শেয়ারবাজারের দ্বিতীয় বৃহত্তম মিউচ্যুয়াল ফান্ড পরিচালনা করা রেস অ্যাসেট ম্যানেজম্যান্টের ফান্ডগুলোর আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০২০-২১ অর্থবছরে গড়ে প্রতিটির ২৬১% হারে মুনাফা বেড়েছে। এর উপর ভিত্তি করে অতালিকাভুক্ত ১টিসহ মোট ১১টি ফান্ড থেকে ইউনিটহোল্ডারদের জন্য ২২৮ কোটি টাকার নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। যা সর্বোচ্চ ২৪টি ফান্ড পরিচালনা করা আইসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের থেকেও ১৩ কোটি টাকা বেশি।
বুধবার (২৫ আগস্ট) রেস ম্যানেজেমেন্টের পরিচালিত ফান্ডগুলোর ট্রাস্টি এই লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।
শেয়ারবাজারের চলমান উত্থানে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মুনাফায় বড় উত্থান হয়েছে। এ তালিকায় রেস ম্যানেজমেন্টের পরিচালিত ১০টি তালিকাভুক্ত ফান্ডও রয়েছে। যেগুলোর আগের অর্থবছরের তুলনায় ২০২০-২১ অর্থবছরে গড়ে ২৬১% হারে মুনাফা বেড়েছে।
এই মুনাফা বৃদ্ধির ফলে ফান্ডগুলো থেকে বড় লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। এ বছর রেস ম্যানেজমেন্ট পরিচালিত তালিকাভুক্ত ১০টি ফান্ড থেকে ২২১ কোটি ২৪ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া অতালিকাভুক্ত রেস স্পেশাল অপরচুনিটিজ ইউনিট ফান্ড থেকে ১৫% হারে ৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। এ হিসেবে রেস ম্যানেজমেন্টের ১১টি ফান্ড থেকে ২২৭ কোটি ৭০ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। যেখানে আইসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের পরিচালিত ২৪টি ফান্ড থেকে ২১৫ কোটি টাকার লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিকে ফান্ডগুলো ১০ টাকা অভিহিত মূল্য বিবেচনায় লভ্যাংশ ঘোষণা করলেও অন্যদের ন্যায় রেস ম্যানেজমেন্টের ফান্ডের ইউনিট দরও ১০ টাকার নিচে অবস্থান করছে। যে কারনে প্রকৃত লভ্যাংশ (ডিভিডেন্ড ইল্ড) ফান্ডগুলোর ঘোষণার তুলনায় বেশি হবে।
এ বছর ১৩% হারে (অভিহিত মূল্য বা ১০ টাকা বিবেচনায়) লভ্যাংশ ঘোষণা করা ফার্স্ট জনতা ফান্ডের ইউনিট দর রয়েছে ৯ টাকা। এই ৯ টাকার উপর লভ্যাংশ পাওয়া যাবে ১.৩০ টাকা। অর্থাৎ প্রকৃত পক্ষে (বাজার দরের তুলনায়) লভ্যাংশ পাওয়া যাবে ১৪.৪৪%।
নিম্নে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রেস ম্যানেজমেন্টের পরিচালিত ফান্ডগুলোর লভ্যাংশের বিস্তারিত তুলে ধরা হল-
ফান্ডের নাম | লভ্যাংশের হার | লভ্যাংশের পরিমাণ | ইউনিট দর (টাকা) | ডিভিডেন্ড ইল্ড |
ফার্স্ট জনতা ব্যাংক ফান্ড | ১৩% | ৩৭.৬৯ কোটি টাকা | ৯ | ১৪.৪৪% |
ইবিএল ফার্স্ট ফান্ড | ১৩% | ১৮.৮২ কোটি টাকা | ৯.৪০ | ১৩.৮৩% |
পপুলার লাইফ ফার্স্ট ফান্ড | ৮.৫% | ২৫.৪২ কোটি টাকা | ৬.৯০ | ১২.৩২% |
ট্রাস্ট ব্যাংক ফার্স্ট ফান্ড | ৯% | ২৭.৩২ কোটি টাকা | ৭.৫০ | ১২% |
পিএইচপি ফার্স্ট ফান্ড | ৮.৫০% | ২৩.৯৬ কোটি টাকা | ৭.২০ | ১১.৮১% |
এবি ব্যাংক ফার্স্ট ফান্ড | ৮% | ১৯.১৩ কোটি টাকা | ৭.৪০ | ১০.৮২% |
আইএফআইসি ফার্স্ট ফান্ড | ৭.৫% | ১৩.৬৬ কোটি টাকা | ৭.২০ | ১০.৪২% |
এক্সিম ব্যাংক ফার্স্ট ফান্ড | ৭.৫% | ১০.৭৪ কোটি টাকা | ৮.৮০ | ৮.৫২% |
ইবিএল এনআরবি ফান্ড | ৬% | ১৩.৪৬ কোটি টাকা | ৭.৪০ | ৮.১১% |
ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ফান্ড | ৪% | ৩১.০৪ কোটি টাকা | ৬.৬০ | ৬.০৬% |
মোট | . | ২২১.২৪ কোটি টাকা | গড় ইল্ড | ১০.৮৩% |
করোনা মহামারির কারনে ২০১৯-২০ অর্থবছরের শেষার্ধে শেয়ারবাজারে বড় পতন হয়। যাতে করে শেয়ারবাজার আয়ের প্রধান উৎস হিসেবে ফান্ডগুলোর ওই অর্থবছরে মুনাফায় ধস নামে। তবে ২০২০-২১ অর্থবছরে শেয়ারবাজারের সঙ্গে সঙ্গে ফান্ডগুলোর ব্যবসায়ও ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। যার উপর ভর করে রেস ম্যানেজমেন্টের ফান্ডগুলোর আগের অর্থবছরের তুলনায় গড়ে ২৬১% হারে উত্থান হয়েছে।
এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি উত্থান হয়েছে ফার্স্ট জনতা ফান্ডের। এ ফান্ডটির আগের অর্থবছরে ইউনিট প্রতি ১.২৬ টাকা লোকসান হলেও এ বছর ইউনিট প্রতি মুনাফা (ইপিইউ) হয়েছে ২.৫৪ টাকা। অর্থাৎ আগের অর্থবছরের তুলনায় ফান্ডটির ব্যবসায় উন্নতি হয়েছে ৩০২%।
নিম্নে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রেস ম্যানেজমেন্টের পরিচালিত ফান্ডগুলোর ব্যবসায় উন্নতির চিত্র তুলে ধরা হল-
ফান্ডের নাম | ইপিইউ (২০২০-২১) | ইপিইউ (২০১৯-২০) | বৃদ্ধির হার |
ফার্স্ট জনতা ব্যাংক ফান্ড | ২.৫৪ টাকা | (১.২৬) টাকা | ৩০২% |
ইবিএল ফার্স্ট ফান্ড | ২.৬১ টাকা | (১.৩৫) টাকা | ২৯৩% |
পপুলার লাইফ ফার্স্ট ফান্ড | ২.০৮ টাকা | (১.২৩) টাকা | ২৬৯% |
পিএইচপি ফার্স্ট ফান্ড | ২.০৪ টাকা | (১.২৩) টাকা | ২৬৬% |
ট্রাস্ট ব্যাংক ফার্স্ট ফান্ড | ২.২৪ টাকা | (১.৩৭) টাকা | ২৬৪% |
এক্সিম ব্যাংক ফার্স্ট ফান্ড | ২ টাকা | (১.২৮) টাকা | ২৫৬% |
আইএফআইসি ফার্স্ট ফান্ড | ২.৩২ টাকা | (১.৫৮) টাকা | ২৪৭% |
ইবিএল এনআরবি ফান্ড | ১.৯২ টাকা | (১.৩২) টাকা | ২৪৫% |
এবি ব্যাংক ফার্স্ট ফান্ড | ২.৬১ টাকা | (১.৮০) টাকা | ২৪৫% |
ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ফান্ড | ১.৯৩ টাকা | (১.৫৫) টাকা | ২২৫% |
গড় | ২.২৩ টাকা | (১.৪০) টাকা | ২৬১% |