ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পর প্রথম কর্মদিবস রোববার (২১ জানুয়ারি) প্রধান শেযারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) উদ্বোধনী সূচক ছিল ৬ হাজার ৩৩৬ পয়েন্ট। ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের প্রথম ৯ কর্মদিবসে ডিএসইর সূচক খোয়া যায় ২৩৯ পয়েন্ট।
এরপর ২৯ জানুয়ারি থেকে শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়ায়। পরের আট কর্মদিবসে ডিএসইর সূচক উঠে দাঁড়ায় ৬ হাজার ৩৫২ পয়েন্টে। এতে দেখা যায়, ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পর ডিএসইর সূচক ২৩৯ পয়েন্ট পতনের পর সূচক বেড়েছে ২৫৫ পয়েন্ট। অর্থাৎ ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পর অনেক শেয়ারের বড় পতন হওয়ার পরও সূচক এগিয়েছে ১৬ পয়েন্ট।
এদিকে, গতকাল (মঙ্গলবার) আরও ৬টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করা হয়। এরমধ্যে গ্রামীণফোন, বিএটিবিসি ও রবি আাজিয়াটার ফ্লোর প্রাইস শর্ত সাপেক্ষে প্রত্যাহার হওয়ায় বাস্তবে এগুলোর ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার এখনো কার্যকর হয়নি। তবে অন্য তিনটি কোম্পানিটির ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার কার্যকর হয়েছে। যেগুলো হলো-ওরিয়ন ফামা, আনোয়ার গ্যালভেনাইজিং ও রেনেটা। কোম্পানি তিনটির মধ্যে আনোয়ার গ্যালভেনাইজিং ও রেনেটার শেয়ারদর আজ সর্বনিম্ম দামে ক্রেতাশুন্য ছিল। তবে ওরিয়ন ফার্মার শেয়ার লেনদেনর শুরুতে সার্কিট ব্রেকারের সর্বন্মিন দামে ক্রেতাশুন্য থাকলেও কিছুক্ষণ পর ভিন্ন চিত্রে আবির্ভূত হয়। এরপর দিনভর কোম্পানিটির শেয়ার আগের দিনের ফ্লোর প্রাইস ডিঙ্গিয়ে লেনদেন হয়। শেষ বেলায় ক্লোজিংও হয় আগের দিনের ওপরে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, গত আট দিন শেয়ারবাজার বেশ চাঙ্গা ছিল। বিশেষ করে গত ৪-৫ দিন বাজার অনেক তুঙ্গে ছিল। যে কারণে আজ বাজার কিছুটা সংশোধন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সংশোধন শুরু হতেই বাজারে বাই প্রেসার শুরু হয়ে যায়। যে কারণে ফ্লোর প্রাইস প্রতাহারের দুটি শেয়ার সর্বনিম্ন দামে লেনদেন হলেও বাজার ঊধর্বমুখী থাকে।
তাঁরা বলছেন, বাজার যেন এখন ভিন্ন চিত্রে আবির্ভূত হচ্ছে। আগে বাজার কিছুটা উঠলেই সেল প্রেসার শুরু হতো। ফলে বাজারে পতনে নামতো। এখন বাজার কিছুটা নামলেই বাই প্রেসার দেখা যায়। যার ফলে বাজার ইতিবাচক প্রবনতার মধ্যেই থাকছে। এটি বাজারের জন্য এক ধরণের শুভ বার্তা।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারে এখন ছোট-বড় সব বিনিয়োগকারী সক্রিয় হচ্ছেন। যেসব বিনিয়োগকারী এতদিন সাইডলাইনে ছিল, তারাও বাজারে ফিরছেন। যে কারণে বাজারে বড় গতি দেখা যাচ্ছে। সবাই এখন আশাবাদী, বাজার সামনে অনেক ভালো হবে। যার আভাস ইতোমধ্যে দেখা যেতে শুরু করেছে।
বুধবার বাজার পর্যালোচনা
আজ বুধবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬.৪৩ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৬ হাজার ৩৫২ পয়েন্টে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরীয়াহ সূচক ২.২৬ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৮৭ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৮.৪২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৩৫.২৮ পয়েন্টে।
আজ ডিএসইতে ১ হাজার ৭৩০ কোটি ৪৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কর্মদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১ জাচার ৬৫১ কোটি ৮২ লাখ টাকা। আজকের লেনদেন গত ১৬ মাস ১২ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০২২ সালের ১৫ নভেম্বর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৮০৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা।
আজ ডিএসইতে লেনদেন ৩৯৪টি প্রতিষ্ঠানের ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৯৮টির, কমেছে ১৫৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৮টির।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) আজ ২৯ কোটি ২৩ লাখ ১৩ হাজার টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২৩ কোটি ৩২ লাখ ৭১ হাজার টাকার শেয়ার ও ইউনিট।
আজ সিএসইতে ২৮৮টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৫০টির, কমেছে ১০৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩০টি প্রতিষ্ঠানের।
আগের দিন সিএসইতে ৩০৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। যার মধ্যে দর বেড়েছিল ১৩৬টির, কমেছিল ১৩২টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৩৭টি প্রতিষ্ঠানের।