দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত পাট খাতের কোম্পানি নর্দার্ণ জুট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির শেয়ার কারসাজিতে ১৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
বিএসইসি গত ৭ মার্চ অভিযুক্ত ১৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে শাস্তির বিষয়টি চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছে।
কিন্তু ওই ১৫ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান কারসাজির মাধ্যমে মুনাফা করেছে ১৭ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। যা কোম্পানিটির ২০১৮ সালের ১ অক্টোবর থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত শেয়ার কারসাজি তদন্তে গঠিত কমিটির রিপোর্টে প্রমাণ হয় এবং অভিযুক্তদেরকে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
এই শাস্তি প্রদানের আগে সবাইকে শুনানিতে নিজেদের পক্ষে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয় বিএসইসি। কিন্তু তাদের কারও বক্তব্য কমিশনের কাছে বিবেচনাযোগ্য হয়নি বলে অভিযুক্তদেরকে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করে কমিশন।
জানা যায়, নর্দার্ণ জুটের এই কারসাজিতে ৪টি দল সক্রিয় ভূমিকা রাখে। যারা ওইসময় সিরিজ লেনদেনের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য শেয়ার কিনে বাজারে কৃত্রিম চাহিদা তৈরী করে এবং দর বাড়ায়। এই ৪টি দলের নেতৃত্বে ছিলেন আমানত উল্লাহ, সালেক আহমেদ সিদ্দিকি, পরিমল চন্দ্র পাল ও শিউলী পাল।
আমানত উল্লাহর নেতৃত্বে ৮টি বিও হিসাব থেকে নর্দার্ণ জুটের শেয়ার কারসাজিতে ভূমিকা রাখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর থেকে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত। ওই সময়কালীন মোট লেনদেনের মধ্যে ৪ অক্টোবর ২০.৪৮%, ৮ অক্টোবর ১৬.৯৭%, ৯ অক্টোবর ২৮.৪৩%, ১০ অক্টোবর ৩২.০৮%, ১৭ অক্টোবর ১১.৮৪%, ২১ অক্টোবর ১০.০৪%, ২৪ অক্টোবর ২১.৭৫%, ১ নভেম্বর ১৮.৫৫%, ৫ নভেম্বর ১১.২২% ও ৭ নভেম্বর ২৮.০৬% শতাংশ শেয়ার কেনা হয়।
আমানত উল্লাহ, তার সেলফোন নাম্বার ও ইমেইল অ্যাড্রেসের সন্দীপ কর্পোরেশন ও হাল ইন্টারন্যাশনাল, আমানত উল্লাহর কন্যা সেতারা বেগম, হাল ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারম্যানের ভাই প্রশান্ত কুমার হালদার (পিকে হালদার) কারসাজির মাধ্যমে ১ কোটি ১৬ লাখ ৬৪ হাজার টাকার রিয়েলাইজড ও ১০ কোটি ৮০ লাখ ৬৬ হাজার টাকার আনরিয়েলাইজড গেইন করে।
এরমধ্যে আমানত উল্লাহ ২টি বিও থেকে ৩৬ লাখ ৪০ হাজার টাকার রিয়েলাইজড ও ৩ কোটি ৩৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকার আনরিয়েলাইজড, সন্দীপ কর্পোরেশন ৩টি বিও থেকে ৩৩ লাখ ৬ হাজার টাকার রিয়েলাইজড ও ৬ কোটি ৩৭ লাখ টাকার আনরিয়েলাইজড, সেতারা বেগম ৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকার রিয়েলাইজড ও ৪ লাখ ১২ হাজার টাকার আনরিয়েলাইডজ, হাল ইন্টারন্যাশনাল ১৫ লাখ ৮৭ হাজার টাকার রিয়েলাইজড ও ১ কোটি ১ লাখ ৫৮ হাজার টাকার আনরিয়েলা্ইজড এবং প্রশান্ত কুমার হালদার ২৫ লাখ ৬৯ হাজার টাকার রিয়েলাইজড গেইন করে।
সালেক আহমেদ ও সহযোগি মনির হোসেন মিলে নর্দার্ণ জুটে কারসাজি করে ৬৬ লাখ ৬৩ হাজার টাকা গেইন করে। এরমধ্যে রিয়েলাইজড গেইন ৩৭ লাখ ৯০ হাজার এবং আনরিয়েলাজেইড ২৮ লাখ ৭৩ হাজার টাকা।