আবারও টানা পতনের বৃত্তে দেশের শেয়ারবাজার। আগের সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববার ইতিবাচক প্রবণতায় ফিরে ছিল শেয়ারবাজার। তারপর থেকে চলছে টানা পতন। এ সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রবিবার প্রধান শেয়ারবাজার সূচকের পতন হয়েছিল ৪৯ পয়েন্টের বেশি। গতকাল দ্বিতীয় কর্মদিবসেও পতন হয়েছে ৪৯ পয়েন্টের বেশি।
এতে দেখা যায়, আগের সপ্তাহের সোমবার থেকে টানা ৬ কর্মদিবসে ডিএসইর সূচক নেমে গেল ২০০ পয়েন্ট। পতনের এই ডাবল সেঞ্চুরির জন্য বিনিয়োগকারীরা মার্কেট মেকারদের দায়ি করছেন।
বিনিয়োগকারীরা বলছেন, বাজারের সন্ধিক্ষণে মার্কেট মেকাররা বরাবরের মতো এখনো হাত গুটিয়ে বসে আছেন। তারা অভিযোগ করছেন, যেখানে বাজারকে তাদের সাপোর্ট দেওয়ার কথা, সেখানে বাজার কিছুটা ছন্দে ফিরলেই তারা সেল প্রেসার দিয়ে বাজারের উত্থান রোধ করে দিচ্ছেন।
বাজার সংশ্লিষ্টরাও একই রকম অভিযোগ তুলে বলছেন, বাজার যখন উত্থানের ধারায় ফিরে, তখন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীসহ বাজারের ভুইফোঁড় সংগঠনের নেতাদের লাফালাফি দেখা যায়। কিন্তু বাজার যখন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করে, তখন তারা লাপাত্তা হয়ে যান। তখন তাদের ভ্রুকুটিও দেখা যায় না।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, আগেরদিন বেশ ইতিবাচক প্রবণতায় উভয় বাজারের লেনদেন শুরু হয়। দিনের প্রথমভাগে ডিএসইর সূচক ৬৫ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন হতে দেখা যায়। কিন্তু শেষভাগে বড়দের সেল প্রেসারে সূচকের পতন হয় ৪৯ পয়েন্টের বেশি।
আজ সোমবারও লেনদেনের শুরুতে বাজার ইতিবাচক ধারায় টার্ন নেওয়ার চেষ্টা চালায়। কিন্তু লেনদেনের শুরুতে সেল প্রেসারের তোড়ে বাজার অনিবার্যভাবে নেতিবাচক ধারায় টার্ন নেয়। এরপর কয়েকবার ইতিবাচক ধারায় ফেরার চেষ্টা করলেও ফিরতে পারেনি। দিনের শেষভাগে সেল প্রেসার আরও বেড়ে গেলে বড় পতনের মুখে পড়ে যায় উভয় শেয়ারবাজার।
সোমবারের বাজার পর্যালোচনা
সোমবার (০৯ সেপ্টেম্বর) ডিএসইর প্রধান সূচক ‘ডিএসইএক্স’ ৪৯.৭৬ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৬২৯ পয়েন্টে।
ডিএসইর অপর সূচক ‘ডিএসইএস’ ৬.২৭ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২১৫ পয়েন্ট এবং ‘ডিএস-৩০’ সূচক ৭.৬৭ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৯২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের সপ্তাহের সোমবার ডিএসইর সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট, মঙ্গলবার ১৮ পয়েন্ট, বুধবার ৪৬ পয়েন্ট, বৃহস্পতিবার ১০ পয়েন্ট এবং গতকাল রোববার ৪৯ পয়েন্ট কমেছে। অর্থাৎ গত ৬ কর্মদিবসের টানা পতনে সূচক কমেছে ২০০ পয়েন্ট।
এদিন সোমবার ডিএসইতে ৬২১ কোটি ৩৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৬৭৮ কোটি ৮২ লাখ টাকা। আজ লেনদেন কমেছে ৫৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকার বা ৮.৪৬ শতাংশ।
ডিএসইতে আজ লেনদেন হওয়া ৩৯৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৬৭টির বা ১৬.৭৯ শতাংশের, কমেছে ৩০৭টির বা ৭৬.৯৪ শতাংশের এবং পরিবর্তন হয়নি ২৫টির বা ৬.২৭ শতাংশের।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইতে আজ ৭ কোটি ৪১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২২৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৩৯টির, কমেছে ১৭০টির এবং পরিবর্তন হয়নি ১৯টির।
এদিন সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৭৩ পয়েন্ট কমে দাঁডিয়েছে ১৬ হাজার ৬৫ পয়েন্টে।