1. [email protected] : ইকোনোমিক বিডি প্রতিবেদক : ইকোনোমিক বিডি প্রতিবেদক
  2. [email protected] : ইকোনোমিক বিডি : ইকোনোমিক বিডি
রেকর্ড ৮ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকার নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৪ অপরাহ্ন

রেকর্ড ৮ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকার নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা

  • পোস্ট হয়েছে : রবিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২১
taka

শেয়ারবাজারে তালিকভুক্ত জুন ক্লোজিং কোম্পানিগুলোর পরিচালনা পর্ষদ ২০২০-২১ অর্থবছরের ব্যবসায় রেকর্ড ৮ হাজার ৫৯৫ কোটি ৮ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। গত ১ জুলাই থেকে ২৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত কোম্পানিগুলোর পরিচালনা পর্ষদ সভায় এই ঘোষণা করা হয়েছে। যা বার্ষিক সাধারন সভায় (এজিএম) স্ব স্ব কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতিক্রমে প্রদান করা হবে।

কোম্পানিগুলোর পর্ষদের ঘোষিত লভ্যাংশ অনুমোদনের জন্য প্রায় সব কোম্পানির এজিএম আগামি ডিসেম্বরের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। এরপরে জানুয়ারির মধ্যে শেয়ারহোল্ডারদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তা পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

আগের বছর ন্যায় এবছরও নগদ লভ্যাংশ প্রদানে কিছুটা কড়াকড়ি ছিল। এ্ক্ষেত্রে নতুন কমিশনের সক্রিয় ভূমিকা ও বাজেটে কমপক্ষে বোনাস শেয়ারের সমপরিমাণ নগদ লভ্যাংশ প্রদান বাধ্যবাধকতা অন্যতম কারন। অন্যথায় পুরো বোনাস শেয়ারের উপরে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ করারোপের শাস্তির যেমন বিধান রয়েছে, একইভাবে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশনের জেরার মুখে পড়তে হয়।

বর্তমান কমিশনের অধীনে ব্যবসা সম্প্রসারণ ছাড়া বোনাস শেয়ার দেওয়া প্রায় অসম্ভব। এই বোনাস শেয়ার দিতে গেলে কমিশনের অনুমোদনের প্রয়োজন পড়ে। এছাড়া লভ্যাংশ না দেওয়া বা নামমাত্র দেওয়া কোম্পানিগুলোকে ব্যাখ্যার জন্য কমিশনে তলব করা হয়। যে কারনে সঙ্গত কারনেই কমে এসেছে বোনাস শেয়ার।

দেখা গেছে, গত ১ জুলাই থেকে ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে জুন ক্লোজিং, কয়েকটি অন্তর্বর্তীকালীন ও দু-একটি ডিসেম্বর ক্লোজিং বীমা কোম্পানি লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এ পর্যন্ত ২১৩ কোম্পানির পর্ষদ ৮ হাজার ৫৯৫ কোটি ৮ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। তবে জুন ক্লোজিং কোম্পানিগুলোর জন্য নির্দিষ্ট সময় গত ৩১ অক্টোবর শেষ হয়ে গেলেও কয়েকটি কোম্পানি এখনো লভ্যাংশ সংক্রান্ত সভা সম্পন্ন করেনি।

কোম্পানিগুলোর এই বড় নগদ লভ্যাংশ শেয়ারবাজারে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। এই নগদ লভ্যাংশে লেনদেনে কিছুটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

এর আগে চলতি বছরে ডিসেম্বর ক্লোজিং কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশ সভা করা ৮৫ কোম্পনির মধ্যে ৮০টির পর্ষদ ৩ হাজার ২৪২ কোটি ২৭ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। বাকি ৫টির পর্ষদ কোন লভ্যাংশ ঘোষণা করে না।

অপরদিকে আগের বছরে জুন ক্লোজিং কোম্পানিগুলোর মধ্যে একই সময়ে ১৪৪টির পর্ষদ (মিউচ্যুয়াল ফান্ড ছাড়া) ৪ হাজার ৩৭৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিল।

এ বছরের নগদ লভ্যাংশের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসইর সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বিজনেস আওয়ারকে বলেন, ১৯৯৬ ও ২০১০ সালের শেয়ারবাজার ধসের অন্যতম কারন ছিল অতিরিক্ত বোনাস শেয়ার দিয়ে উদ্যোক্তা/পরিচালকদের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার প্রবণতা। তবে বিগত কমিশনের প্রচেষ্টায় মুনাফার ৩০ শতাংশ এবং কমপক্ষে অর্ধেক নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার বাধ্যবাধকতার আইন গঠন ও বর্তমান কমিশনের তা বাস্তবায়নে এখন অযৌক্তিক বোনাস শেয়ার দেওয়া যায় না। যার ফলশ্রুতিতে এই বড় নগদ লভ্যাংশের খবর এসেছে। যা নিসন্দেহে শেয়ারবাজারের জন্য সুখবর।

তবে অনেক ভালো খবরের মধ্যেও কিছু কোম্পানির উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা ‘বি’ ক্যাটাগরিতে থাকার জন্য তামাশার ০.৫০% বা শেয়ারপ্রতি ৫ পয়সা পর্যন্ত লভ্যাংশ ঘোষণা করছেন বলে জানান ডিএসইর এই সাবেক পরিচালক। তিনি বলেন, এবার বেশ কিছু কোম্পানির পরিচালকেরা ১-২% করে লভ্যাংশ দিয়ে বাজারের গতি নষ্ট করার পায়ঁতারা করেছে। এ বিষয়টিতে বিএসইসির নজর রাখা উচিত।

এরপরের অবস্থানে রয়েছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস। এ কোম্পানিটি ২০২০-২১ অর্থবছরের ব্যবসায় শেয়ারহোল্ডারদেরকে ৬০ শতাংশ হারে অর্থাৎ প্রতিটি শেয়ারে ৬ টাকা করে মোট ৫৩১ কোটি ৮৭ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ দেবে।

তবে জুন ক্লোজিং ও অন্তর্বর্তীকালীন বিবেচনায় সর্বোচ্চ নগদ লভ্যাংশ দেবে গ্রামীনফোন। এ কোম্পানিটি অন্তর্বর্তীকালীন হিসেবে ১২৫ শতাংশ হারে অর্থাৎ প্রতিটি শেয়ারে ১২.৫০ টাকা করে মোট ১ হাজার ৬৮৭ কোটি ৮৮ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ দেবে। বহূজাতিক এ কোম্পানির পর্ষদ ৬ মাসের (জানুয়ারি-জুন ২১) ব্যবসায় এই লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।

এ বছর সবচেয়ে কম নগদ লভ্যাংশ দেবে সমতা লেদার। এ কোম্পানি থেকে শুধুমাত্র সাধারন শেয়ারহোল্ডারদেরকে ০.৫০% হারে ৩ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ দেবে। এরপরের অবস্থানে থাকা স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকস থেকে ১% হারে ৬ লাখ টাকা এবং লিগ্যাছি ফুটওয়্যার থেকে ১% হারে শুধুমাত্র সাধারন শেয়ারহোল্ডারদের ৯ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ দেবে।

২১৩ কোম্পানির মধ্যে পুরোটাই নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে ১৭২ কোম্পানি। বাকি ৪১ কোম্পানির পর্ষদ নগদ লভ্যাংশের পাশাপাশি বোনাস শেয়ার ঘোষণা করেছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক শাকিল রিজভী বিজনেস আওয়ারকে বলেন, বর্তমান কমিশনের শক্ত অবস্থানের কারনে এই বিশাল নগদ লভ্যাংশের খবর শুনতে পেলাম। যে নগদ লভ্যাংশ বাজারের জন্য খুবই ইতিবাচক খবর। এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারলে, আগামিতে বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা আরও বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া কোম্পানিগুলোর নগদ লভ্যাংশে বাজারে গতি তরান্বিত করবে বলে মনে করেন তিনি।

শেয়ার দিয়ে সাথেই থাকুন..

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ