আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশের ব্যাংক ও আর্থিক খাত সংস্কারে আবারও সময় বেঁধে দিয়েছে। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া অর্থনৈতিক শ্বেতপত্র প্রকাশ এবং সংস্কারমূলক উদ্যোগগুলোর প্রশংসা করে তাতে সমর্থন জানিয়েছে সংস্থাটি।
অর্থবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংক ও আর্থিক খাতের নীতি এবং কাঠামোগত সংস্কারগুলো আগামী বছরের জুনের মধ্যে শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এসব সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করতে অতিরিক্ত তহবিলের প্রয়োজন হলে তাও দিতে সম্মত হয়েছে সংস্থাটি।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংকের অনিয়ম-দুর্নীতিসংক্রান্ত অভিযুক্ত বিষয়গুলোর মীমাংসা করা এবং এ-সংক্রান্ত নীতিগুলোর প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করতে জোর সুপারিশ করেছে আইএমএফ। বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা ও ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ কাজে পরিচালকদের হস্তক্ষেপ বন্ধে কঠোর নীতি করার সুপারিশ করেছে সংস্থাটি।
অন্যদিকে, আর্থিক খাতের সংস্কারে নেওয়া সরকারের পদক্ষেপগুলোর বিস্তারিত ২১-২৬ অক্টোবর ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠেয় বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক সভায় বিস্তারিত তুলে ধরবে বাংলাদেশ।
গত ২৪ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর আইএমএফের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা সফর করে। এবারের সফরটি অন্যান্য বছরের তুলনায় ছিল ভিন্ন রকম। যেহেতু একটি নতুন সরকার দেশ পরিচালনায় দায়িত্বে রয়েছে, এ সরকারের রাজনৈতিক কোনো এজেন্ডাও নেই। এ ছাড়া দেশ সংস্কারের উদ্দেশ্যে বিশেষভাবে কাজ করছে। এজন্য বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আইএমএফের প্রত্যাশাও অনেক বেশি।
সফরের সময়ে আইএমএফ’র কর্মকর্তারা সরকারের নেওয়া বিভিন্ন সংস্কার কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করেছেন। ঢাকা ছাড়ার প্রাক্কালে এসব পরামর্শ ও সময়সীমার কথা বলে গেছেন সরকারকে।
প্রতিনিধি দলটি অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর, অর্থনীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয়র সঙ্গে বৈঠকের সময় তাদের এসব প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন।
আইএমএফ ৪.৭০ বিলিয়ন ডলারের ঋণ কর্মসূচির আওতায় পরবর্তী কিস্তি পেতে বাংলাদেশকে যে ৩৩টি শর্ত পূরণ দিয়েছিল সেগুলোর কথাও বলে গেছে প্রতিনিধি দলটি। রিজার্ভ বৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতির চাপ কমিয়ে আনা, রাজস্ব খাতের সংস্কার ও রাজস্ব বৃদ্ধি, ব্যাংকিং খাতে সুশাসনের অভাব-এই চারটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয় সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আইএমএফ।