দেশের পুঁজিবাজার দীর্ঘদিন ধরে এক প্রকার স্থবির ছিল। ফ্লোর প্রাইস (শেয়ারদরের সর্বনিম্ন সীমা) প্রত্যাহারের পর পুঁজিবাজারে গতি ফিরেছে। গত ১০ কার্যদিবসে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স ঊর্ধ্বমুখী দেখা গেছে। এ সময় শেয়ার লেনদেন বেড়েছে আড়াই গুণেরও বেশি। সর্বশেষ গতকাল ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
তথ্য অনুসারে, গতকাল দিন শেষে ডিএসইর সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৭৩ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৪৪৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের কার্যদিবসে (৮ ফেব্রুয়ারি) যা ছিল ৬ হাজার ৩৭৩ পয়েন্টে। সাম্প্রতিক বাজার তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ২৯ জানুয়ারি ডিএসইএক্স ৬ হাজার ৯৭ পয়েন্টে, ৩০ জানুয়ারি ৬ হাজার ১৫০, ৩১ জানুয়ারি ৬ হাজার ১৫৩, ১ ফেব্রুয়ারি ৬ হাজার ২১৪, ৪ ফেব্রুয়ারি ৬ হাজার ২৮১, ৫ ফেব্রুয়ারি ৬ হাজার ৩২৩, ৬ ফেব্রুয়ারি ৬ হাজার ৩৪৬ ও ৭ ফেব্রুয়ারি ৬ হাজার ৩৫২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইর নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ গতকাল ২২ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৬০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ২ হাজার ১৩৮ পয়েন্ট। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল দিন শেষে ১১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৯৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের কার্যদিবসে ছিল ১ হাজার ৩৮৭ পয়েন্টে। গতকাল সূচকের উত্থানে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল বীকন ফার্মাসিউটিক্যালস, ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড, ব্র্যাক ব্যাংক, বেক্সিমকো ফার্মা ও সিটি ব্যাংকের শেয়ারের।
ডিএসইতে গত ২৯ জানুয়ারি শেয়ার লেনদেন হয়েছিল ৬৬২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। গতকাল শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৮৫২ কোটি ৫১ লাখ টাকা। সে হিসাবে শেয়ার লেনদেন বেড়েছে ২ দশমিক ৮০ শতাংশ। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ৩৯৪টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ১৬৫টির, কমেছে ১৯৬টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৩৩টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।
খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৮ দশমিক ৪ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪ দশমিক ৬ শতাংশ দখলে ছিল ব্যাংক খাতের। ১০ দশমিক ৮ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে ছিল প্রকৌশল খাত। মোট লেনদেনের ৯ দশমিক ৪ শতাংশের ভিত্তিতে চতুর্থ অবস্থানে ছিল বস্ত্র খাত। আর সাধারণ বীমা খাতের দখলে ছিল লেনদেনের ৬ শতাংশ। গতকাল ডিএসইতে ব্যাংক, ভ্রমণ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও চামড়া খাতে ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। আর নেতিবাচক রিটার্ন হয়েছে সিরামিক, প্রকৌশল, সেবা ও কাগজ খাতের।
অন্যদিকে গতকাল দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচক বাড়লেও লেনদেন কমেছে। নির্বাচিত সূচক সিএসসিএক্স গতকাল ১৮৭ পয়েন্ট বেড়ে ১১ হাজার ১৩৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১০ হাজার ৯৫১ পয়েন্টে। সিএসইর সব শেয়ারের সূচক সিএএসপিআই গতকাল ৩০৯ পয়েন্ট বেড়ে ১৮ হাজার ৬০৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১৮ হাজার ২৯৫ পয়েন্টে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ২৯৪টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১২৮টির, কমেছে ১৪৬টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২০টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে ২৩ কোটি ৮০ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ৩৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা।