1. [email protected] : ইকোনোমিক বিডি প্রতিবেদক : ইকোনোমিক বিডি প্রতিবেদক
  2. [email protected] : ইকোনোমিক বিডি : ইকোনোমিক বিডি
  3. [email protected] : muzahid : muzahid
  4. [email protected] : woishi : woishi
রাজস্ব ফাঁকি দিতে অবৈধ রেয়াত গ্রহণ
সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ০৮:২৫ পূর্বাহ্ন

রাজস্ব ফাঁকি দিতে অবৈধ রেয়াত গ্রহণ

  • পোস্ট হয়েছে : সোমবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০২১
NBR

বিধিবহির্ভূত ভাবে বিপুল পরিমাণ রেয়াত নেয়ার অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রামের কেডিএস গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান কেওয়াইসিআর কয়েল লিমিটেডের বিরুদ্ধে। প্রতিষ্ঠানটি দুই বছরে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা অবৈধভাবে রেয়াত নিয়েছে এবং যার মাধ্যমে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে। রাজস্ব অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষায় বিষয়টি উঠে এসেছে। ব্যবস্থা নিতে সম্প্রতি রাজস্ব অডিট অধিদপ্তর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) প্রতিবেদন দিয়েছে। এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্রমতে, চট্টগ্রামভিত্তিক কেডিএস শিল্পগ্রুপ। এ গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের কুমিরা এলাকার কেওয়াই স্টিল মিলস লিমিটেড। নাছিরাবাদ ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকায় কেওয়াই স্টিল মিলস লিমিটেডে কাঁচামাল সরবরাহ করে কেওয়াইসিআর কয়েল লিমিটেড। এছাড়া অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রিতে কাঁচামাল সরবরাহ করে আসছে। ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত এ প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে নিয়মের তোয়াক্কা না করেই রেয়াত গ্রহণ করে আসছে, যার মাধ্যমে রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। রাজস্ব অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষায় বিষয়টি উঠে এসেছে।

সূত্রমতে, এনবিআরের আওতাধীন ১১টি কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট (বৃহৎ করদাতা ইউনিট ব্যতীত) রয়েছে, যার অধীনে রয়েছে ৮২টি ভ্যাট বিভাগীয় কার্যালয় ও ২৪৭টি ভ্যাট সার্কেল অফিস। এর মাধ্যমে রাজস্ব আহরণ করে এনবিআর। মাঠ অফিসগুলোর রাজস্ব আহরণ অনিয়ম ও অসঙ্গতি নিয়ে অডিট করে রাজস্ব অডিট অধিদপ্তর। সম্প্রতি রাজস্ব অডিট অধিদপ্তর ৫টি কমিশনারেটের ১৯টি সার্কেল অফিসের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের রাজস্ব আহরণের ওপর কমপ্লায়েন্স নিরীক্ষা পরিচালনা করে।

নিরীক্ষায় অতিরিক্ত, বিধিবহির্ভূত, অনিয়মিতভাবে রেয়াত গ্রহণ, উৎসে কর, সুরক্ষা চার্জ আদায় না করাসহ বিভিন্ন অনিয়ম উঠে আসে। নিরীক্ষা শেষে সম্প্রতি অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যানকে প্রতিবেদন দেয়া হয়। চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেটের আওতাধীন সীতাকুণ্ড সার্কেলে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান কেওয়াইসিআর কয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠানটির বিধিবহির্ভ‚তভাবে রেয়াত গ্রহণের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব ক্ষতির চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি সেবা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে উপকরণ ক্রয়ের ওপর বিধিবহির্ভূতভাবে রেয়াত নিয়েছে। যার ফলে রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে। মূলত প্রতিষ্ঠানটি রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার কৌশল হিসেবে রেয়াত নিয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছর দু’ভাবে রেয়াত গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে দাখিলপত্রের (ভ্যাট রিটার্ন) মাধ্যমে অনিয়মিতভাবে চার কোটি এক লাখ ৩৫ হাজার ৭২৫ টাকা রেয়াত নিয়েছে। এর মধ্যে ২০১৮ সালের জুলাই মাসে রিটার্ন দাখিলে ৬৪ লাখ ৩১ হাজার ৩৯০ টাকা, আগস্ট মাসে ৪৩ লাখ ৩০ হাজার ৯৩৮ টাকা, সেপ্টেম্বর মাসে ১২ লাখ ৭৭ হাজার ৬৫৭ টাকা, অক্টোবর মাসে ১২ লাখ ৫১ হাজার ৯০৪ টাকা, নভেম্বর মাসে ৩২ লাখ ৪২ হাজার ৩২৮ টাকা, ডিসেম্বর মাসে ৩৬ লাখ ১৩ হাজার ৭৩১ টাকা। ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে ১৩ লাখ ৮৫ হাজার ৪১৯ টাকা, ফেব্রুয়ারি মাসে ৩৬ লাখ ৯৭ হাজার ৭৫২ টাকা, মার্চ মাসে ৪৩ লাখ ৯১ হাজার ৮৭৭ টাকা, এপ্রিল মাসে ১৫ লাখ ৫৭ হাজার ৫২৬ টাকা, মে মাসে ৩৪ লাখ ১ হাজার ৭৭৬ টাকা ও জুন মাসে ৫৫ লাখ ৫২ হাজার ৮৩৮ টাকা।

প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, কেওয়াইসিআর কয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড রপ্তানির বিপরীতে (কাস্টমস ডিউটি, রেগুলেটরি ডিউটি, সাপ্লিমেন্টারি ডিউটি) এক কোটি ৩৫ লাখ ৪৫ হাজার ৭২৫ টাকা রেয়াত নিয়েছে। যার মধ্যে চলতি হিসাব রেজিস্টারের মাধ্যমে ২০১৮ সালের জুলাই মাসে ১৩ লাখ এক হাজার ৭৮ টাকা ও ৭ লাখ ৬৫ হাজার ৭৩০ টাকা। আগস্ট মাসে ৫ লাখ ৪ হাজার ৮৩২ টাকা ও ৯ লাখ ২৯২ টাকা, সেপ্টেম্বর মাসে ৪ লাখ ২১ হাজার ৫২৮ টাকা, অক্টোবর মাসে ৩ লাখ ৬১ হাজার ৯৪৯ টাকা, নভেম্বর মাসে ১০ লাখ ৪৬ হাজার ৬১৩ টাকা, ডিসেম্বর মাসে ১১ লাখ ৬৫ হাজার ২১০ টাকা। ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে ৪ লাখ ৮৩ হাজার ৬৫০ টাকা, ফেব্রæয়ারি মাসে ১১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৩৪ টাকা, মার্চ মাসে ১৪ লাখ ৩৬ হাজার ৪৬২ টাকা, এপ্রিল মাসে ৭ লাখ ১২ হাজার ৫২৪ টাকা, মে মাসে ১৪ লাখ ৮১ হাজার ২০৩ টাকা, জুন মাসে ৪ লাখ ৩৪ হাজার ১১ টাকা ও ১৩ লাখ ৫২ হাজার ৮০৩ টাকা।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে কেডিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমানের ব্যক্তিগত মোবাইলে কয়েকদিন ধরে ফোন দেয়া হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। কয়েকদিন খুদেবার্তা দেয়া হলেও জবাব দেননি।

উল্লেখ্য, কেডিএস গ্রুপের ৩২টি শিল্প ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। অঙ্গপ্রতিষ্ঠানগুলো হলো কেডিএস গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ফাইভস্টার করপোরেশন, সাঁইদাইর গার্মেন্টস, এইচএন গার্মেন্টস লিমিটেড, মুন অ্যাপারেলস, কেএনএস এন্টারপ্রাইজ, কেডিএস অ্যাপারেলস, কেডিএস কুইলটিং, স্টার অ্যাপারেলস, মডার্ন অ্যাপারেলস, কেডিএস হাইটেক গার্মেন্টস (বিডি) লিমিটেড, কেডিএস কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স, সেন্টার লিমিটেড, কেডিএস ওয়াশিং প্লান্ট, কেডিএস টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড, কেডিএস স্ক্রিন প্রিন্টিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, কেডিএস লজিস্টিকস লিমিটেড, কেডিএস পলি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, কেডিএস প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, কেডিএস প্রিন্টিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, কেডিএস প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, কেডিএস লেবেল প্রিন্টিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, কেডিএস কটন পলি থ্রেড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, কেআইওয়াই স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, কেওয়াই স্টিল মিলস লিমিটেড, স্টিল এক্সেসরিজ লিমিটেড, মেসার্স এএইচ সিন্ডিকেট, মেসার্স সেলিম অ্যান্ড কোং, কেডিএস ইনফরমেশন টেকনোলজিস লিমিটেড, কেডিএস আইডিআর, ফসিল সিএনজি, পটিয়া সিএনজি, স্কাইস সিকিউরিটিজ লিমিটেড।

শেয়ার দিয়ে সাথেই থাকুন..

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ