ঋণ খেলাপি হওয়ার কারণে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি সাফকো স্পিনিং মিলসের সম্পদ নিলামে তোলা হচ্ছে। ব্যাংক এশিয়ার কাছে ঋণ নেওয়ার জন্য বন্ধক ছিল কোম্পানিটির সম্পদ। ঋণের অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় কোম্পানিটির সম্পদ নিলামে তোলা হচ্ছে।
গত ০১ ফেব্রয়ারি ব্যাংকটি এই বিষয়ে নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। নিলামে কোম্পানিটির হবিগঞ্জে ৬১০ ডেসিমেল জমি এবং কারখানার অবকাঠামোর জন্য দরপত্র জমা দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ব্যাংক এশিয়ার এক কর্মকর্তা নিলামের বিষয়ে বলেন, ‘আমরা তাদের যথেষ্ট সময় দিয়েছিলাম কিন্তু তারা ঋণ পরিশোধ করেনি। সে কারণেই আমরা তাদের সম্পদ নিলামে তুলছি।’
জানা যায়, ২-১৫ সালে ব্যাংক এশিয়ার কর্পোরেট শাখা থেকে ঋণের জন্য সম্পদ বন্ধক হিসাবে রাখা হয়েছিল। ৩০ জানুয়ারী, ২০২৪ পর্যন্ত, সুদ সহ সাফকোর বকেয়া পাওনা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১২২ কোটি টাকা।
সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে সাফকো স্পিনিংয়ের সম্পত্তির আনুমানিক মূল্য ১৪০ কোটি টাকার বেশি।
তবে সাফকোর স্পিনিংয়ের কোম্পানি সচিব ইফতেখার আহমেদ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা নিলামের বিজ্ঞপ্তি পাইনি।’ তবে তিনি স্বীকার করেন, নানা কারণে কোম্পানিটি ব্যাবসায়িক চাপে রয়েছে। যে কারণে ঋণ খেলাপিতে নিয়ে গেছে।
এই কর্মকর্তা আরও জানান, কোম্পানিটির এই ঋণ পুনর্নির্ধারণের জন্য গত বছরের ডিসেম্বরে ব্যাংক এশিয়ার কাছে আবেদন করেছিল। এর আগে ২০১৯ সালে একবার ঋণ পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছিল।
আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে স্পিনিং মিলের রাজস্ব আগের বছরের তুলনায় ৩৯ শতাংশ কমে ৪১ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।
চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর মেয়াদে কোম্পানিটির ব্যবসায়িক সংকট অব্যাহত ছিল। এই সময়ের মধ্যে রাজস্ব আয় ৮৬ শতাংশের বেশি কমে যায়।
সাফকো তার বার্ষিক প্রতিবেদনে বলেছে, মূল্যস্ফীতি, ডলারের ঘাটতি এবং গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকটসহ বেশ কয়েকটি কারণের কারণে এর উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। এছাড়া সুতার উৎপাদন খরচ বেড়েছে।
এদিকে গত এক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে কমছে স্থানীয় বাজারে সুতার দাম। ফলে উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দামে সুতা বিক্রি করে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোম্পানিটির মূলধন সংকট রয়েছে। যে কারণে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে ব্যাংক ঋণের কিস্তি পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি।
এছাড়াও, আর্থিক সমস্যার কারণে সাফকো স্পিনিং গত অর্থবছরে শেয়ারহোল্ডারদের কোনো ডিভিডেন্ড দিতে পারেনি।