1. [email protected] : ইকোনোমিক বিডি প্রতিবেদক : ইকোনোমিক বিডি প্রতিবেদক
  2. [email protected] : ইকোনোমিক বিডি : ইকোনোমিক বিডি
হতাশার মধ্যে কাটল শেয়ারবাজারের আরও একটি মাস ‘মে মাস’
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০২:০১ পূর্বাহ্ন

হতাশার মধ্যে কাটল শেয়ারবাজারের আরও একটি মাস ‘মে মাস’

  • পোস্ট হয়েছে : শনিবার, ১ জুন, ২০২৪
dse loser

শেয়ারবাজারে আরও একটি মে মাস কাটল হতাশায়। বিনিয়োগকারীদের জন্য মাসটি ছিল খুবই খারাপ একটি মাস। ২০১৮ সালের পর এ রকম খারাপ মে মাস আর দেখতে হয়নি বিনিয়োগকারীদের। সেই হিসাবে শুধু মে মাস বিবেচনায় গত ছয় বছরের মধ্যে চলতি বছরের মে মাসটিই ছিল সবচেয়ে সংকটময়।

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) চলতি বছরের মে মাসের ১৯ কার্যদিবসের মধ্যে ১৪ দিনই বাজারে শেয়ারের দাম কমেছে। দাম বেড়েছে মাত্র ৫ দিন। এর আগে সর্বশেষ ২০১৮ সালের মে মাসে ২১ কার্যদিবসের মধ্যে ১৮ দিনই বাজারে দরপতন হয়েছিল, দাম বেড়েছিল মাত্র ৩ দিন। এ কারণে মে মাসকে শেয়ারবাজারের জন্য ‘খারাপ মাস’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মে মাসের ১৯ কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩৩৩ পয়েন্ট বা প্রায় সাড়ে ৬ শতাংশ কমেছে। মে মাসের শুরুতে ডিএসইএক্স সূচকটি ছিল ৫ হাজার ৫৮৫ পয়েন্টের অবস্থানে। গত বৃহস্পতিবার সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইএক্স সূচকটি কমে দাঁড়ায় ৫ হাজার ২৫২ পয়েন্টে।

শেয়ারবাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রতিবছর বাজেট সামনে রেখে মে মাসে শেয়ারবাজারে কিছুটা অস্থিরতা বিরাজ করে। বাজেটে শেয়ারবাজারের জন্য কী ধরনের পদক্ষেপ থাকবে—এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় বাজেটের আগের মাস হিসেবে মে মাসে এ অস্থিরতা বিরাজ করে। তবে গত সাত বছরের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, ২০১৮ সালের পর এবারই বাজেটের আগের মাসে সবচেয়ে বেশি সংকটে ছিল শেয়ারবাজার। এরপর ২০১৯ সালের মে মাসে মোট ২১ দিন লেনদেন হয়েছিল বাজারে। তার মধ্যে সূচক কমেছে ৯ দিন আর সূচকের উত্থান ঘটে ১০ দিন। বাকি দুই দিন সূচক অপরিবর্তিত ছিল। ২০২০ সালে করোনার কারণে পুরো মে মাস শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধ ছিল। ২০২১ সালের মে মাসের ১৯ কার্যদিবসের মধ্যে ১৪দিনই সূচক বেড়েছে। কমেছে মাত্র ৫দিন। এ ছাড়া ২০২২ সালের মে মাসে ১৮ কার্যদিবসের মধ্যে ১১ দিন বাজারে দরপতন হয়েছিল। ওই মাসে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল ৭ দিন। আর গত বছরের মে মাসে ২১ কার্যদিবসের মধ্যে ১০ দিনই বাজার ঊর্ধ্বমুখী ছিল। ওই মাসে দরপতন হয়েছিল ৯ দিন, বাকি ২ দিন সূচক অপরিবর্তিত ছিল।

২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের তুলনায় চলতি বছরের মে মাসই ছিল সবচেয়ে হতাশার। এমনিতেই গত ফেব্রুয়ারি থেকে বাজারে মন্দাভাব চলছে। তার মধ্যে বাজেট সামনে রেখে শুরু হয়েছে মূলধনি মুনাফার ওপর করারোপ নিয়ে একধরনের অনিশ্চয়তা। তাতে মে মাসজুড়ে বাজারে ধারাবাহিক দরপতন হয়েছে।

আগামী বাজেটে শেয়ারবাজার থেকে নির্দিষ্ট সীমার বেশি মূলধনি আয় বা ক্যাপিটাল গেইন হলে তার ওপর করারোপের পরিকল্পনা করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআর। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এনবিআরের এ পরিকল্পনা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর বাজারে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করে। শেয়ারবাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আগামী বাজেটে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মূলধনি আয়ের ওপর নতুন করে করারোপ করা হলে সেটি হবে বাজারের জন্য মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। এ জন্য ডিএসই কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন করে শেয়ারবাজারে কোনো ধরনের কর আরোপ না করতে সরকার ও এনবিআরের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

জানতে চাইলে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, ব্যাংক খাতে ট্রেজারি বিলের সুদহার ১৩ শতাংশের ওপরে উঠেছে। ব্যাংকগুলো সাড়ে ৮ শতাংশের বেশি সুদে বিদেশে থাকা লোকজনের কাছ থেকে ডলারে আমানত সংগ্রহ করছে। আর ব্যাংকে সাধারণ আমানতের সুদহার ১০ শতাংশের কাছাকাছি। এই যখন পরিস্থিতি, তখন বেশি সুদে নিরাপদ বিনিয়োগের সুযোগ ছেড়ে কেউ শেয়ারবাজারের মতো ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগে আসবে না—এটাই স্বাভাবিক। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও এখন শেয়ারবাজারের চেয়ে ট্রেজারি বিলে বিনিয়োগে বেশি মুনাফা পাচ্ছে। সব মিলিয়ে তাই শেয়ারবাজারে হতাশা বিরাজ করছে; যার প্রভাবে টানা দরপতন চলছে।

ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী আরও বলেন, বাজার যেখানে নেমেছে, তাতে দরপতনের আর কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। এখন বিনিয়োগকারীরা ভয় ও আতঙ্কে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। বাজেট ঘিরে নানা পদক্ষেপের গুঞ্জনে এ ভয় আরও বেড়েছে।

শেয়ার দিয়ে সাথেই থাকুন..

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ