শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৬ বীমা কোম্পানিকে বীমা আইন পরিপালনের জন্য আগামী এক মাসের মধ্যে পরিশোধিত মূলধন বাড়াতে হবে। কোম্পানিগুলো হলো-প্যারামাউন্ট ইন্সুরেন্স, ইসলামী ইন্সুরেন্স, প্রভাতী ইন্সুরেন্স, অগ্রণী ইন্সুরেন্স, প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্সুরেন্স ও রূপালী লাইফ ইন্সুরেন্স। কোম্পানিগুলোকে মোট ৪২ কোটি ৬৭ লাখ টাকার মূলধন বাড়াতে হবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
উল্লেখ্য, গত রোববার (১৭ জানুয়ারি, ২০২১) বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) পরিচালক (উপসচিব) জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় বীমা আইন, ২০১০ এর ২১ (৩) ধারা পরিপালনপূর্বক আগামী এক মাসের মধ্যে বীমা কোম্পানিগুলোকে তফসিল-১ অনুযায়ী ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়।
বীমা আইন, ২০১০ এর ২১ (৩) ধারায় নন-লাইফ বা জেনারেল ইন্সুরেন্সের ক্ষেত্রে ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন ৪০ কোটি টাকা এবং লাইফ ইন্সুরেন্সের ক্ষেত্রে ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটি টাকা সংরক্ষণের বিধান রয়েছে।
ডিএসই সূত্র বলছে, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৭টি জেনারেল ইন্সুরেন্সের মধ্যে ৪টি জেনারেল ইন্সুরেন্সের পরিশোধিত মূলধন ৪০ কোটি টাকার নিচে রয়েছে। কোম্পানি ৪টি হলো-অগ্রণী ইন্সুরেন্স, ইসলামিক ইন্সুরেন্স, প্যারামাউন্ট ইন্সুরেন্স ও প্রভাতী ইন্সুরেন্স। কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রভাতী ইন্সুরেন্সের পরিশোধিত মূলধন রয়েছে ২৯ কোটি ৭০ লাখ ২৬ হাজার টাকা, অগ্রণী ইন্সুরেন্সের ৩০ কোটি ২৪ লাখ ৪৭ হাজার টাকা, প্যারামাউন্ট ইন্সুরেন্সের ৩৩ কোটি ৮৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং ইসলামিক ইন্সুরেন্সের ৩৭ কোটি ৪২ লাখ ৩০ হাজার টাকা।
মূলধন ৪০ কোটি টাকা সংরক্ষণ করতে প্রভাতী ইন্সুরেন্সকে মূলধন বাড়াতে হবে ১০ কোটি ২৯ লাখ ৭৪ হাজার ৯৫০ টাকা বা ১ কোটি ২ লাখ ৯৭ হাজার ৪৯৫টি শেয়ার, অগ্রণী ইন্সরেন্সকে ৯ কোটি ৭৫ লাখ ৫৩ হাজার ১৪০ টাকা বা ৯৭ লাখ ৫৫ হাজার ৩১৪টি শেয়ার, প্যারামাউন্ট ইন্সুরেন্সকে ৬ কোটি ১১ লাখ ২৫ হাজার ৩৮০ টাকা বা ৬১ লাখ ১২ হাজার ৫৩৮টি এবং ইসলামী ইন্সুরেন্সকে ২ কোটি ৫৭ লাখ ৭০ হাজার ৭৭০ টাকা বা ২৫ লাখ ৭৭ হাজার ৭৭টি শেয়ার।
অন্যদিকে, প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্সুরেন্সের মূলধন রয়েছে ১৬ কোটি ৬৪ লাখ ৩২ হাজার টাকা এবং রূপালী লাইফ ইন্সুরেন্সের ২৯ কোটি ৪২ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটি টাকা সংরক্ষণ করতে হলে প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্সুরেন্সকে মূলধন বাড়াতে হবে ১৩ কোটি ৩৫ লাখ ৬৮ হাজার ৩২০ টাকা বা ১ কোটি ৩৩ লাখ ৫৬ হাজার ৮৩২টি শেয়ার এবং রূপালী ইন্সুরেন্সকে মূলধন বাড়াতে হবে ৫৭ লাখ ৪২ হাজার ৭৭০ টাকা বা ৫ লাখ ৭৪ হাজার ২৭০টি শেয়ার।
এতে দেখা যায়, ৪টি জেনারেল ইন্সুরেন্সের মূলধন বাড়াতে হবে ২৮ কোটি ৭৪ লাখ ২৪ হাজার ১৪০ টাকা বা ২ কোটি ৮৭ লাখ ৪২ হাজার ৪১৪টি শেয়ার এবং ২টি লাইফ ইন্সুরেন্সের ১৩ কোটি ৯৩ লাখ ১১ হাজার ২০ টাকা বা ১ কোটি ৩৯ লাখ ৩১ হাজার ১০২টি শেয়ার। অর্থাৎ ৬টি ইন্সুরেন্সকে ৪২ কোটি ৬৭ লাখ ৩৫ হাজার ১৬০ টাকা মলধন বাড়াতে হবে। এর জন্য ৪ কোটি ২৬ লাখ ৭৩ হাজার ৫১৬টি শেয়ার ইস্যু করতে হবে।
শেয়ারবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, পরিশোধিত মূলধন ৪ পন্থায় বৃদ্ধি করা যায়। পন্থাগুলো হলো- বোনাস শেয়ার ইস্যু; রাইট শেয়ার ইস্যু, রিপিট পাবলিক অফারিং বা আরপিও এবং বন্ড ইস্যু। তারা বলছেন, ইন্সুরেন্স কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে বোনাস শেয়ার ইস্যু, রাইট শেয়ার ইস্যু এবং আরপিও পদ্ধতি চালু থাকলেও বন্ড প্রথা চালু নেই।