২০২২ সালের শুরু থেকে দেশের শেয়ারবাজার পতনের বৃত্তে বন্দী। দীর্ঘে আড়াই বছরের বেশি সময়ে বাজার থেমে থেমে কেবল পতনের ধারায় ছিল। ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেও ঘুরতে পারেনি।
তথ্য বিশ্লেষেণে দেখা যায়, ২০২২ সালের ০১ জানুয়ারি দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ছিল ৭ হাজার ১০৫ পয়েন্ট। যা শেখ হাসিনার পতনের শেষ কর্মদিবসে এসে দাঁড়ায় ৫ হাজার ২২৯ পয়েন্ট। সূচক কমেছে ১ হাজার ৮৭৬ পয়েন্ট। যদিও এই সময়ে ৩০টি বেশি নতুন কোম্পানির শেয়ার সূচকে যোগ হয়েছে। এগুলো বাদ দিলে সূচকের পতন ২ হাজার পয়েন্ট ছাড়িয়ে যাবে।
বিনিয়োগকারীরা আশা করেছিল, সরকারের পট পরিবর্তনের পর বাজার ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়াবে। অন্তবর্তী সরকার গঠনের পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে প্রত্যাশা ছড়িয়ে বাজার ঘুরেও দাঁড়িয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর প্রথম চার কর্মদিবসে ডিএসইর প্রধান সূচক বেড়েৃছিল ৭৮৬ পয়েন্ট। এতে বিনিয়োগকারীরা নতুন করে স্বপ্ন বুনতেও শুরু করেছিল।
কিন্তু চার কর্মদিবস বিনিয়োগকারীদের ঝলক দেখিয়ে বাজার আবারও অস্থিরতার বৃত্তে হাঁটতে থাকে। প্রতিদিন বিনিয়োগকারীদের লোকসান বাড়তে থাকে। অন্তবর্তী সরকারের আলোকিত সময়েও বাজার কেন ধুঁকছে, বাজার সংশ্লিষ্টরা বলতে পারছেন না।
এদিকে, নেতৃত্বশুন্য শেয়ারবাজারে নতুন নেতৃত্ব এসেছে। দীর্ঘদিন যাবত শেয়ারবাজার ছিল অভিভাবকহীন। গতকাল সোমবার শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নতুন চেয়ারম্যান যোগদান করেছেন। বিনিয়োগকারীরা আশা করেছিল, নতুন চেয়ারম্যান যোগদান করার পর বাজার ইতিবাচক ধারায় ফিরবে। কিন্তু আজ আওয়ামী ঘরোনার কিছু শেয়ারে ভালো ফোর্স সেল হয়েছে। সেল প্রেসারে দিনের প্রথম ভাগে বাজার ইতিবাচক থাকলেও মধ্যভাগ থেকে নেতিবাচক ধারায় টার্ন নেয়। যা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। ফলে শেয়ারবাজারে অভিভাবক ফিরলেও বাজারের দৈন্যদশা আগের মতোই রয়ে গেছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আজ নতুন চেয়ারম্যানের প্রথম কর্মদিবস। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা এবং বড় বিনিয়োগকারীরা চাইলে বাজারকে ইতিবাচক রাখতে পারতো। কিন্তু তারা বরাবরের মতো আজও গা-ছাড়া ভাবে ছিল। যে কারণে বাজার ক্রমাগত পতনের ধারায় ছিল। শেষ বেলায়ও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।
মঙ্গলবারের বাজার পর্যালোচনা
আজ ডিএসইর প্রধান সূচক ‘ডিএসইএক্স’ ৬০.১৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৭১৫ পয়েন্টে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ‘ডিএসইএস’ ১৬.৪৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২২৯ পয়েন্ট এবং ‘ডিএস-৩০’ সূচক ২৭.৮৬ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৯৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এদিন ডিএসইতে ৫১৮ কোটি ৬১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৮০৭ কোটি ১৫ লাখ টাকার।
আজ ডিএসইতে মোট ৩৯৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। যার মধ্যে দর বেড়েছে ৬৪টির, কমেছে ৩০১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩২টির।