1. [email protected] : ইকোনোমিক বিডি প্রতিবেদক : ইকোনোমিক বিডি প্রতিবেদক
  2. [email protected] : ইকোনোমিক বিডি : ইকোনোমিক বিডি
মন্দায়ও শেয়ারবাজারে কারসাজি, অগ্রগতি নেই তদন্ত কমিটির
বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:১১ অপরাহ্ন

মন্দায়ও শেয়ারবাজারে কারসাজি, অগ্রগতি নেই তদন্ত কমিটির

  • পোস্ট হয়েছে : মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০২৫

বিগত সরকারের দীর্ঘ ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে দেশের বিভিন্ন খাতে সর্বোচ্চ দুর্নীতি হয়েছে। বাদ যায়নি দেশের শেয়ারবাজারও। কারসাজি আর অনিয়মের মাধ্যমে শেয়ার দর বাড়িয়ে এখাত থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছে কারসাজিকারিরা।

সরকার পতনের পর নতুন সরকার ক্ষমতায় এসে বিভিন্ন খাতের মতো শেয়ারবাজারের দুর্নীতি আর অনিয়ম খুঁজে বের করতে গঠন করেছে কমিটি। সময় বেঁধে দেয়া হয় প্রতিবেদন জমা দিতে। তবে কয়েক দফা সময় বাড়িয়েও এখন পর্যন্ত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি গঠিত কমিটি।

জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে অস্থিরতায় থাকা দেশের শেয়ারবাজারকে স্থিতিশীলতায় ফিরাতে বেক্সিমকোর দুটি কোম্পানিসহ মোট ১২টি কোম্পানির অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বিএসইসি পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষ অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটি গঠন করে। সেই কমিটিকে প্রথম ধাপে ৬০ দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হলেও তদন্ত প্রতিবেদনের কোনো অগ্রগতি হয়নি। যা বাজার সংশ্লিষ্টসহ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের টেরা রিসোর্সেস ইন্টারন্যাশনালের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং কনসালট্যান্ট জিয়া উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের কমিটিতে রয়েছেন ফিন্যান্সিয়াল সেক্টর স্পেশালিস্ট ইয়াওয়ার সাইদ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সদস্য মো. শফিকুর রহমান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মো. জিশান হায়দার ও বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মো. আনোয়ারুল ইসলাম।

শীর্ষস্থানীয় শিল্পগ্রুপ বেক্সিমকো গ্রিন-সুকুক আল ইসতিসনা, আইএফআইসি গ্রানটিড শেরপুর টাউনশিপ গ্রিন জিরো কুপন বন্ড, বেস্ট হোল্ডিংস লিমিটেড, সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস লিমিটেড, ফরচুন সুজ লিমিটেড, আল-আমিন কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ, রিং শাইন টেক্সটাইল লিমিটেড, ন্যাশনাল ফাইন্যান্স, একমি পেস্টিসাইডস লিমিটেড, কোয়েস্ট বিডিসি লিমিটেড (পূর্বে পদ্মা প্রিন্টার্স অ্যান্ড কালারস লিমিটেড), কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং এমারেল্ড ওয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড শেয়ার অধিগ্রহণ/হস্তান্তর, মূল্য সংবেদনশীল তথ্য সরবরাহ, সেকেন্ডারি মার্কেটে অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি এবং এ-সংক্রান্ত শেয়ারবাজারের যাবতীয় অনিয়ম ও কারসাজির বিষয়ে অনুসন্ধান ও তদন্ত করতে বলা হয়।

গত বছরের সেপ্টেম্বর প্রথম দিন বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় এই তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯-এর সেকশন ২১ এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৯৩-এর ধারা ১৭ক-এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এই ‘অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটি’ গঠিত হয়।

২০১০ সালে শেয়ারবাজারের ধসের পেছনে দায়ীদের বের করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ইব্রাহিম খালেদকে প্রধান করে যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল তা প্রকাশ করা হয়নি, সুপারিশও কার্যকর করা হয়নি। এবারের অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে কি না—এমন শঙ্কা রয়েছে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টদের। এ বিষয়ে কমিটি গঠনের পরদিন অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বলেছিলেন, চূড়ান্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর কমিশন তা প্রকাশ করবে।

তদন্ত কমিটির প্রধান জিয়া উদ্দিন আহমেদ শেয়ারবাজারের সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানি ভিআইপিবির চেয়ারম্যান ও পরিচালক। এ কোম্পানির বিভিন্ন বিষয়ে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। তিনি তদন্ত কমিটিতে থাকায় তদন্ত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ হবে কি না—তা নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন। এ প্রসঙ্গে জিয়া উদ্দিন বলেছিলেন, মালিকানার দিক দিয়ে আমরা প্রতিষ্ঠান থেকে মুনাফা নিই, এটাই আমাদের চাওয়া। অনিয়ম হয় ব্যবস্থাপনাগত দিক দিয়ে। আমরা সততা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করব। আমাদের ওপর আস্থা রাখতে পারেন, প্রতিবেদন পক্ষপাতদুষ্ট হবে না।

১৯৯৬ ও ২০১০ সালের শেয়ারবাজার ধসের পর গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্য ছিলেন ইয়াওয়ার সাইদ। সেই কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখেনি। তিনি এবারের অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটিতেও রয়েছেন। দেশের প্রথম বেসরকারি সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানি এইমস বাংলাদেশের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক তিনি। শেয়ারবাজারের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করার কথা তুলে ধরে ইয়াওয়ার সাইদ বলেছিলেন, শেয়ারবাজারে মিউচ্যুয়াল ফান্ড চালু হওয়ার পর ২৫ বছরে ২৫ কদমও এগোয়নি। কেন এটি হলো, আমরা তাও বের করব।

তদন্ত কমিটির অগ্রগতি প্রসঙ্গে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, এই তদন্ত চলমান আছে। তদন্ত কমিটি সময় পার করেছে। প্রথমে ৬০ দিন সময় ছিল, এরপর এক মাস করে চার দফায় সময় বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে কমিটিকে।

এ বিষয়ে বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, এই রকম কমিটি করার চাইতে না করাই ভালো। পাঁচ মাসের মধ্যেও যদি রিপোর্ট দিতে না পারে, তাহলে এমন কমিটির প্রয়োজনীয়তা দেখছি না।

শেয়ার দিয়ে সাথেই থাকুন..

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ