গত বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে লভ্যাংশ ঘোষণার খবর দিয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চার কোম্পানি। কোম্পানিগেুলো হলো-রিলায়েন্স ইন্সুরেন্স, ইউনাইটেড ইন্সুরেন্স, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স ও শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার লেনদেন শুরুর আগেই ডিএসইর ওয়েবসাইটে কোম্পানিগুরোর লভ্যাংশসংক্রান্ত খবর প্রচার হয়। ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য কোম্পানিগুলো লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে এদিন দর হারিয়েছে দুটি, একটির দর অপরিবর্তিত ছিল এবং একটির দর বেড়েছে যৎসামান্য।
আগের দিন প্রতিষ্ঠান চারটির পরিচালনা পর্ষদ লভ্যাংশের এই ঘোষণা দেয়। এর মধ্যে শাহজালাল ব্যাংক আগের বছরের চেয়ে বেশি আর বাকি তিনটি সমান লভ্যাংশ দেয়ার প্রস্তাব করে।
কিন্তু বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ার বিষয়টি দেখা যায় লেনদেনে। শাহজালাল ব্যাংকের শেয়ার দর আগের দিনের সমান থাকে। লংকাবাংলার দর আগের দিনের চেয়ে বেড়েছে ২০ পয়সা। তবে দর হারিয়েছে দুই বিমা কোম্পানির।
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক : কোম্পানিটি ৭ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। আগের বছর কোম্পানিটি ৫ শতাংশ বোনাস ও ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।
সমাপ্ত হিসাব বছরে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ৯৫ পয়সা, যা আগের বছরের তুলনায় ২৫ পয়সা বেশি।
তবে শেয়ারপ্রতি আয় ও লভ্যাংশ বৃদ্ধির কোনো প্রভাব পড়েনি কোম্পানিটির শেয়ার দরে। আগের দিনের সমান দাম ২১ টাকা ২০ পয়সায় থাকে বৃহস্পতিবার। যদিও শেয়ারটির দর এক পর্যায়ে আগের দিনের থেকে কমে যায়।
লংকাবাংলা ফাইন্যান্স : কোম্পানিটি ১২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। মহামারির বছরেও কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি আয় করেছে গত বছরের প্রায় দ্বিগুণ।
২০২০ হিসাব বছরে লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের শেয়ারপ্রতি সমন্বিত আয় (ইপিএস) দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৮১ পয়সা। যেখানে আগের বছরে পুনর্মূল্যায়িত ইপিএস ছিল ৯৪ পয়সা।
গত বছর কোম্পানিটি শেয়ারধারীদের ৭ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার দিয়েছিল।
তবে বিনিয়োগকারীরা এই ঘোষণায় খুশি হয়নি, সেটি বোঝা গেছে শেয়ারদরে।
কোম্পানির শেয়ারদর আগের দিনের তুলনায় ২০ পয়সা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬ টাকা ৩০ পয়সায়। যদিও একপর্যায়ে শেয়ারদর কমে দাঁড়িয়েছিল ৩৫ টাকা ৩০ পয়সায়।
রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স : বিমা খাতের কোম্পানি রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। গত চার বছর ধরেই কোম্পানিটি ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়ে আসছে। এর মধ্যে তিন বছর শেয়ারপ্রতি দেড় টাকা নগদ ও ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার দিয়ে এলেও ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সমাপ্ত অর্থবছরে কেবল নগদ লভ্যাংশ দেয়া হয়েছিল এবারের মতোই। তারপরও দর হারিয়েছে এই কোম্পানিটি।
আগের দিন ৫৮ টাকা ৫০ পয়সায় দিন শেষ করা কোম্পানিটি লভ্যাংশের প্রস্তাবে দর হারিয়েছে ১ টাকা ৬০ পয়সা।
এদিন সর্বোচ্চ ৫৯ টাকা উঠলেও দিন শেষে কমে দাঁড়িয়েছে ৫৬ টাকা ৯০ পয়সায়।
ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স : সবচেয়ে বেশি হতাশ করল ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স। বিমা খাতের এ কোম্পানি ১১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর কোম্পানিটির শেয়ারদর কমেছে ৬.১৫ শতাংশ।
দিনের সর্বোচ্চ ৪৪ টাকা ৯০ পয়সা দর উঠলেও দিন শেষে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪২ টাকা ৭০ পয়সায়।
এই কোম্পানিটি গত বছরের তুলনায় আয় করেছে বেশি। তবে লভ্যাংশ গত বছরের সমানই রেখেছে।
গত ডিসেম্বরে সমাপ্ত অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি ২ টাকা ৪ পয়সা মুনাফা করেছে কোম্পানিটি। গত বছর মুনাফা ছিল ১ টাকা ৯৫ পয়সা।