পুঁজিবাজারে কারসাজি রোধে সার্ভেইল্যান্স সিস্টেম বা নজড়দারি জোরদার করার উদ্যোগ নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কমিশন বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় শেয়ারবাজারের সেকেন্ডারি মার্কেটে কারসাজিরোধ করতে চায়। যাতে কোন সাধারন বিনিয়োগকারী কারসাজি চক্রের ফাদেঁ পরে সর্বোস্ব না হারায়। এজন্য বিএসইসিসহ প্রাইমারি রেগুলেটরদের সার্ভেইল্যান্স সিস্টেম বা নজড়দারি জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একইসঙ্গে দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ ও সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) সার্ভেইল্যান্সকে গতিশীল করার নির্দেশনা দিয়েছে। যা আজকের সভায় উপস্থিত সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং এলক্ষ্যে কাজ শুরু করে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
এলক্ষ্যে মঙ্গলবার (০৯ মার্চ) বিএসইসির কার্যালয়ে কমিশনার ড. শেখ সামসুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ, সিডিবিএল ও সেন্ট্রাল কাউন্টারপার্টি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিসিবিএল) কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সভা আয়োজিত হয়েছে।
সভার বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহি পরিচালক ও মূখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, বাজারে সার্ভেইল্যান্স শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আজ উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ, সিডিবিএল ও সিসিবিএলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কমিশনের বৈঠক হয়েছে। এতে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জকে সার্ভেইল্যান্স জোরদার করার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য সিডিবিএলকে সার্ভেইল্যান্স চালু করার জন্য বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে একটি ইউনিক সফটওয়্যার চালুর বিষয়ে আজ আলোচনা হয়েছে। যে সফটওয়্যারে চাইলেই ব্রোকারেজ হাউজগুলো সমন্বয় বা সংশোধন করতে পারবে না। যাতে করে যেকোন ধরনের ভুল বা অনিয়ম করে থাকলে, তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে। কিন্তু বর্তমানে একেক ব্রোকারেজ হাউজ একেক রকম সফটওয়্যার ব্যবহার করে। একইসঙ্গে তারা চাইলেই রেগুলেটরদের তদন্তের আগে সমন্বয় বা সংশোধন করে নিচ্ছে এবং ভুল বা অনিয়ম মুছে ফেলছে। এতে করে সঠিক তথ্য আড়ালে চলে যায়।
আজকের সভায় বিএসইসির পরিচালক শেখ মাহবুবুর রহমানকে আহ্বায়ক করে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ, সিডিবিএল ও সিসিবিএলের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান বিএসইসির মূখপাত্র। যে কমিটি প্রতি মাসে ২ বার সার্ভেইল্যান্স নিয়ে সভা করবে। যা প্রতি মাসের দ্বিতীয় ও চতুর্থ সপ্তাহের বুধবার অনুষ্ঠিত হবে।
এই কমিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নজড় রাখবে বলে জানান রেজাউল করিম। তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ারবাজার নিয়ে অনেকে বিভিন্ন ধরনের গুজব ছড়ায়। এর মাধ্যমে একটি পক্ষ কৃত্রিমভাবে ফাঁয়দা হাসিলের চেষ্টা করে। এই সমস্যা কাটিয়ে তুলতে কমিটি নজড়দারি করবে। একইসঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করবে।
রেজাউল করিম বলেন, ইনসাইডার ট্রেডিং কমানোর লক্ষ্যে ডাটাবেজ তৈরীর অগ্রগতি নিয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে। স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর উদ্যোক্তা/পরিচালক ও কর্মকর্তা-কর্মচারিদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এছাড়া ওটিসি মার্কেটে থাকা সব কোম্পানির ওয়েবসাইট তৈরী নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সভায় বিএসইসি, ডিএসই ও সিএসইর সার্ভেইল্যান্স বিভাগের সব কর্মকর্তা, ডিএসই ও সিএসইর প্রধান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা (সিআরও) এবং সিডিবিএল ও সিসিবিএলের আইটি বিভাগের প্রধান উপস্থিত ছিলেন।