দেশের শেয়ারবাজার তালিকাভুক্ত হওয়ার ১ বছরের মধ্যে রিং সাইন টেক্সটাইলের উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উৎকণ্ঠা বাড়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। তবে উত্তোলিত ১৫০ কোটি টাকার মধ্যে ৯৬ কোটি টাকার বেশি ব্যাংকে নিরাপদে আছে। যাতে করে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে এখনো প্রায় ৫.৮০ টাকা ব্যাংকে নিরাপদে আছে।
গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে কোম্পানিটির উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। কয়েক দফায় বাড়ানো হলেও এখনো তা শুরু করা সম্ভব হয়নি। এর পেছনে কারন হিসেবে বিশ্বব্যাপী মহামারি কোভিড-১৯ এর প্রভাবের কারণে বিদেশী ক্রেতাদের কাছ থেকে ক্রমবর্ধমান আদেশ এবং আমদানিকৃত কাঁচামালের অভাবকে দায়ী করা হচ্ছে।
এই বন্ধ ঘোষণার পরেই কোম্পানিটিতে বিনিয়োগ করা বিনিয়োগকারীদের উৎকণ্ঠা বাড়ে। একইসঙ্গে নড়েচড়ে বসে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কোম্পানিটির উৎপাদন চালুসহ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় পর্ষদ পূণ:গঠন করা হয়েছে। চাকরী থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) এবং সচিবকে।
তবে কোম্পানিটির উৎপাদন চালু করতে কমিশনের পূণ:গঠিত পরিচালনা পর্ষদ। গত ২৬ জানুয়ারি কোম্পানিটির এই পর্ষদ পূণ:গঠন করে বিএসইসি। যে পর্ষদ কোম্পানিটির উৎপাদন চালুতে আশাবাদি এবং দ্রুত হবে বলে মনে করছে।
কোম্পানিটির আইপিও ফান্ডের নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। যাতে করে আইপিওর ৯৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকা নিরাপদে রয়েছে। এছাড়া এরসঙ্গে কয়েক কোটি টাকার সুদজনিত আয় যোগ হয়েছে। তবে সম্প্রতি কোম্পানির গতি ফেরাতে আইপিওর ৪০ কোটি টাকা ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে কমিশন।
বর্তমানে আইপিওর শেয়ারপ্রতি প্রায় ৫.৮০ টাকার সম্পদ নিরাপদে রয়েছে। কারন কোম্পানিটি ১৫ কোটি আইপিও শেয়ার এর উপরে প্রদত্ত ১৫ শতাংশ হিসেবে ২ কোটি ২৫ লাখ বোনাস শেয়ার দেওয়া হয়েছে। এতে আইপিওর শেয়ার সংখ্যা বেড়ে এখন ১৭ কোটি ২৫ লাখ।
এই কোম্পানিটিতে বিএসইসি ৭ জন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগপ্রাপ্তরা হলেন- পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মেজবাহ উদ্দিন (পিআরএল), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ল্যাদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্সের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সগির হোসাইন খন্দকার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং অ্যান্ড সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, জনতা ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. ফোরোজ আলী, পাওয়ার গ্রীডের স্বতন্ত্র পরিচালক ইসতাক আহমেদ শিমুল এবং অ্যাভিয়েশন ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেসের সাবেক মহা ব্যবস্থাপক আব্দুর রাজ্জাক।
এই ৭ জন স্বতন্ত্র পরিচালকের মধ্যে কোম্পানিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মেজবাহ উদ্দিন।
রি সাইনের চলমান মন্দাবস্থা কাটিয়ে তোলার লক্ষ্যে কমিশন পর্ষদ পূণ:গঠন করেছে। এই স্বতন্ত্র পরিচালকদের নেতৃত্বে কোম্পানিটির ব্যবসায় উন্নয়ন হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। যাতে করে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা হবে।