গেল সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে গুজব ছিল ৪৯ কোম্পানির শেয়ার ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরিত হচ্ছে। যে কারণে ওইদিন শেয়ারবাজার বড় পতন হয়েছিল। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিইসই) প্রধান সূচক কমেছিল সেদিন ৩৫ পয়েন্টের বেশি।
ওইদিন বিকালে নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেই রকম একটি আদেশই জারি করলো। ওই আদেশের ফলে ডিভিডেন্ড না দেয়া, এজিএম না করা, উৎপাদন বন্ধসহ নানা কারণে ৪৯টি কোম্পানির শেয়ার জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর নিশ্চিত হলো।
কিন্তু কয়েক ঘন্টা পরই আদেশটি পরিবর্তন করা হলো। এতে দেখা গেল, ডিভিডেন্ড ঘোষণার পর থেকে ওই আদেশটি কার্যকর হবে বলে সংশোধনী আদেশ জারি হল। এতে সব গণমাধ্যমে আপাদত কোনো কোম্পানির শেয়ারই জেড ক্যাটাগরিতে যাচ্ছে না বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সুস্থির ভাব ফিরে আসতে দেখা গেল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের উচ্ছ্বাস প্রকাশের মাধ্যমে।
কিন্তু শনিবার রাতে আবারও চাউর হতে থাকে এজিএম না করা, উৎপাদন বন্ধসহ অন্যান্য কারণে ২২টি কোম্পানির শেয়ার জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরিত হচ্ছে। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে শঙ্কা ছড়িয়ে পড়ে। ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে নানা রকম আলোচনা-সমালোচনা চলতে থাকে।
আজ রোববার লেনদেনের আগেই স্টক এক্সচেঞ্জের স্ক্রলে ২২টি কোম্পানির শেয়ার জেড ক্যাটাগরিতে লেনদেন হবে বলে খবর প্রচারিত হয়। যার কারণে লেনদেনের শুরুতেই কোম্পানিগুলোর বেশিরভাগ শেয়ার সর্বনিম্ন দামে ক্রেতাহীন হয়ে পড়ে।
তবে বহুজাতিক বড় মূলধনী কোম্পানি রবি আজিয়াটার ভালো ডিভিডেন্ড ও মুনাফার খবরে শেয়ারদর বাড়াতে সূচক উত্থান প্রবণতায় দেখা যায়। কিন্তু লেনদেনের সময় যতই গড়াচ্ছিল, বাজারে অস্থিরতার চাপ ততই বাড়ছিল। বেলা ১২টার আগেই বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ঘনীভূত হতে দেখা যায়। যা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। শেষ বেলায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বড় ধরনের আতঙ্ক ভর করতে দেখা যায়। যে কারণে সেল প্রেসারে ঢালাও পতন হয়। জেড ক্যাটাগরিতে যাওয়ার ২২টি কোম্পানির মধ্যে সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারই ক্রেতাহীন থাকে। এমনটি জেড ক্যাটাগরিতে যাওয়ার আলোচিত ৪৯ কোম্পানির মধ্যে যেগুলো বাদ পড়েছে, সেগুলোর শেয়ারদরও পতনের বৃত্তে লেনদেন হয়ে দেখা যায়।
রোববারের বাজার পর্যালোচনা
আজ সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববারর (১৮ ফেব্রুয়ারি) ডিএসইর প্রধান প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫৩.০১ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৬ হাজার ২৮৩ পয়েন্টে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরীয়াহ সূচক ১৩.৩৮ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৬৮ পয়েন্টে। আর ডিএসই-৩০ সূচক ২৭.৭৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১২৯ পয়েন্টে।
আজ ডিএসইতে ৯২৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কর্মদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৭৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা।
আজ ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৯২টি প্রতিষ্ঠানের ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১০৭টির, কমেছে ২৫৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৯টির।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) আজ ২৯ কোটি ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২৫ কোটি ৫১ লাখ ৫ হাজার টাকার শেয়ার ও ইউনিট।
আজ সিএসইতে ২৬৬টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৭০টির, কমেছে ১৬৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টি প্রতিষ্ঠানের।
আগের দিন সিএসইতে ২৫৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। যার মধ্যে দর বেড়েছিল ৬৭টির, কমেছিল ১৫৮টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৯টি প্রতিষ্ঠানের।