বিদায়ী সপ্তাহে বড় পতনে শেষ হয়েছে পুঁজিবাজারের লেনদেন । সপ্তাহটিতে চারদিন লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে একদিন সামান্য উত্থানে থাকলেও বাকি তিনদিন ছিল বড় পতনে। সপ্তাহজুড়েই সিংহভাগ মৌলভিত্তির শেয়ারের পতন হয়েছে। কিন্তু পতনের বাজারেও লাগামহীন ছিল দুর্বল ও ঝুঁকিপূর্ণ কোম্পানির শেয়ার দর। এর মধ্যে ৭ কোম্পানির শেয়ার ছিল বেশি লাগামীন। কোম্পানিগুলো হলো- আজিজ পাইপস, রহিমা ফুড, দেশ গার্মেন্টস, সোনালী আঁশ, স্টাইলক্রাপ্ট, লিগ্যাসি ফুটওয়্যার ও আনলিমা ইয়ার্ন।
কোম্পানিগুলোর কর্তৃপক্ষ বলছে, বিনা কারণেই কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর বাড়ছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এমনিতেই কোম্পানিগুলোর শেয়ার বড় ঝুঁকিপূর্ণ। মুনাফা ও ডিভিডেন্ডের দিক থেকে দুর্বল প্রকৃতির। তাই কোম্পানিগুলোর শেয়ার থেকে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের দুরে থাকা বাঞ্চনীয়। অন্যথায় তাদের বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হতে পারে।
কোম্পানিগুলোর মধ্যে আজিজ পাইপস, দেশ গার্মেন্টস ও স্টাইলক্রাপ্ট লোকসানি কোম্পানি। আর রহিমা ফুড, সোনালী আঁশ, লিগ্যাসি ফুটওয়্যার ও আনলিমা ইয়ার্ন ঝুঁকিপূর্ণ তালিকার শীর্ষ বাসিন্দা।
লোকসানের কারণে আজিজ পাইপস, দেশ গার্মেন্টস ও স্টাইলক্রাপ্টের মুল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) নেগেটিভ। নেগেটিভ পিইর কারণে কোম্পানিগুলো ডেঞ্জারজোনে অবস্থান করছে।
অন্যদিকে, রহিমা ফুড, দেশ গার্মেন্টস, সোনালী আঁশ, লিগ্যাসি ফুটওয়্যার ও আনলিমা ইয়ার্ন ঝুঁকিপূর্ণ তালিকার সর্বোচ্চ শীর্ষ অবস্থানের শেয়ার। কোম্পানিগুলোর মধ্যে রহিমা ফুডের পিই ১০৬৬, সোনালী আঁশের ১০২৬, লিগ্যাসি ফুটওয়্যারের ৩৮৩ এবং আনলিমা ইয়ার্নের ১৩৫।
মুনাফা ও ডিভিডেন্ডের দিক থেকে কোম্পনিগুলোর ইতিহাস একেবারেই সুখকর নয়। স্বল্প মূলধনীর তকমা থাকার কারণেই কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর বছরজুড়ে আকাশচুম্বী থাকে। এখনতো দর উল্লম্ফনের কারণে ধরাছোঁয়ার বাইরে। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যেকোন সময় শেয়ারগুলোর বড় পতন নেমে আসতে পারে। তখন বিনিয়োগকারীরা দিকবিদিকশুন্য হয়ে পড়বে।
কোম্পানিগুলোর মধ্যে রহিমা ফুড গত পাঁচ বছরের মধ্যে বিনিয়োগকারীদের কোন ডিভিডেন্ড দেয়নি। গত বছর লিগ্যাসি ফুটওয়্যারও ডিভিডেন্ড থেকে বিনিয়োগকারীদের বঞ্চিত করেছে। গতবছর ডিভিডেন্ড দিয়েছে আজিজ পাইপস ১ শতাংশ ক্যাশ, আনলিমা ইয়ার্ন ২ শতাংশ ক্যাশ, দেশ গার্মেন্টস ৩ শতাংশ বোনাস ও সোনালী আঁশ ১০ শতাংশ ক্যাশ।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর কোন কারণ ছাড়াই বাড়ছে। শেয়ারগুলোতে কারসাজির আলামত স্পষ্ঠ। নিয়ন্ত্রক সংস্থার এখনই শক্ত মনিটরিং দরকার। অন্যথায় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা গুজবের কবরে পড়ে বড় ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন।