1. [email protected] : ইকোনোমিক বিডি প্রতিবেদক : ইকোনোমিক বিডি প্রতিবেদক
  2. [email protected] : ইকোনোমিক বিডি : ইকোনোমিক বিডি
  3. [email protected] : muzahid : muzahid
  4. [email protected] : woishi : woishi
সরবরাহে ঘাটতি ও ডলার সংকটে বেড়েছে আদা-রসুনের দাম
শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৭:৪৬ অপরাহ্ন

সরবরাহে ঘাটতি ও ডলার সংকটে বেড়েছে আদা-রসুনের দাম

  • পোস্ট হয়েছে : রবিবার, ৫ মে, ২০২৪

পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল থাকলেও গত ১৫ দিন ধরে খুচরা ও পাইকারি বাজারে দাম বেড়েছে আদা ও রসুনের। খুচরা বাজারে রসুন ও আদার দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা পর্যন্ত।

পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি রসুনের দাম ২০ টাকা বাড়লেও আদার দাম স্থিতিশীল রয়েছে। বাজারে ঘাটতি, ডলার সংকটে এলসি করতে না পারা এবং আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যগুলোর দাম বাড়ায় দাম বেড়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

তারা বলছেন, দেশি রসুনের দাম ঈদের আগেও বেশ কম ছিল। তবে তখন দেশি রসুন কাঁচা ছিল। রসুন শুকানোর ফলে ওজনে কমছে। এতে দাম বেড়ে যাচ্ছে। আর আমদানি করা আদা ও রসুনের বাজার ডলারের দাম বেশি থাকায় গত বছরের চেয়ে দাম কিছুটা বেড়েছে। এছাড়া আদা ও রসুনের বাজার একটু বাড়তির দিকে হলেও, পরিস্থিতি নাগালের বাইরে এমন বলা যাবে না। তবে সামনে কোরবানির ঈদ ঘিরে সরবরাহের যেন সংকট না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

গতকাল শনিবার রাজধানীর সূত্রাপুর, শ্যামবাজার, রায়সাহেব বাজার, নয়াবাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে দেশি আদার সরবরাহ তুলনামূলক কম। দেশি আদার দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতারা আমদানি করা আদাই কিনছেন বেশি। আর দেশি রসুনের চেয়ে দাম একটু বেশি হলেও ক্রেতাদের কাছে আমদানি করা রসুনের চাহিদা বেশি।

খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি রসুন বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ২০০ টাকায়। ১৫ দিন আগে যা ছিল ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা। গত বছরের এই সময়ে দেশি রসুন বিক্রি হয়েছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। পাশাপাশি আমদানি করা বড় রসুন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়, যা আগে ছিল ১৯০ থেকে ২৩০ টাকা। এক মাস আগে ছিল ১৯০ থেকে ২২০ টাকা।

এছাড়া দেশি নতুন আদা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় এবং আমদানি করা আদা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৬০ টাকা। ১৫ দিন আগে এর দাম ছিল ১৯০ থেকে ২৪০ টাকা। এক মাস আগে ছিল ১৯০ থেকে ২২০ টাকা।

অন্যদিকে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি দেশি রসুন ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি, চায়না রসুন ১৯৫ থেকে ২২০ টাকা। ১৫ দিন আগে ছিল দেশি রসুন ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা, চায়না রসুন ১৮৫ থেকে ২০০ টাকা। এছাড়া প্রতিকেজি চায়না আদা মানভেদে ১৭৫ থেকে ১৯৫ টাকা, ক্যারালার প্রতিকেজি ননওয়াশ ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা, ওয়াশ আদা ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকা। বার্মা প্রতি কেজি আদা ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা।

রাজধানীর সূত্রাপুর বাজারের খুচরা আদা রসুন বিক্রেতা বলরাম দাস বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে আদা-রসুনের পাইকারি বাজারেই বেশি দাম যাচ্ছে। সে কারণে তুলনামূলক কম মাল নিয়ে আসছি আমরা, বিক্রিও তুলনামূলক কম হচ্ছে। যখন যে দামে কেনা পড়ে সে দামেই আমরা বিক্রি করি। বাজার যদি বেড়ে যায় তার প্রভাব খুচরা বাজারে পড়ে। দেশি রসুনের দাম একটু বেশি হলেও, সাধারণ ক্রেতাদের আমদানি করা বড় রসুনের প্রতি আগ্রহ বেশি; এটি এখন বেশি বিক্রি হচ্ছে।

রায়সাহেব বাজারের আদা-রসুনের ব্যবসায়ী মো. আব্দুল বলেন, ঈদের পর আদা ও রসুনের দাম বেড়েছে। বাজারে সরবরাহে একটু ঘাটতি থাকায় দামে প্রভাব পড়েছে। পাইকারি বাজারে দাম বাড়লে আমরাও দাম বাড়াই। বেশি দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করি।

রাজধানীর আদা রসুনের সবচেয়ে বড় আড়ত শ্যামবাজারের রাইয়ান এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার মানিক সাহা বলেন, ‘আমদানি কম হওয়ায় দাম বেড়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে পণ্যগুলো দাম বেড়েছে। ডলার সংকটের জন্য সহসা এলসি পাওয়া যাচ্ছে না। মূলত এসব কারণেই দাম বাড়ছে। আদার একটি বড় অংশ দেশের বাইরে থেকে আসে, মানে আমদানি করা হয়। ডলারের দাম ওঠানামার ওপরে আদার দাম নির্ভর করে; গত কয়েক দিনে দেশি এবং আমদানি করা দুই ধরনের আদার দামই মান ও আকারভেদে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তবে বাজারে এখন আদা-রসুনের সরবরাহ তুলনামূলক একটু কম। এ কারণেও পণ্য দুটির দাম বেড়েছে।’

তিনি বলেন, ‘শনিবার পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি দেশি রসুন ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি, চায়না রসুন ১৯৫ থেকে ২০০ টাকা। ১৫ দিন আগে ছিল দেশি রসুন ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা, চায়না ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকা। সবচেয়ে ভালো মানের সাদা রসুন ২১৫ থেকে ২২০ টাকা; যা আগে ছিল ১৯৫ থেকে ২০০ টাকা। বর্তমানে এটার আমদানি কম। ফলে বাজারে ঘাটতি রয়েছে।’

এছাড়া পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি চায়না আদা মানভেদে ১৭৫ থেকে ১৯৫ টাকা, ক্যারালার প্রতি কেজি ননওয়াশ ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা, ওয়াশ আদা ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকা। বার্মা প্রতি কেজি আদা ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা। আদার দামে তেমন কোনো পরিবর্তন না হলেও ৫ টাকা আপডাউন হয়েছে।

পাইকারি আড়তদার মোল্লা নূর এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার মো. মোর্শেদ বলেন, ‘আসলে কাঁচাবাজারের দাম নির্দিষ্ট করে কিছু বলা যায় না। সকালে একটা থাকলে বিকালে আরেকটা। গত ১৫ দিন ধরে বাজার ৫ থেকে ১০ টাকা ওঠানামা করছে। বর্তমানে বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। তবে আমদানি কম হওয়ায় বাজারে ঘাটতি রয়েছে। ফলে দাম বেড়েছে। বর্তমানে চায়না আদা মানভেদে প্রতি কেজি ১৮০ থেকে ১৯৫ টাকা কেজি, থাই আদা ১৭৫ টাকা। দেশি আদা বাজারে নেই বললেই চলে। চায়না রসুন মানভেদে প্রতি কেজি ১৯০ থেকে ২২০ টাকা, দেশি রসুন ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি।’

রাজধানীর রায়সাহেব বাজারে এসেছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী ইমন সারোয়ার। তিনি বলেন, ‘এক সপ্তাহ ব্যবধানে দেশি আদার দাম কেজিতে ৭০ টাকা বেড়েছে। ২৮০ টাকা কেজি কিনলেও আজ ভালো আদা কিনতে হলো প্রায় ৩৫০ টাকায়। এক সপ্তাহের ব্যবধানে এটার দাম বেড়ে গেল, অথচ বাজার মনিটরিংয়ের কেউ নেই। এ কারণে সাধারণ ক্রেতা হিসেবে আমরা বেশি দাম দিয়ে এসব কিনছি। কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছে না ব্যবসায়ীদের। কারণ আমরা তাদের কাছে জিম্মি হয়ে আছি। একইভাবে আমদানি করা বড় রসুনের চাহিদা বেশি থাকার কারণে এটার দামও বেড়েছে, পাশাপাশি দেশি রসুনেরও দাম বাড়তি যাচ্ছে।’

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, ‘দেশি রসুনের বর্তমান বাজারদর ১৭০ থেকে ২০০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ১৩০ থেকে ১৭০ টাকা ছিল। গত মাসে এর দাম ছিল ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। গত বছর দাম ছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকা। আমদানি করা রসুন এখন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২৪০ টাকা দরে। এক সপ্তাহ আগে ছিল ২০০ থেকে ২৩০ টাকা। এক মাস আগে ছিল ১৯০ থেকে ২২০ টাকা। এক বছর আগে ছিল ১২০ থেকে ১৪০ টাকা।’

দেশি নতুন আদা প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে ছিল ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা। এক মাস আগে ছিল ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা। গত বছর এই সময় দেশি আদার দাম ছিল ২০০ থেকে ২২০ টাকা। অর্থাৎ এক বছরে দেশি আদার দাম বেড়েছে ৪৭ দশমিক ৬২ শতাংশ।

শেয়ার দিয়ে সাথেই থাকুন..

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ