দেশের শেয়ারবাজারের ট্রেকহোল্ডারদের বা ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে প্রতিদিন সমন্বিত গ্রাহক হিসাব (সিসিএ) জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আসছে। বর্তমানে তাদেরকে প্রতিমাসে একবার এই হিসেব জমা দিতে হয়।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কাছে এই বিষয়ে মতমত জানতে চিঠি দিয়েছে বিএসইসি। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই বিষয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) মতামত জানাতে নির্দেশনা দিয়েছে।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মার্কেট অ্যান্ড ইন্টারমিডিয়ারিস অ্যাফেয়ার্স ডিভিশনে(এমআইএডি) সহকারি পরিচালক আব্দুল বাতেন ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেন।
বিএসইসি ও ডিএসই সূত্র মতে, বর্তমানে নতুন পুরাতন মিলে ৩০৯টি ট্রেকহোল্ডার রয়েছে। সিসিবিএ একাউন্টে অনেক ট্রেকহোল্ডার বিভিন্ন সময়ে অনেক অনিয়ম করেছে। অ্যাকাউন্টগুলো সঠিকভাবে পরিচালনা করছে না প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে বড় ধরণের অনিয়ম হয়েছে এবং গ্রাহকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ডিএসই জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি ২০২০ সালের ৯ জুলাই ১২টি, ১৬ জুলাই ২টি, ২৫ আগস্ট ২টি এবং ৬ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত ৮টি ব্রোকারেজ হাউস পরিদর্শন করে। এগুলোতে গ্রাহকদের ১০৭ কোটি টাকা জমা থাকার কথা থাকলেও পাওয়া যায় ৪৯ কোটি টাকা। এতে ঘাটতি দাঁড়ায় ৫৮ কোটি টাকা।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, অ্যাপেক্স ইনভেস্টমেন্ট ২৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা, সিনহা সিকিউরিটিজ ৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা, আল মুনতাহা ট্রেডিং কোম্পানি ৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকা, এক্সপো ট্রেডার্স ৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, জয়তুন সিকিউরিটিজ ২ কোটি ৭০ লাখ, মিরর ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট ২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, এরিনা সিকিউরিটিজ ২ কোটি ১০ লাখ টাকা, এম সিকিউরিটিজ ২ কোটি ৯ লাখ টাকা, সাদ সিকিউরিটিজ ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা এবং শ্যামল ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট গ্রাহকের ৮২ লাখ ৫০ হাজার টাকা সরিয়েছে। এরপর ডিএসইর মনিটরিং বাড়ানোর ফলে সেই টাকা অনেক প্রতিষ্ঠানই সিসিএ হিসেবে জমা করেছে।
এছাড়া বিএসইসির এক নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রাহকের সিসিএ থেকে ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ ১০৫ কোটি টাকা সরিয়েছে। সম্প্রতি মশিউর সিকিউরিটিজের বিরুদ্ধে ১৬১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা গ্রাহকদের টাকা আত্মসাত করে তালা দিয়ে পালিয়েছে।
গ্রাহকদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য বিএসইসি এ পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে এ পদক্ষেপ ট্রেকহোল্ডারদের উপর বাড়তি চাপ পড়বে। কিন্তু তারপরও গ্রাহকদের স্বার্থে এবং শেয়ারবাজারের স্বচ্চতার স্বার্থে এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন জরুরী বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।