1. [email protected] : ইকোনোমিক বিডি প্রতিবেদক : ইকোনোমিক বিডি প্রতিবেদক
  2. [email protected] : ইকোনোমিক বিডি : ইকোনোমিক বিডি
  3. [email protected] : muzahid : muzahid
  4. [email protected] : woishi : woishi
শেয়ারবাজারে ক্ষমতা দেখিয়ে লাভ নেই
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৫২ পূর্বাহ্ন

শেয়ারবাজারে ক্ষমতা দেখিয়ে লাভ নেই

  • পোস্ট হয়েছে : শনিবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০২১
Rokibul-rahman

যে সকল তালিকাভুক্ত কোম্পানির স্পন্সর/ ডাইরেক্টর কোম্পানির উন্নতির দিকে নজর না দিয়ে, ম্যানেজমেন্টকে শক্ত না করে, হাজার হাজার বিনিয়োগকারী ও শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ না দেখে, শুধু নিজেদের পকেট ভারী করার জন্য যখন শেয়ারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে তখন ২%, ৩০% শেয়ার হোল্ড করার বাধ্যবাধকতা না মেনে উচ্চ দামে শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছে, বাজারের সুযোগ নিয়ে যারা শুধু নিজেদের স্বার্থ দেখেছে, সেইসব তালিকাভুক্ত কোম্পানি যেগুলো এখন z–ক্যাটাগরি এ আছে, শেয়ার দাম ১০ টাকার নীচে, লাখো বিনিয়োগকারী তাদের প্রতারণার জালে আবদ্ধ হয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে, সেসকল তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য বিএসইসি’র চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম যে পদক্ষেপ নিয়েছেন তাকে আমি সাধুবাদ জানাই। এটা একটি বাস্তব এবং যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। এটা সঠিকভাবে কার্যকর করা গেলে বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসবে। হাজারো বিনিয়োগকারী উপকৃত হবে। এটা সকল তালিকাভুক্ত কোম্পানি এবং তথাকথিত স্পন্সর/ ডাইরেক্টরদের একটি বার্তা দিবে এখন থেকে যে যাই ইচ্ছা তাই করতে পারবে না। সবাইকে পুঁজিবাজারে ১০০ শতাংশ কমপ্লায়েন্স মেনে চলতে হবে। যে যতই শক্তিশালী হোক। পুঁজিবাজারে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে লাভ নেই। তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে সবাই শেয়ারহোল্ডার, কেউ মালিক নন। এখানে মালিকানা বলতে কিছু নাই। কেউ বড় শেয়ারহোল্ডার, কেউ ছোট শেয়ারহোল্ডার, সবাই সমান।

যে সকল তালিকাভুক্ত কোম্পানির স্পন্সর/ ডাইরেক্টর কোম্পানির পারফরমেন্সের দিকে নজর না দিয়ে, বিগত বছরগুলোতে ২ শতাংশ, ৩০ শতাংশ হারে শেয়ার হোল্ড না করে, শুধু নিজেদের পকেট ভারী করার জন্য কৃত্রিমভাবে ভুল তথ্য দিয়ে শেয়ারের দাম দিয়ে বৃদ্ধি করে, সাধারন বিনিয়োগকারীদের প্রতারণা করে বেশি দামে নিজেদের সব শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন, যাদের কোম্পানির শেয়ার দাম ১০ টাকার নিচে, তাদের বাধ্য করতে হবে শেয়ারবাজার থেকে অন্ততঃ অভিহিত মূল্যে শেয়ার কেনা-বেচা করার জন্য। যদি কেনা-বেচা না করে তাহলে তাদেরকে ম্যানেজমেন্ট পরিচালনার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে হবে। যদি কোন বিনিয়োগকারী বাজার থেকে ২ শতাংশ শেয়ার ক্রয় করে থাকে তাহলে অটোমেটিক্যালি তাকে পরিচালনা পর্ষদে অন্তর্ভুক্ত করে কোম্পানির ম্যানেজমেন্ট পরিচালনার সুযোগ করে দিতে হবে। যদি সেই রকম কোন সুযোগ না থাকে তবে এই সকল কোম্পানি তে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া যেতে পারে, যার দায়িত্ব হবে কোম্পানির সুশাসন প্রতিষ্ঠা করে দক্ষ ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীর স্বার্থ রক্ষা করা। এখানে যেন তথাকথিক স্পন্সর/ ডাইরেক্টরদের কোন প্রভাব না থাকে।

এখনতো আমরা প্রায় প্রতিদিনই শুনতে পাচ্ছি ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কত লক্ষ কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। যার পুরোটাই ডিপোজিটরদের টাকা। যার সাথে জড়িত রয়েছে তথাকথিত সব স্পন্সর/ ডাইরেক্টর এবং ম্যানেজমেন্ট। আমি বার বার বলছি ব্যাংকগুলোতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে পারিবারিক নিয়ন্ত্রণ থেকে ব্যাংক এর পরিচালনা পর্ষদকেবেরিয়ে আসতে হবে। সবাই শেয়ারহোল্ডার, ব্যাংক চলে ডিপোজিটরদেরটাকায়, কোন তথাকথিত পরিচালকদের টাকায় নয়। অন্ততঃ ব্যাংকে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসি’কে যৌথভাবে কাজ করতে হবে। ব্যাংকের টাকা যারা লুটপাট করেছে, পরিচালক হোক বা ম্যানেজমেন্ট এর লোক হোক, তাদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দিতে হবে। কারো কোন ছাড় দেওয়া যাবে না। দেউলিয়া আইন সংশোধন করে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপীদের লাইফ স্টাইল এ হাত দিতে হবে। এটাই টাকা আদায়ের বাস্তবসম্মত একমাত্র পথ। যে সকল ঋণখেলাপী সরকারি খাস জমি, ডোবা নালা, হাওড় বন্ধকদেখিয়ে অসৎ পথে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে জনগণের ডিপোজিটের টাকা আত্মসাত করেছে তাদের বিষয়ে বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ নিতে হবে।

এখনই সবচেয়ে বড় সুযোগ এসেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)এরহাতে। কারণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীরদৃঢ় ও কঠোর অবস্থানের কারনে সবকিছু শূন্য সহনশীলতা এ আছে। কোন প্রকার অনিয়ম এবং দুর্নীতির ছাড়উনি দিবেন না। সকল দুর্নীতিবাজদের পর্যায়ক্রমে আইনের আওতায় নিয়ে আসা শুরু হয়েছে। কোন দুর্ণীতিবাজ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান, যারা জনগনের টাকা লোপাট করেছে এবং ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণখেলাপিতে পরিণত হয়েছে তাদের দায়িত্ব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং মাননীয় অর্থমন্ত্রী নিবেন না, জাতি এটা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে।

একটি বিষয় লক্ষ্য করা যাচ্ছে তথাকথিত স্পন্সর/ ডাইরেক্টর, যাদের সম্মিলিত ৩০% শেয়ার নাই তারা নিজেদের প্রভাব কোম্পানিতে বজায় রাখার চেষ্টা করছেন, যা একান্তই কাম্য নয়। তারা বিনিয়োগকারীর সাথে প্রতারনা করছেন। এই সকল তালিতাভুক্ত কোম্পানির এই তথাকথিত ডাইরেক্টরদের ব্যাপারে বিএসইসি’কে অত্যন্ত কঠোর হতে হবে। বোর্ড পুনর্গঠনের দায়িত্ব বিএসইসি’র, এই ব্যাপারে কারো কোন প্রভাবই খাটবেনা।
যারা বাজার থেকে শেয়ার কিনে বোর্ড এ আসবে তাদের দায়িত্ব অনেক বেশি থাকবে। একমাত্র তারাই পারবে কোম্পানিটিকে একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে। আমি মনে করি, বিএসইসি কমিশন এই বোর্ড পুনর্গঠনে কোন আপস করবেন না, কারো দ্বারা প্রভাবিত হবেন না, কারোও কোন আপত্তিও শুনবেন না। বিএসইসি কমিশন সঠিক পথে আছে।

দুদক বলেছে এই বছরই ৬৭,০০০ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। মহামান্য হাইকোর্ট সবকিছু ধরা শুরু করেছেন। মাননীয় অর্থমন্ত্রী মহান পার্লামেন্টে প্রায় তিন লক্ষ ইচ্ছাকৃত ঋণখোলাপী ও তাদের কোম্পানির নাম প্রকাশ করেছেন। সবাই সোচ্চার হয়েছেন। ইনশাআল্লাহ, আমরা ভালো কিছু প্রত্যাশা করছি। অ-কর্মক্ষমতা শেয়ার, z – ক্যাটাগরি এর শেয়ার, যে সকল কোম্পানিতে তথাকথিত স্পন্সর/ ডাইরেক্টরদের একক ও সম্মিলিতভাবে ২ শতাংশ, ৩০ শতাংশ শেয়ার নাই, তাদের পুনর্গঠনে বিএসইসি কঠোর এবং বাস্তব অবস্থানে থাকবে এটাই আমার এবং লাখো বিনিয়োগকারীর প্রত্যাশা।

লেখক: মোঃ রকিবুর রহমান, সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান পরিচালক, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড

শেয়ার দিয়ে সাথেই থাকুন..

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ