাতে করে বছরটিতে নিট সূচক বেড়েছে ১৩৫৪.৫৯ পয়েন্ট। এই উত্থানের পরেও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অখুশিই বেশি ফুটে উঠেছে। ১৯৫৬.৯৩ পয়েন্ট বৃদ্ধিতে তাদের মধ্যে যে পরিমাণ খুশি দেখা গেছে, তারচেয়ে বেশি অখুশি হতে দেখা গেছে ৬১১ পয়েন্টের পতনে। তাদের আচরন মনে হয় ১৯৫৬.৯৩ পয়েন্ট উত্থানে সিকিউরিটিজের দর বাড়েনি, কিন্তু ৬১১ পয়েন্ট পতনের সময় দর কমেছে।

এ কারনেই হয়তো মাঝেমধ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে বলতে শোনা যায়, কোন বিনিয়োগকারী কোন সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করে, সেটা আমরা দেখি না বা কারও পোর্টফোলিও ম্যানেজ করি না। অথচ বিনিয়োগকারীরা লোকসান করলেই আমাদেরকে দোষারোপ করে। কিন্তু তারা লাভ করলে কখনো প্রশংসা বা ইতিবাচক কিছু বলে না।

দেখা গেছে, ২০২১ সাল ডিএসইর প্রধান শেয়ারবাজার ৫৪০২.০৭ পয়েন্ট নিয়ে যাত্রা শুরু করে। যে সূচকটি বছরের প্রথম কার্যদিবস ৩ জানুযায়ি ২১৬.৮৯ পয়েন্টের বড় উত্থান হয়। যা উত্থানের ও মাঝেমধ্যে কারেকশনের মাধ্যমে ১০ অক্টোবর ৭৩৬৮ পয়েন্টে উঠে যায়। এক্ষত্রে বছরের শুরুর তুলনায় সূচকটি বাড়ে ১৯৬৫.৯৩ পয়েন্ট। যে সূচকটি বছরের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে নেমে এসেছে ৬৭৫৬.৬৬ পয়েন্টে। এ হিসেবে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে সূচকটি ১৯৫৬.৯৩ পয়েন্ট বাড়লেও শেষে এসে কমেছে ৬১১.৩৪ পয়েন্ট।

এমন উত্থানের বাজারেও সাধারন বিনিয়োগকারীদের ন্যায় আচরন করতে দেখা গেছে বাজার সংশ্লিষ্টদেরকে। তারা গণমাধ্যমে বা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে শেয়ারবাজার নিয়ে বক্তব্য দিতে গিয়ে নিরপেক্ষ বা সঠিক অবস্থান ধরে রাখতে পারেননি। উত্থানের সময় বাজার অতিমূল্যায়িত হয়ে যাচ্ছে বলে একদিকে আতঙ্ক ছড়িয়েছেন, অন্যদিকে পতনের সময় সাধারন বিনিয়োগকারীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন বলে হতাশা তৈরী করেছেন। এমনকি পতনের সময় কেউ স্বাভাবিক কারেকশন বা সংশোধন না বলে উত্থান-পতন উভয়কেই অস্বাভাবিক বলেছেন। অথচ তাদের বক্তব্য অনুযায়ি উত্থানে অতিমূল্যায়িত হয়ে গেলে, পরে পতনের মাধ্যমে স্বাভাবিক হওয়ার কথা।

ডিএসইর অন্য সূচকগুলোরও ২০২১ সালে বড় উত্থান হয়েছে। এরমধ্যে ডিএসই ৩০ সূচক (ডিএস৩০) ৫৬৮ পয়েন্ট বা ২৮.৯৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২৫৩২.৫৮ পয়েন্টে উঠে এসেছে৷ আর ডিএসইএক্স শরীয়াহ্ সূচক (ডিএসইএস) ১৮৯.০১ পয়েন্ট বা ১৫.২২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১৪৩১.১২ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে৷

দীর্ঘদিন পরে ২০২১ সালে দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেনে ফিরে এসেছে প্রাণচাঞ্চল্য। কোভিড ১৯ মহামারির কারণে বিশ্বব্যাপি শেয়ারবাজারের গতি মন্থর থাকলেও ডিএসই লেনদেনের ক্ষেত্রে মাইলফলক সৃস্টি করে৷ বছরটিতে ডিএসইতে ২৪০ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে৷ এতে মোট লেনদেনে হয়েছে ৩ লাখ ৫৪ হাজার ৫২ কোটি ৮৬ লাখ টাকার৷ যা ডিএসই’র ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন এবং গত বছরের চেয়ে ২ লাখ ১৯ হাজার ৭১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা বা ১৬২.৩০ শতাংশ বেশি৷ যে বছরটিতে দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪৭৫ কোটি ২২ লাখ টাকার৷

অপরদিকে ২০২০ সালে ২০৮ কার্যদিবসে মোট লেনদেনের পরিমান ছিল ১ লাখ ৩৪ হাজার ৯৮১ কোটি ২২ লাখ টাকা এবং গড়ে লেনদেনের পরিমান ছিল ৬৪৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা৷

মূল্যসূচক এবং লেনদেনের ন্যায় সিকিউরিটিজের দর বা বাজার মূলধনেও হয়েছে বড় উত্থান। ২০২১ সালে বাজার মূলধন ডিএসই’র ইতিহাসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে৷ ডিএসইর বাজার মূলধন আগের বছরের তুলনায় ৯৩ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকা বা ২০.৯৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৫ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে৷

শেয়ার দিয়ে সাথেই থাকুন..

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ